0331jingji.m4a
|
সম্প্রতি 'চীনের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের লাটিন আমেরিকায় প্রবেশ' বিষয়ক ফোরাম কুয়াংচৌ ছোতু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। ফোরামে চীন ও লাটিন আমেরিকার বিভিন্ন মহলের ২০০ জন প্রতিনিধি প্রধানত লাটিন আমেরিকার সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং লাটিন আমেরিকার বাজারে প্রবেশে চীনের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সামনে বিদ্যমান সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন। এখন শুনুন এ সম্পর্কিত এক প্রতিবেদন।
পরিবর্তিত আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে লাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় দেশগুলো বৈশিষ্ট্যপূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নশীল দেশের একটি গোষ্ঠিতে পরিণত হয়েছে। এ এলাকা হচ্ছে সবচেয়ে সবল সুপ্তশক্তির অধিকারী নবোদিত অঞ্চলগুলোর অন্যতম। বিশেষ করে গত দশ বছরের সমৃদ্ধ সম্পদ, অপেক্ষাকৃত স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি, দীর্ঘমেয়াদী কার্যকর অর্থনৈতিক নীতির কারণে লাটিন আমেরিকা অঞ্চলের অর্থনীতির দ্রুত উন্নতি হয়েছে। এ দশ বছর ছিল লাটিন আমেরিকার অর্থনৈতিক উন্নয়নের 'সোনালী দশক'।
এ অঞ্চলের সাথে চীনের সহযোগিতা সম্পর্কে বলিভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ কুইরোগা বলেন, "গত দশ বছর হচ্ছে আমাদের ইতিহাসে অর্থনৈতিক উন্নয়নের শ্রেষ্ঠ দশ বছর। বিশেষ করে চীনের সাথে সহযোগিতা আমাদের অঞ্চল ও বিশ্বকে পরিবর্তন করেছে। যেমন, অতীতে তেং সিয়াও পিং চীনকে পরিবর্তন করেছেন এবং বিশ্বকেও পরিবর্তন করেছেন। এখন লাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে অনেক চীনা উপাদান দেখা যায়। কৃষিপণ্য, জ্বালানি, খনিজসম্পদসহ নানা ক্ষেত্রে আমরা চীনের সাথে গভীরভাবে সহযোগিতার সম্পর্কে আবদ্ধ।"
চীন সবসময় লাটিন আমেরিকার সাথে সম্পর্কের ওপর গুরুত্ব দেয়। সি চিন পিং প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রথম বছরে লাটিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি দেশ সফর করেছেন এবং লাটিন আমেরিকার নেতাদের সঙ্গে নতুন পরিস্থিতিতে সমতা ও পারস্পরিক কল্যাণমূলক সার্বিক সহযোগিতার অংশীদারিত্বের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ মতৈক্যে পৌঁছেছেন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সহকারী লিউ চিয়ান ছাও মনে করেন, শিল্পপ্রতিষ্ঠান হচ্ছে চীন ও লাটিন আমেরিকার মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার মূল উপাদান। অনুমান অনুযায়ী, ২০১৫ সালে চীন লাটিন আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম সহযোগী অংশীদার হবে।
লিউ চিয়ান ছাও বলেন,"লাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় দেশগুলো হচ্ছে চীন ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর কূটনৈতিক আদান-প্রদানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। চীন সরকার লাটিন আমেরিকার সাথে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয়। এখন দু'পক্ষের সার্বিক সহযোগিতার পরিবেশ দিন দিন পরিপক্ক হচ্ছে। বাস্তব সত্য প্রমাণ করেছে যে, চীন ও লাটিন আমেরিকার পারস্পরিক কল্যাণমূলক সহযোগিতা দু'পক্ষের অভিন্ন স্বার্থের সাথে সংগতিপূর্ণ, বরং বিশ্বের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্যও হিতকর।"
কলম্বিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস পাস্ত্রানা মনে করেন, লাটিন আমেরিকা চীনকে নানা সুযোগ দিতে পারে। চীন অর্থনীতির টেকসই উন্নয়ন করতে চাইলে লাটিন আমেরিকার সাহায্য দরকার। তিনি বলেন,"অতীতে প্রাকৃতিক সম্পদের দরুণ লাটিন আমেরিকা ইউরোপীয়দের আকর্ষণ করতো। আজ আমরা দেখছি যে, লাটিন আমেরিকা চীনের জন্যও নানা সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। লাটিন আমেরিকা চীনের কাছে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। চীন ও লাটিন আমেরিকার পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার হলে, দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র উন্মোচিত হবে।"
তবে বিশ্বের যে কোনো অর্থনৈতিক সত্তার মতো লাটিন আমেরিকার অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথেও নানা সমস্যা বিদ্যমান আছে। যেমন, আয়ের বন্টন ন্যায়সংগত নয়, রপ্তানি পণ্যের সংযোজিত মূল্য নিম্ন, বাণিজ্যিক কাঠামো উপযুক্ত নয়, উদ্ভাবনের ঘাটতিসহ নানা সমস্যা রয়েছে।
বলিভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ কুইরোগো বলেন, "আমরা সবাই বুঝি যে, আমাদের উচিত অব্যাহতভাবে আদান-প্রদানের ক্ষেত্র সম্প্রসারণ করা, অর্থনীতি ছাড়াও সংস্কৃতি ও একাডেমিকসহ নানা ক্ষেত্রে বিনিময় করা এবং সর্বোপরি আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক আরো মজবুত করা। তাহলে, অদূর ভবিষ্যতে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা ব্যাপক সাফল্য অর্জন করবে।" (ইয়ু/আলিম)
| ||||