Web bengali.cri.cn   
দক্ষিণ আমেরিকান দেশগুলোর মহাকাশ খাতে চীনের সহায়তা
  2013-12-30 18:48:11  cri


একুশ ডিসেম্বর ভোরবেলায় চীন সফলভাবে বলিভিয়ার প্রথম রাষ্ট্রয়াত্ত টেলিযোগাযোগ উপগ্রহ উত্‌ক্ষেপণ করে। এখন শুনুন এ সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন।

এবার সিছান উপগ্রহ উত্‌ক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে উত্‌ক্ষিপ্ত বলিভিয়ার 'তুপাক কাতারি'নামের টেলিযোগাযোগ উপগ্রহটি হচ্ছে চীন রপ্তানিকৃত পঞ্চম টেলিযোগাযোগ উপগ্রহ এবং দক্ষিণ আমেরিকার ব্যবহারকারীদের জন্য কক্ষপথে দেওয়া দ্বিতীয় উপগ্রহ। মহাকাশ খাতে চীন ও দক্ষিণ আমেরিকার সহযোগিতার বর্তমান অবস্থা প্রসঙ্গে চীনের মহাপ্রাচীর শিল্প গোষ্ঠির ভাইস-চেয়ারম্যান হো শিং বলেন, "গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকের প্রথম দিকে আমরা ব্রাজিল সরকারের সঙ্গে সম্পদ উপগ্রহ-সংক্রান্ত একটি সরকারি সহযোগিতা প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষর করি। তখন থেকে মহাকাশ ক্ষেত্রে আমাদের ও দক্ষিণ আমেরিকার সহযোগিতা শুরু হয়।"

হো শিং বলেন, ২০০৫ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত চীন গুয়াতেমালার সঙ্গে যথাক্রমে টেলিযোগাযোগ ও ভূ-রিমোট-সেন্সিং উপগ্রহ-সংক্রান্ত বাণিজ্যিক সহযোগিতা প্রকল্পের চুক্তি সই করে। দুটি উপগ্রহই সফলভাবে উত্‌ক্ষিপ্ত হয়েছে এবং সুষ্ঠুভাবে চলছে। এর পর চীন পেরু, কলম্বিয়া, চিলি ও ইকুয়েডরসহ দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে উপগ্রহ প্রকল্পের আলোচনায় অংশগ্রহণ করে এবং কলম্বিয়ার উপগ্রহ প্রকল্পের দরপত্রে অংশ নেয়। বলা যায়, দক্ষিণ আমেরিকা চীনের উপগ্রহ রপ্তানির গুরুত্বপূর্ণ বাজারে পরিণত হয়েছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন দক্ষিণ আমেরিকা ও অন্যান্য নবোদিত দেশের সঙ্গে মহাকাশ ক্ষেত্রের সহযোগিতা জোরদার করেছে। চীন আশা করে, এর মাধ্যমে উচ্চ প্রযুক্তিগত খাতের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা সম্প্রসারিত হবে।

হো শিং মনে করেন, চীনের মহাকাশ খাতের আন্তর্জাতিকীকরণ আর্থিক মুনাফা সৃষ্টির পাশাপাশি দেশের গোটা পরিস্থিতির সেবা এবং বন্ধুত্বপূর্ণ বৈদেশিক সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

চীনের মহাকাশ শিল্প গোষ্ঠির উপগ্রহ প্রকল্প বিষয়ক প্রকৌশলী লি চিং থাও বলেন, 'প্রতিটি উপগ্রহ উত্‌ক্ষেপণ আর গবেষণার প্রক্রিয়ায় বিদেশি ব্যবহারকারীরা উপগ্রহের গুণগত মান তত্ত্বাবধান করার জন্য চীনে লোক পাঠায়। তাদের সঙ্গে বিনিময়ের মধ্য দিয়ে আমাদের গবেষক ও প্রযুক্তিবিদ দল গঠন দ্রুত হয়েছে। আমাদের পণ্যের আন্তর্জাতিকীকরণে অগ্রগতি হয়েছে। কারণ তাঁরা অনেক ভালো ভালো প্রস্তাব করেছেন।"

শিছাং উপগ্রহ উত্‌ক্ষেপণ কেন্দ্রের কমিউনিস্ট পার্টি কমিটির সম্পাদক সুন পাও ওয়েই বলেন, ১৯৮৬ সালে এ কেন্দ্র আন্তর্জাতিক উপগ্রহ উত্‌ক্ষেপণ প্রকল্পের কাজ শুরু করে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা গভীরতর হওয়ার সাথে সাথে নানা ক্ষেত্রে এ উত্‌ক্ষেপণ কেন্দ্রের উন্নতি হয়েছে। তিনি বলেন, "চীনের মহাকাশ শিল্পের আন্তর্জাতিকীকরণ ফলপ্রসূভাবে আমাদের উত্‌ক্ষেপণের স্থাপনা উন্নত করার ক্ষেত্রে সহায়তা করেছে। সহযোগিতার মধ্য দিয়ে আমরা নিজেরাও অগ্রগতি অর্জন করেছি। আন্তর্জাতিক সহযোগিতার সেবা ও শর্ত অনুসারে আমরা উত্‌ক্ষেপণ-সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম উন্নত করেছি। এ ধরনের সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন দেশের মহাকাশ শিল্পের প্রযুক্তিবিদদের সঙ্গে মত বিনিময় করেছি। এভাবে আমাদের ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতা, পরিচালনার পদ্ধতি, গুণগত মান-সম্পর্কিত সচেতনতা, গুণগত মান নিয়ন্ত্রণ-ব্যবস্থা আর গুণগত মান ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থাসহ সবকিছু উন্নত হয়েছে।"

বলিভিয়ার মহাকাশ ব্যুরোর মহাপরিচালক ইভান জামব্রানা বলেন, "আমি মনে করি, চীন আর ল্যাটিন আমেরিকার মহাকাশ সহযোগিতার লক্ষ্য হচ্ছে যৌথ ও শান্তিপূর্ণভাবে মহাকাশ উন্নয়ন করা। এ সহযোগিতা ল্যাটিন আমেরিকান দেশগুলোর উন্নয়নের অনুকুল হবে। চীন অকৃপণভাবে আমাদের সঙ্গে বৈজ্ঞানিক সফলতা ভাগাভাগি করে এবং ল্যাটিন আমেরিকান দেশগুলোকে মহাকাশ প্রযুক্তির সুফল দিয়েছে। এ ধরনের সহযোগিতার মাধ্যমে চীনের মহাকাশ শিল্পও নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিকশিত হয়েছে। ফলে এটা হচ্ছে উভয়ের বিজয় আর পরস্পরের অনুকুল সহযোগিতা। ভবিষ্যতে আমরা এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবো।"

এবারের বলিভিয়ার টেলিযোগাযোগ উপগ্রহের সফলতা দু'পক্ষের মহাকাশ সহযোগিতার জন্য আরো মজবুত ভিত্তি স্থাপন করেছে। হো শিং বলেন, "আসলে ব্রাজিলও টেলিযোগাযোগ উপগ্রহ-সংক্রান্ত সহযোগিতা নিয়ে আমাদের সঙ্গে আলাপ করেছে। চিলি, পেরু, কলম্বিয়া ও ইকুয়েডর আরো আগে থেকে আমাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রেখেছে। আমি বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতে চীন ও দক্ষিণ আমেরিকান দেশগুলোর সহযোগিতা আরো সুষ্ঠুভাবে চলবে।" (ইয়ু/এসআর)

  

মন্তব্য
লিঙ্ক