Web bengali.cri.cn   
চীনের খাদ্য ও শিশুপণ্য উত্পাদন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতি
  2013-11-04 18:29:51  cri


এখন চীনের ওয়েই ওয়েই গ্রুপের ব্র্যান্ড মূল্য ৪০০ কোটি ইউয়ান ছাড়িয়ে গেছে। প্রতিষ্ঠার শুরুর দিকে এ গ্রুপ একটি ছোট চাউলের দোকান ছিল। চীনের গুডবেবি গ্রুপ হচ্ছে বাচ্চাদের বহন করা ঠেলা-চেয়ার বা প্রাম সরবরাহে বিশ্বের বৃহত্তম ব্যবসা প্র্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠার শুরুর দিকে এটা কেবল একটি স্কুলের অধীনস্থ কারখানা ছিল। পণ্যের মানের ওপর গুরুত্বারোপ করার ভিত্তিতে এ দুটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান দ্রুত উন্নতি সাধন করেছে। এখন শুনুন এ সম্পর্কিত একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন।

ওয়েই ওয়েই গ্রুপের প্রধান পণ্য হচ্ছে সয়া দুধ। অতি পুষ্টিকর এ পানীয় বহু বছর ধরে চীনে জনপ্রিয় পণ্যের অন্যতম ছিল। সয়া দুধের প্রধান কাঁচামাল হচ্ছে সয়াবিন আর দুধ। কিন্তু এখন জিনগতভাবে রূপান্তিরিত অর্থাত্ জিএম সয়াবিন নিয়ে অনেক তর্কবিতর্ক হচ্ছে। তাহলে সয়া দুধ নিরাপদ কিনা?

এ প্রসঙ্গে ওয়েই ওয়েই গ্রুপের উপ-মহাব্যবস্থাপক চাও হুই ছিং সয়া দুধের কাঁচামাল বাছাই করার নীতি ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, "এখন জিএম সয়াবিন আর অ-জিএম সয়াবিন নিয়ে অনেক তর্কবিতর্ক চলছে। জিএম সয়াবিন তেল-সমৃদ্ধ। তাই তেল উত্পাদকদের প্রায় সবাই আমদানিকৃত জিএম সয়াবিন ব্যবহার করে। কিন্তু সয়া দুধ তৈরি করতে প্রধানত প্রোটিন লাগে, তেল লাগে না। সেকারণে আমরা উত্তর-পূর্ব চীনে উত্পাদিত সয়াবিন ব্যবহার করি। এটা হচ্ছে অ-জিএম সয়াবিন।"

জানা গেছে, চীনের প্রথম সয়া দুধ উত্পাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ওয়েই ওয়েই গ্রুপ ২০০৬ সাল থেকে চীনের হংকং আর জাপানের খাদ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা করে একটি খাদ্য নিরাপত্তা গবেষণালয় প্রতিষ্ঠা করেছে। তারা কাঁচামাল থেকে পণ্য প্রক্রিয়াকরণ পর্যন্ত খাদ্য নিরাপত্তা তত্ত্বাবধান করে।

এ শিল্পপ্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য হচ্ছে শত বছর স্থায়ী ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করা। সুতরাং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে এ কোম্পানির একটি নিজস্ব প্রয়োজন। এ সম্পর্কে চাও হুই ছিং বলেন, (রেকর্ডিং-৩)

"খাদ্য তৈরি করতে চাইলে প্রথমে বিবেক থাকতে হবে। কেবল ভালো নৈতিক গুণ থাকলে ভালো খাবার তৈরি করা যায়। নাহলে নিম্নমানের কাঁচামাল দিয়ে খাদ্য উত্পাদন করে কিছু টাকা আয় করলেও অবশেষে তোমার প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হবে। তুমি এক শ বছর স্থায়ী শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চাইলে প্রথমে নৈতিক গুণ-বিশিষ্ট ভালো মানুষ হও, তারপর শিল্পপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করো।"

চীনের গুডবেবি গ্রুপের বোর্ডের চেয়ারম্যান সোং চোং বলেন, "আমরা প্রথম হতে চাই। কীভাবে প্রথম হবো? বিশ্বে যে পণ্য নেই, সে পণ্য আমরা তৈরি করবো।"

এখন প্রাম উত্পাদনকারী চীনের এ শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ৫৮০০টি পেটেন্ট আছে। বোস্টন, টোকিও আর হংকংসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এর পাঁচটি গবেষণাকেন্দ্র আছে। এর পণ্য ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য আর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ৭০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে বিক্রি হয়। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৯ সালে চীন, উত্তর আমেরিকা আর ইউরোপের বাজারে প্রতি ২.৯টি প্রামের মধ্যে একটি ছিল চীনের গুডবেবি গ্রুপের তৈরি।

সোং চোং বলেন, "যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে খাপ খাওয়ানোর উপায় সবচেয়ে ভালো জানেন মার্কিন নকশাকারী। তবে ধারা, রং আর হালফ্যাশন ক্ষেত্রে ইউরোপ অপেক্ষাকৃত এগিয়ে আছে। ফলে ইউরোপে আমাদের গবেষণাকেন্দ্র যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের বাজারমুখী পণ্যের হালফ্যাশনের নেতৃত্ব দেয়।"

এ শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সাফল্য কেবল বিপুল পরিমাণের বিক্রয়ের মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হয় তা নয়। এ কোম্পানি মার্কিন উপাদান ও পরীক্ষা সমিতি আর ইউরোপের মান কমিটির সদস্য। তারা নিজ দেশের দীর্ঘ সময় ব্যবহারযোগ্য শিশুপণ্যের মান নির্ধারণ করে। জাপানের ভোগ্যপণ্য নিরাপত্তা কমিটিও সে দেশের জাতীয় মানদণ্ড সংশোধন করার কাজে অংশগ্রহণে গুডবেবি গ্রুপকে আমন্ত্রণ জানায়। ২০১২ সালের শেষ নাগাদ গুডবেবি গ্রুপ মোট ৫৭টি জাতীয় মানদণ্ড আর ৪৫টি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড নির্ধারণ ও সংশোধন কাজে অংশগ্রহণ করে। (ইয়ু/এসআর)

মন্তব্য
লিঙ্ক