Web bengali.cri.cn   
প্রথম চীন-দক্ষিণ এশিয়া এক্সপো সকলের জন্য সুযোগ
  2013-06-03 20:16:24  cri

চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আজিজুল হক

দক্ষিণ এশিয়া এক্সপো আয়োজনের প্রাক্কালে চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আজিজুল হক চীনের সংবাদদাতাকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে আনন্দের সাথে বলেন, "চীন-দক্ষিণ এশিয়া এক্সপো বাংলাদেশ আর চীন ও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বিনিময় ও বাণিজ্য উন্নয়নের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মহাসম্মিলনী। চীন সরকার বাংলাদেশি জনগণকে সবচেয়ে আন্তরিক বন্ধু হিসেবে মনে করে এবং দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সহযোগিতা করার জন্য এক অতি ভালো সুযোগ সৃষ্টি করেছে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আর ইয়ুননান প্রদেশ আয়োজিত প্রথম চীন-দক্ষিণ এশিয়া এক্সপো বাংলাদেশ আর চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ বিনিময় আর অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা জোরদার করার জন্য একটি অতি ভালো প্লাটফর্ম গড়ে তুলেছে। এবারের এক্সপো আয়োজনের প্রয়াস নেওয়ার জন্য আমি বিশেষ করে ইয়ুননান প্রদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। এবারের এক্সপোর প্রস্তুতিমূলক কাজ অতি যথাযথ এবং আয়োজনের কাজও সুশৃঙ্খল। আমি বিশ্বাস করি, দক্ষিণ এশিয়া এক্সপো অবশ্যই সাফল্যমণ্ডিত হবে।"

তিনি বলেন," বাংলাদেশ হচ্ছে এবারের এক্সপোর প্রতিপাদ্য দেশ। বাংলাদেশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে চীনে ভালোভাবে নিজেদের পণ্য ও সংস্কৃতি প্রদর্শন করবে।"

রাষ্ট্রদূত আজিজুল হক আরো বলেন, "বাংলাদেশ আর চীনের বাণিজ্যিক আদানপ্রদান দিন দিন বাড়ছে। এ অঞ্চল ধাপে ধাপে বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক সহযোগিতার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ আর চীনের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ২০০৬ সালের ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ২০১২ সালে প্রায় ৯০০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। অনুমান অনুযায়ী, ২০১৫ সালে দু'দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ১০০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। "

চীন সরকার চামড়া, বস্ত্রপণ্য ও ইলেকট্রনিক দ্রব্যসহ বাংলাদেশের ৪৭২১ ধরনের পণ্যকে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদানের নীতি বলবত্ করেছে। এখন বাংলাদেশে চীন প্রধানত ওষুধ, যন্ত্রপাতি, চিকিত্সা সরঞ্জাম, জ্বালানি, ইস্পাত আর বিমানসহ নানা পণ্য রপ্তানি করে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ থেকে চীনে রপ্তানিকৃত চামড়া, তুলোর বস্ত্রপণ্য এবং সমুদ্রজাত দ্রব্যের পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ নানা প্রাধিকারমূলক নীতির মাধ্যমে চীনের যন্ত্রপাতি ও সাজসরঞ্জাম আমদানি ও রপ্তানি কোম্পানি, হুয়াংওয়েই, চোংশিং ও হাইয়ারসহ চীনের বড় বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করেছে।

বাংলাদেশ ও চীনের ইয়ুননানের সহযোগিতার প্রক্রিয়া স্মরণ করতে রাষ্ট্রদূত আজিজুল হক বলেন, "২০০৮ সালে দক্ষিণ এশীয় পণ্য প্রদর্শনীতে বাংলাদেশের স্টলের সংখ্যা ছিল মাত্র ১৫টি। ২০০৯ সালে সে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৫-এ, ২০১০ সালে ৭৩-এ, ২০১১ সালে ৯০-এ, ২০১২ সালে ১১৩-এ এবং ২০১৩ সালে তা ১৫০-এ। স্টলের সংখ্যা ধাপে ধাপে বৃদ্ধি পেয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, এ বছর খুনমিংয়ে আসা বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের সংখ্যা হবে ১০০০। বোঝা যায়, দক্ষিণ এশিয়া এক্সপো - এ সুন্দর প্লাটফর্মের মাধ্যমে বাংলাদেশ আর চীন, বিশেষ করে ইয়ুননানের সঙ্গে বিনিময় ও যোগাযোগ আরো নিবিড় হবে।"

রাষ্ট্রদূত বিশ্বাস করেন, দক্ষিণ এশিয়া এক্সপোর মাধ্যমে দু'পক্ষের সমঝোতা গভীর হবে, পারস্পরিক আস্থা জোরদার হবে এবং সার্বিক সহযোগিতা বাড়বে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ ইয়ুননানের সঙ্গে বিনিময় ও সহযোগিতা আরো সম্প্রসারণ করতে চায়। তিনি আশা করেন, আরো বেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠান ইয়ুননানে এসে বাণিজ্যিক সুযোগ খুঁজবে এবং চীনের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে। (ইয়ু/এসআর)


1 2
মন্তব্য
লিঙ্ক