0217touzi.m4a
|
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা সম্প্রতি বলেছেন, আগামী তিন বছরের মধ্যে বিদেশে চীনের বিনিয়োগের পরিমাণ দেশটির বিদেশি পুঁজি ব্যবহারের পরিমাণকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। এখন শুনুন এ সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন।
সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের নীতি কার্যকর করার ৩৫ বছর পর ২০১৩ সালে বিদেশে চীনের বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০.১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। বিনিয়োগ 'বিদেশে যাওয়া' এবং 'বিদেশ থেকে আনা' – এই দুই ক্ষেত্রে ধাপে ধাপে ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়ন অর্জিত হয়েছে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শেন ডান ইয়াং বলেন, আগামী তিন বছরের মধ্যে বিদেশে চীনের বিনিয়োগের পরিমাণ দেশে বিদেশি পুঁজিকে অতিক্রম করবে। তিনি বলেন, "২০১৩ সালে চীনের অ-আর্থিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৯০.১৭ বিলিয়ন ডলার। একই সময় আমরা বিদেশি পুঁজি আকর্ষণ করেছি ১১৭.৫৮৬ বিলিয়ন ডলারের। এ ক্ষেত্রে ব্যবধান মাত্র ১০ বিলিয়ন ডলার। এমন পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছর না হলেও আগামী বছর বা পরের বছরে বিদেশে চীনের বিনিয়োগের পরিমাণ বিদেশি পুঁজির চেয়ে বেশি হবে। চীনের 'বিদেশে যাওয়া' এবং 'বিদেশ থেকে আনা' – এর মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়ন সারা বিশ্বের জন্য এক ভালো ব্যাপার। এটা চীনের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সহযোগিতা উন্নয়নের জন্যও ভালো।"
গত বছর চীনে বিদেশি পুঁজির অর্ধেক সেবাশিল্পে প্রবেশ করেছে। চীনের যন্ত্রনির্মাণ শিল্পে বিদেশি পুঁজি ব্যবহারের পরিমাণ এর আগের বছরের তুলনায় হ্রাস পেয়েছে। শেন ডান ইয়াং বলেন, এটা হচ্ছে চীনে বিদেশি পুঁজি ব্যবহারের মান উন্নত করার প্রতিফলন। চীন অন্য ক্ষেত্রে বিদেশি পুঁজি ব্যবহারের ওপরও গুরুত্ব দিচ্ছে এবং নির্মাণ শিল্পে বিদেশি পুঁজি ব্যবহারকে উত্সাহ ও সমর্থন দিয়ে যাবে।
গত বছর চীনের বৈদেশিক বাণিজ্যের পরিমাণ ৪ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। মুদ্রা বিনিময়-হারের উপাদান বাদ দিলে গত বছর চীনের আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ তার আগের বছরের তুলনায় ৭.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। শেন ডান ইয়াং বলেন, চীন বিশ্বের পণ্য বাণিজ্যের বৃহত্তম দেশে পরিণত হতে পারে। তবে তিনি উল্লেখ করেন যে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জরিপ অনুযায়ী, প্রায় ৮০ শতাংশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান মনে করে, বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধার-পরিস্থিতি স্থিতিশীল নয়। অর্ধেকের বেশি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চীনের অভ্যন্তরীণ উপাদানের ব্যয় বৃদ্ধি উপলব্ধি করেছে। সুতরাং ২০১৪ সালে চীনের বৈদেশিক বাণিজ্য পরিস্থিতি কঠোর ও জটিল হবে।
শেন ডান ইয়াং বলেন, "গোটা পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা চলতি বছরের বৈদেশিক বাণিজ্যের উন্নয়নের ব্যাপারে সর্তকতা ও আস্থার মনোভাব পোষণ করছি। চলতি বছর বৈদেশিক বাণিজ্যের স্থিতিশীল উন্নয়ন চাইলে কমপক্ষে তিনটি বিষয়ের দিকে নজর দিতে হবে। প্রথমত, যদিও বিশ্ব অর্থনীতির কিছুটি পুনরুন্নয়ন হয়েছে, তবে পুনরুদ্ধার-পরিস্থিতি এখনো স্থিতিশীল হয়নি। বিদেশি বাজারের মন্দা চীনের ৭৭.৯ শতাংশ রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ওপর প্রভাব ফেলেছে। দ্বিতীয়ত, চীনের অভ্যন্তরীণ উপাদানের কারণে উত্পাদন-ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে মাঝারি ও ক্ষুদ্র আকারের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো আরো কঠিন অবস্থার সম্মুখীন হচ্ছে। তৃতীয়ত, আন্তর্জাতিক বাজারের প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরো তুমুল হয়েছে। এমন পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছর বৈদেশিক বাণিজ্যির প্রবৃদ্ধি-হার অনুমান করা খুব কঠিন। সবাই মনে করে, এ হার গত বছরের চেয়ে বেশি হবে না।"
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে চীনের আমদানিকৃত ভোগ্যপণ্যের পরিমাণ ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। শেন ডান ইয়াং বলেন, চীনের ২০০ বিলিয়ন ডলারের ভোগ্যপণ্যের আমদানি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক অংশীদারদের জন্য বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থান এবং বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
গত বছর চীনের রেনমিনপি ও মার্কিন ডলারের বিনিময়ের হার বার বার নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। এর ফলে চীনের রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো আরো বেশি চাপ অনুভব করেছে। শেন ডান ইয়াং বলেন, চীন সরকার অব্যাহতভাবে বৈদেশিক বাণিজ্যের উন্নয়নকে সমর্থন দেবে। (ইয়ু/এসআর)
| ||||