Web bengali.cri.cn   
চীন-দক্ষিণ এশিয়া এক্সপোর প্রতি ব্যাপক গুরুত্ব
  2013-06-07 18:01:28  cri

চীনের ইয়ুন নান প্রদেশের রাজধানী খুনমিংয়ে বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে প্রথম চীন-দক্ষিণ এশিয়া এক্সপো। এটি প্রথম এক্সপো হলেও এর আগে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে নিয়ে অন্য একটি মেলা হতো, যেটির নাম ছিল দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর পণ্যমেলা।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা গওহর রিজভি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও প্রসারে চীনের উদ্যোগের অংশ হিসেবে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর পণ্যমেলাকে চীন-দক্ষিণ এশিয়া এক্সপো পর্যায়ে উন্নীত করা হয়। চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদ গত বছরের অক্টোবরে বিষয়টি অনুমোদন দেয়। এবারের এক্সপোর প্রতিপাদ্য হলো 'চীন-দক্ষিণ এশিয়া সার্বিক সহযোগিতা প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়ন অর্জন, অংশীদারিত্বমূলক উন্মুক্তকরণ, প্রায়োগিক সহযোগিতা, পারস্পরিক সুবিধা, এবং সাদৃশ্যমূলক উন্নয়ন।

আয়োজক চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ইয়ুন নান প্রাদেশিক সরকারের লক্ষ্য হলো পণ্যবাণিজ্য, সেবাবাণিজ্য, বিনিয়োগ সহযোগিতা, পর্যটন সহযোগিতা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের সমন্বয়ে এ এক্সপোকে একটি উচ্চ পর্যায়ের সমন্বিত ফোরাম হিসেবে গড়ে তোলা; চীন ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে উভয়ের জন্য লাভজনক একটি সেতু গড়ে তোলা, এবং অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে চীনের অথনৈতিক সম্পর্ক ও বাণিজ্য প্রসারের একটা মাধ্যম সৃষ্টি করা।

ছয় দিনের প্রথম চীন-দক্ষিণ এশিয়া এক্সপোর পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হচ্ছে একুশতম চীন-খুনমিং আমদানি ও রপ্তানি মেলা, যেখানে অংশ নিচ্ছে আসিয়ান সদস্য ও চীনের অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলোসহ আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশ।

যে লক্ষ্য নিয়ে আয়োজকরা এ প্রদর্শনী ও মেলার উদ্যোগ নিয়েছেন, সেটা যে অব্যর্থ হতে যাচ্ছে তার প্রমাণ মিলল দেশগুলোর অংশগ্রহণের উত্সাহে। বত্রিশটি দেশের অংশগ্রহণকারী ব্যবসায়ীরা সব মিলে এ দুটি আয়োজনের ৫টি বিশাল কলেবরের প্রদর্শনী অঞ্চলে মোট ২,৪২০টি স্টল খুলেছেন। প্রদর্শনী অঞ্চলগুলোর মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়া প্রদর্শনী অঞ্চল, আসিয়ান প্রদর্শনী অঞ্চল, অন্যান্য দেশ ও অঞ্চলের প্রদর্শনী অঞ্চল, ইলেক্ট্রনিক পণ্য প্রদর্শনী অঞ্চল, এবং জৈব-সম্পদ প্রদর্শনী অঞ্চল। এছাড়া আসবাবপত্র, দালানকোঠা নির্মাণ-সরঞ্জাম এবং বড় আকৃতির যন্ত্রপাতির জন্য মূল প্রদর্শনী ভেন্যুর বাইরে আরও দুটি প্রদর্শনী অঞ্চল স্থাপন করা হয়।

এবারের এক্সপোর প্রতিপাদ্য দেশ বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা খুলেছেন দেড় শয়ের মতো স্টল। তারা প্রদর্শন করছেন বস্ত্র, হস্তশিল্প পণ্য, আসবাপত্র, চামড়া ও পাটজাত পণ্য, চুড়ি, চা, ইত্যাদি। এ প্রদর্শনী ও মেলায় অংশগ্রহণকারী বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে ভারতের টাটা গ্রুপ, বাংলাদেশের এশিয়ান গ্রুপ, লাওসের বিরলাও, ভিয়েতনামের বিটিস এবং শ্রীলঙ্কার জাম জেমস।

দুটি আয়োজনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীন ও তার বাইরের দেশগুলোর নেতাদের উপস্থিতিও মনে করিয়ে দিচ্ছিল এ প্রদর্শনী ও মেলাকে কতটা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সবাই।

এ অনুষ্ঠানে ছিলেন চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী মা খাই, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা গওহর রিজভি, শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া, সার্ক মহাসচিব আহমেদ সালিম, নেপালের ভাইস-প্রেসিডেন্ট পরমানন্দ ঝা, শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী দেশানায়াকা জায়ারত্নে, লাওসের উপ-প্রধানমন্ত্রী সমসাভাত লেংসাভাদ, ভিয়েতনামের উপ-প্রধানমন্ত্রী ভু ভান নিহ, মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ, মালাবির প্রেসিডেন্ট জয়েস হিলদা বানদা এবং খুনমিংয়ের গভর্নর লি জি হাংসহ সার্ক, আসিয়ান সদস্য, চীনের প্রতিবেশী দেশ এবং আফ্রিকার কয়েকটি দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা গওহর রিজভি জানালেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসার আগ্রহ ব্যক্ত করেছিলেন। কিন্তু উদ্বোধনী দিন অর্থাত্ ৬ জুন বাংলাদেশের সংসদে ২০১৩-১৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উত্থাপিত হওয়ায় তিনি আসতে পারেন নি।

শুধু বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি নয়, মৈত্রী বৃদ্ধিও এবারের আয়োজনের অন্যতম লক্ষ্য। আর সেকারণে প্রদর্শনী ও মেলার পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হলো চীন-দক্ষিণ এশিয়া ব্যবসা ফোরাম, চীন দক্ষিণ এশিয়া অর্থনীতি ও বাণিজ্য ফোরাম, চীন দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ ফোরাম, এবং চীন দক্ষিণ এশিয়া মৈত্রী সমিতি ফোরাম। (শিহাবুর রহমান)

চীন-দক্ষিণ এশিয়া এক্সপো এবং চীন-খুনমিং আমদানি ও রপ্তানি মেলা দুটিই চলবে আগামী ১০ জুন পর্যন্ত। (শিহাবুর রহমান)

মন্তব্য
লিঙ্ক