Web bengali.cri.cn   
এডিবি রিপোর্ট: বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের বেশি হবে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে
  2014-05-12 20:08:44  cri

চলতি ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের কম হবে- এটা মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গেছে। মূলত শিল্প ও সেবাখাতে প্রবৃদ্ধি হ্রাসের কারণে তা ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে আসবে বলে পূর্বাভাস দেয় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবি। বিশ্বব্যাংকও ৬ শতাংশের নিচে প্রবৃদ্ধির কথা বলেছে। এর আগে ২০০৯ সালে সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। তবে, আশার কথা আগামী ২০১৪-১৫ অর্থবছরেই প্রবৃদ্ধির চাকা উর্ধ্বমুখী হবে বলে জানানো হয়েছে এডিবির সর্বশেষ রিপোর্টে। আগামী অর্থবছরেই জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশ ছাড়িয়ে ৬ দশমিক ২ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এডিবি।

এক ঝলকে এডিবি'র রিপোর্টে ২০১৩-১৪ অর্থবছর

এডিবির সদ্য প্রকাশিত জানুয়ারি-মার্চ কোয়ার্টারের রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে শিল্প উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি কম হবে ৮ শতাংশের মতো। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অভ্যন্তরীণ চাহিদা হ্রাস পাওয়াকে এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে আন্তর্জাতিক ঋণদানকারী সংস্থাটি। একই সময়ে সেবাখাতে প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৪ শতাংশ কম হবে বলে জানানো হয়েছে রিপোর্টে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রথমার্ধে কমেছে অভ্যন্তরীণ চাহিদা। এতে কমেছে আমদানি। জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের পর আস্থা ফিরে আসবে আশা করা হলেও পরিস্থিতি খুব একটা বদলায়নি। বিনিয়োগে আসেনি গতি, কম ছিল বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ।

জুলাই-জানুয়ারি অর্ধে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরের রাজস্ব সংগ্রহ বেড়েছে মাত্র ১০ শতাংশ। আমদানি কম হওয়ায় আমদানি শুল্ক বেড়েছে মাত্র ১ দশমিক ১ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা স্থগিত করায় চলতি অর্থবছরে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা জানানো হয়েছে এডিবি রিপোর্টে। চলতি অর্থবছরে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৫০ কোটি ডলার।

এতো নেতিবাচক খবরের মধ্যে কৃষিখাতে ভালো সংবাদ এনেছে এডিবি রিপোর্ট। চলতি বছর প্রধান দুটি ফসল আউস ও আমন ভালো হওয়ায় কৃষিখাতে প্রবৃদ্ধি ৩ শতাংশ বাড়বে বলে জানানো হয়েছে রিপোর্টে।

এডিবি রিপোর্টে সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের ব্যাস্টিক অর্থনীতির অবস্থা ভালো বলে মন্তব্য করা হয়েছে। তবে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মূল্যস্ফীতির প্রবণতার কথাও বলা হয়েছে। একারণে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সতর্ক মুদ্রানীতি গ্রহণ করেছে। সরকারও অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যায় কমানো পাশাপাশি ভর্তুকি হ্রাসের চেষ্টা করছে। অগ্রসর শুল্কনীতি ও সংস্কার এক্ষেত্রে ভাল ফল আনতে পারে বলেও জানিয়েছে এডিবি রিপোর্ট।

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসুচি-এডিপি বাস্তবায়নের হারও সন্তোষজনক নয় চলতি অর্থবছরে। প্রথম ৮ মাসে এডিপি বাস্তবায়নের হার মাত্র ৩৮ শতাংশ। যা গত বছরের তুলনায় ৬ শতাংশ কম। গত বছর তা ছিল ৪৪ শতাংশ।

প্রবৃদ্ধি বাড়ছে আগামী অর্থবছরেই, এডিবির পরামর্শ:

এডিবি রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলে আগামী ২০১৪-১৫ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ২ শতাংশ। উচ্চ রেমিটেন্স প্রবাহ, রপ্তানি বৃদ্ধি, ভোক্তা ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসা এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোজোনের অর্থনীতির চাকা গতিশীল হওয়াতে তা বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধিতেও সহায়ক হবে।

তবে, এজন্য বাড়াতে হবে দেশিবিদেশি বিনিয়োগ। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ১১৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার। গত বছরের চেয়ে তা ৯ শতাংশ কম। তাই বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকে। অবকাঠামো ও দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারলে প্রবৃদ্ধি সামনের বছরগুলোতে ৭ থেকে ৮ শতাংশে নিয়ে যাওয়া সম্ভব বলে মনে করে এডিবি।

বিদেশি বিনিয়োগ আসছে, দাবি অর্থমন্ত্রীর

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত দাবি করেছেন গত বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা দূরে ছিলেন। এখন তারা আবার আসতে শুরু করেছেন। শনিবার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সঙ্গে প্রাক বাজেট আলোচনায় বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে জমি সঙ্কটকে প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেন অর্থমন্ত্রী। বলেন, জমির ব্যবস্থা করতে পারলে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। তবে, দেশি ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগে এগিয়ে আসছেন না বলে উষ্মা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী। বিদেশ টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে বলে বিনিয়োগ হচ্ছে না এমন মন্তব্যও করেন অর্থমন্ত্রী।

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে এবারের বাজেটেও বিদ্যুৎ, জ্বালানি, অবকাঠামো, কৃষি মানবসম্পদ উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

মাহমুদ হাশিম, ঢাকা থেকে।

মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040