Web bengali.cri.cn   
সমস্যার মধ্যেও এগিয়ে চলছে বাংলাদেশের বস্ত্রখাত
  2014-03-24 14:19:25  cri

গত বছরের বেশির ভাগ সময় দেশের অর্থনীতি অস্থিরতার মধ্যে ছিল, যার প্রভাব পড়েছে দেশের সব খাতেই। বস্ত্রখাতও এ প্রভাব থেকে মুক্ত ছিল না।

তবে এ খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, পর্যাপ্ত বিনিয়োগ ও সরকারের সার্বিক সহযোগিতা পেলে আগামী দুই বছরের মধ্যে এ খাত থেকেই ২০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানির সম্ভাবনা রয়েছে, যা দেশের এক অর্থবছরের বাজেটের প্রায় সমান। পাশাপাশি এ খাতে আরো আট লাখ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) বলছে, প্রাথমিক বস্ত্রখাতের বিশাল সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে নিরবছিন্ন গ্যাস, বিদ্যুত্ ও বেসরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বিনিয়োগ সহায়ক নীতিমালার আলোকে জরুরিভিত্তিতে সরকারের প্রয়োজনীয় সহায়তার দরকার।

সংস্থার মতে, গত বছর প্রাথমিক টেক্সটাইল খাতে দুই হাজার ৩৯৬ কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়েছে। সমিতির কাছে ২০১২ সালের বিনিয়োগের সঠিক হিসাব না থাকলেও তারা বলছে, গত বছর বিনিয়োগ সার্বিকভাবে ২০১২ সালের চেয়ে কিছুটা কমেছে। এ সময়ে সাতটি নতুন স্পিনিং ও ছয়টি উইভিং মিল স্থাপনের জন্য যন্ত্রপাতি আমদানি করেছেন উদ্যোক্তারা। চলতি বছরের মধ্যেই এসব মিলের উত্পাদনে যাওয়ার কথা।

বিটিএমএ বলছে, ২০১৩ সালের শেষ ছয় মাসে রাজনৈতিক অস্থিরতায় দেশের সব শিল্পই কোনো না কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে তারপরও বস্ত্রখাতে ভাল বিনিয়োগ হয়েছে।

বিটিএমএ'র ভাষ্য, বস্ত্র খাত থেকে রফতানি আয় ২০ বিলিয়ন ডলার উন্নীত করতে হলে এ খাতে বর্তমান চালু শিল্পগুলোর বাইরে আরো প্রায় ৭২টি স্পিনিং, ৯৩টি উইভিং, ৬০টি ডাইং-প্রিন্টিং-ফিনিশিং ও ৭০ নিটিং ও নিট ডাইং কারখানা স্থাপন করতে হবে। আর এ খাতে বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে দুই দশমিক ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

বিটিএমএ বলছে, এ বিনিয়োগ করা সম্ভব হলে এই খাতটিতে বর্তমান কর্মসংস্থানের বাইরে আরো আট লাখ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বর্তমানে বস্ত্র খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৪২ হাজার কোটি টাকা এবং কর্মীর সংখ্যা ৪০ লাখ।

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, বিপুল সম্ভাবনা থাকলেও এখনো বস্ত্রখাতের প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর উন্নয়ন হয়নি। বিশেষ করে এই শিল্পের জন্য অত্যাবশ্যক হিসেবে বিবেচিত গ্যাস ও বিদ্যুতের ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। তাছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতা রফতানি আয়ের এ সম্ভাবনাকে সংশয়ের মধ্যে ফেলে দিয়েছিল। পাশাপাশি প্রাথমিক বস্ত্র খাতের প্রধান কাঁচামাল তুলা ও সুতা নিয়ে সৃষ্ট দীর্ঘদিনের জটিলতারও কোনো অবসান হয় না।

বিটিএমএ তথ্য অনুযায়ী, দেশে সরাসরি কাপড় উত্পাদন করে এমন মিল রয়েছে সাড়ে ৭০০। আর সুতার মিল রয়েছে ৩৮৩টি। পাশাপাশি এ খাতে ডায়িং, প্রিন্টিং ও ফিনিশিংয়ে কাজ করে আরো ২৩৮টি মিল। সব মিলিয়ে এ খাতে প্রায় এক হাজার ৪২০টি কারখানা রয়েছে।

বিটিএমএ সূত্র মতে, দেশে বার্ষিক সুতার চাহিদা ১০ লাখ টন। এর মধ্যে নিটওয়্যার শিল্পে চাহিদা সাত লাখ ও তাঁত শিল্পে চাহিদা তিন লাখ টন। দেশি স্পিনিং মিলগুলো উত্পাদন করে ছয় লাখ টন। উত্পাদিত সুতার ৮৫ ভাগই নিটওয়ার শিল্পে ও অবশিষ্ট ১৫ ভাগ তাঁত শিল্পে ব্যবহার হয়। স্বাভাবিকভাবে দেশীয় বাজারের সরবরাহের চাইতে চাহিদা চার লাখ টন বেশি থাকে।

বস্ত্রখাতে ক্রমাগতভাবে যে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে তার সঙ্গে বিটিএমএর সদস্য মিল ও বিনিয়োগকারীদের পরিচিত করানোর উদ্দেশেই সংগঠনটি ২০০৪ সাল থেকে প্রতি বছর ডিটিজি প্রদর্শনীর আয়োজন করে আসছে। এবারও ১২ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি চার দিনব্যাপী প্রদর্শনীর আয়োজন করে বিটিএমএ। প্রদর্শনীতে ৩১ দেশের ৮৫০টি বিশ্বখ্যাত যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। গত বছর ডিটিজিতে ১৭ কোটি ৫০ লাখ ডলারে যন্ত্রাংশ বিক্রি হয়। আর সদ্য সমাপ্ত মেলাতে দুই দশমিক ২০ মার্কিন ডলারের যন্ত্রাংশ বিক্রি হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
Play
Stop
ওয়েবরেডিও
বিশেষ আয়োজন
অনলাইন জরিপ
লিঙ্ক
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040