Web bengali.cri.cn   
চীনে টানা দশ বছর বেড়েছে খাদ্য উত্পাদন
  2013-12-16 16:15:21  cri


কৃষি সর্বদাই চীনের একটি মৌলিক সমস্যার জায়গা ছিল। চীনের কৃষিমন্ত্রী হান ছাং ফু সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় পরিষদের তথ্য কার্যালয় আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, চলতি বছর হচ্ছে চীনের কৃষি খাতে বাম্পার ফলনের আরেকটি বছর। নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম টানা দশ বছর ধরে খাদ্যশস্য উত্পাদনে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হলো।

কৃষিমন্ত্রী হান ছাং ফু বলেন, "যদিও এ বছর দক্ষিণ চীনে খরা আর উত্তর চীনে বন্যাসহ নানা প্রতিকূল উপাদান ছিল, তবুও কেন্দ্রীয় সরকার আর বিভিন্ন পক্ষের যৌথ প্রচেষ্টায় গ্রীষ্মকালীন শস্য, আউশ ধান আর শরত্কালীন শস্যের উত্পাদনের পরিমাণ – সবটাতেই প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। চলতি বছর ০.৬ ট্রিলিয়ন কেজি খাদ্যশস্য উত্পাদিত হয়েছে এবং নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে।"

হান ছাং ফু মনে করেন, চলতি বছরের খাদ্যশস্য উত্পাদন পরিমাণের বৃদ্ধি হচ্ছে 'ঐতিহাসিক অগ্রগতি'। কারণ চীন গণপ্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম একটানা দশ বছর ধরে খাদ্যশস্য উত্পাদনে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। কৃষকদের আয় এ বছরের প্রথম নয় মাসে ৯.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ প্রবৃদ্ধি চীনের জিডিপি এবং নগরবাসীদের আয়-বৃদ্ধির হারের চেয়েও বেশি। হান ছাং ফু জানান, এ বছরের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় চীন সরকার অর্থ, কর্মী আর প্রযুক্তির দিক থেকে কৃষকদের সহায়তা দেয়, যাতে খাদ্যশস্য উত্পাদনের ওপর দুর্যোগ-সৃষ্ট প্রভাব কমানো যায়।

তিনি বলেন, "দুর্যোগ মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকার মোট ৪০০ কোটি ইউয়ান আর্থিক সহায়তা দেয়। যেমন উত্তর চীন আর দক্ষিণ চীনের ধান উত্পাদন অঞ্চলে সার দেওয়া, শীত, ঝড় ও তুষার রোধ করা, ফসলের ক্ষতিকর উপাদান নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা সমর্থন করা ইত্যাদি। এসব ব্যবস্থার কারণে কার্যকরভাবে দুর্যোগের প্রতিকূল প্রভাব কমানো সম্ভব হয়।"

খাদ্যশস্য উত্পাদনের পরিমাণে স্থিতিশীলগতির বৃদ্ধি চীনের খাদ্য নিরাপত্তার চাপ কমানোর ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। হান ছাং ফু আবারও চীন সরকারের অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য উত্পাদনের ওপর নির্ভর করার নীতি উল্লেখ করেন। তিনি খাদ্যশস্যের স্বয়ংসম্পূর্ণতা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে চীনের কতগুলো সংস্কার নীতি ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, "চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক সি চিন পিং বলতেন, 'চীনাদের ভাতের বাটি নিজের হাত ধরতে হবে এবং নিজের ভাতের বাটির মধ্যে প্রধানত নিজের উত্পাদিত ভাত রাখতে হবে। এটা হচ্ছে আমাদের মৌলিক নীতি। ফলে আমরা খাদ্যশস্যের ৯৫ শতাংশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা বজায় রাখবো।"

প্রেস ব্রিফিংয়ের আরেকটি আলোচ্য বিষ ছিল জিএম খাদ্য। কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ বি মেই চিয়া বলেন, আজ পর্যন্ত জিএম খাদ্যের নিরাপত্তা সমস্যা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়নি। তিনি বলেন, "বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বার বার বলেছে যে, জিএম খাদ্য অন্যান্য গতানুগতিক কৃষিপণ্য ও খাবারের মতো নিরাপদ। জিএম খাদ্যের ওপর লোকজনের সংশয় ও উদ্বেগ আছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে চীনে জিএম প্রযুক্তি উন্নয়ন হয়েছে খুব আগে নয়। লোকেরা জিএম প্রযুক্তি সম্পর্কে ভালোভাবে জানে না। আমাদের বৈজ্ঞানিক প্রচারও যথেষ্ঠ নয়। ফলে পরবর্তীকালে আমরা সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে মিলে বৈজ্ঞানিক প্রচার জোরদার করবো, যাতে জনগণ জানতে পারে জিএম মানে কী? বাস্তব অনুশীলন উন্নয়ন আর বৈজ্ঞানিক প্রচার গভীর হওয়ার সাথে সাথে জিএম পণ্যের ওপর জনগণের সংশয় ধাপে ধাপে নির্মূল হবে।" (ইয়ু/এসআর)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
লিঙ্ক