0423tiantan.m4a
|
স্বর্গের মন্দির
জান্নাতুন নাহার
স্বর্গের মন্দিরের অবস্থান পেইচিং শহরের দক্ষিণে, শহরের কেন্দ্র থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে তুং ছং জেলায়। ২৭৩ হেক্টর এলাকা জুড়ে অবস্থিত এ মন্দির চীনের বৃহত্তম প্রাচিন উপাসনালয়। এর আয়তন প্রায় চীনের রাজপ্রাসাদের দ্বিগুণ। পেইচিং শহরের প্রধান যে চারটি মন্দির আছে তা হচ্ছে শহরের উত্তর দিকে অবস্থিত "পৃথিবী মন্দির" যেখানে পৃথিবীর উপাসনা করা হতো, দক্ষিণে আছে "স্বর্গের মন্দির" এখানে স্বর্গের উপাসনা করা হতো, পূর্ব দিকে আছে "সূর্য মন্দির" যেখানে সূর্যের প্রার্থনা করা হতো আর পশ্চিম দিকে আছে " চন্দ্র মন্দির" এখানে চাঁদের উপাসনা করা হতো। প্রাচীন চীনে ধারণা করা হতো, পৃথিবী, স্বর্গ, চন্দ্র, সূর্য একে অন্যের সাথে সম্পৃক্ত। তাই এ ধারণার সাথে মিল রেখে পেইচিং শহরের চারদিকে এই চারটি মন্দির তৈরি করা হয়েছে। এদের মাঝে "স্বর্গের মন্দির" সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও অনন্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ।
নির্মাণ ইতিহাসঃ
মিং সম্রাট ইয়োং ল তার শাসনকালের ১৮ তম বছরে অর্থাত্ ১৪২০ সালে প্রথম এর নির্মাণ কাজ শুরু করেন এবং পরবর্তীতে মিং রাজা চিয়াচিং এবং ছিং রাজা ছিয়েন লং এর শাসনামলে এর পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা হয়। এটি ছিল মিং ও ছিং ডাইন্যাস্টির রাজাদের উপাসনালয়, রাজারা ভালো ফসলের উদ্দেশ্যে এখানে উপাসনা করতেন। স্বর্গের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে আয়োজিত ধর্মানুষ্ঠান পালনের জন্য নির্মিত স্থাপনাগুলোর মধ্যে এটি পৃথিবীর বৃহত্তম।
১৯১৮ সালে এই মন্দির এলাকাটি একটি উদ্যানে রূপান্তর করা হয়। সে সময় থেকে এর অনন্য নির্মাণ শৈলী ব্যাপকহারে দেশী বিদেশী পর্যটক আকর্ষণ করতে থাকে। ১৯৪৯ সালে নব্য চীন প্রতিষ্ঠার পর গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের কেন্দ্রীয় সরকার এর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক নিদর্শন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ব্যাপকহারে বিনিয়োগ করতে থাকেন। ১৯৯৮ সালে এটি ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যের নিদর্শনের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়।
| ||||