|
0115lvyou
|
সুপ্রিয় শ্রোতা, সবাই ভালো আছেন তো? আজকের 'চলুন বেড়িয়ে আসি' আসরে আপনাদের স্বাগত জানাই, আমরা আপনাদের বন্ধু সুবর্ণা আর আলিম। গেল সপ্তাহে আমরা আপনাদের নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার একটি দারুণ সুন্দর পর্যটন স্থান মালদ্বীপে বেড়াতে গিয়েছিলাম। আমরা ইতোমধ্যে অনেক শ্রোতার চিঠিও পেয়েছি। আপনারা এই শীতকালে আরো কিছু সুন্দর দ্বীপে বেড়াতে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আপনাদের আগ্রহের কারণে আজ আমার বেড়াতে যাবো পূর্ব আফ্রিকার দ্বীপরাষ্ট্র মরিসাস। মরিসাসকে পৃথিবীর বুকে এক টুকরো স্বর্গ বললে বোধকরি অত্যুক্তি হবে না।
আলিম. মরিসাস পূর্ব আফ্রিকার একটি দ্বীপদেশ। এটি ভারতীয় সমুদ্রের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে অবস্থিত। আফ্রিকার স্থলভূমি থেকে এর দূরত্ব প্রায় ২২০০ কিলোমিটার। অগ্নেয়গিরির দ্বীপদেশ হিসেবে মরিসাসের চারপাশে প্রবাল দেখা যায়। দ্বীপের সৈকত এলাকায় পাতলা সমতল ভূমি এবং মধ্যাঞ্চলে মালভূমি ও পাহাড়াঞ্চল। এর দৃশ্য দারুণ সুন্দর। দেশটি মরিসাস দ্বীপ ও অন্যান্য ছোট দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে গঠিত। নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স ও বৃটেনের ঔপনিবেশিক শাসনের পর ১৯৬৮ সালের ১২ মার্চ এ দেশটি স্বাধীনতা পায়।
সুবর্ণা. মরিসাসে মাত্র দুটি ঋতু আছে: বর্ষাকাল ও গ্রীষ্মকাল। সারা বছর দেশের গড় তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত এখানে গ্রীষ্মকাল। তখন সমুদ্র এলাকার তাপমাত্রা গড়ে ২৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং মধ্যাঞ্চলের মালভূমির তাপমাত্রা গড়ে ২২ ডিগ্রী সেলসিয়াস থাকে। মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এখানে শীতকাল। তখন সৈকতের কাছে গড় তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস, মধ্যাঞ্চলের গড় তাপমাত্রা ১৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং সমুদ্রাঞ্চলের তাপমাত্রা গড়ে ২২ ডিগ্রী সেলসিয়াস থাকে। প্রতি বছর জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বৃষ্টি খুবই কম হয় দেশটিতে। তখন দেশটির পর্যটন মৌসুম।
আলিম. মরিসাস একসময় একটি নির্জন দ্বীপ ছিল। ১৫৯৮ সালে নেদারল্যান্ডসের শাসনামলে দ্বীপকে 'মরিসাস' নাম দেওয়া হয়। ১৭১৫ সালে ফ্রান্স দ্বীপটি দখল করে নেয়। ১৮১৮ সালে দ্বীপটিতে ব্রিটিশ শাসন কায়েম হয়। চিনি উত্পাদনকারী হিসেবে দেশটি পরিচিত। অষ্টাদশ শতাব্দী থেকেই আখ মরিসাসের প্রধান অর্থকরী ফসল। দেশের ৯০ শতাংশেরও বেশি কৃষিক্ষেতে আখ চাষ করা হয়। মরিসাসের নানা জায়গায় সবুজ রঙয়ের আখ ক্ষেত দেখা যায়।
সুবর্ণা. প্রাচীনকালে আমেরিকা, আফ্রিকা ও ভারত থেকে আসা দাসরা এ দ্বীপের উন্নয়নে অনেক অবদান রেখেছে। বর্তমানে দ্বীপটিতে নানা জাতির লোকের বাস এবং তাদের ভাষাও ভিন্ন ভিন্ন। তারা নিজ নিজ ধর্ম বিশ্বাস করে এবং নিজেদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ধারণ করে। তবে বিভিন্ন জাতির মধ্যে সুসম্পর্ক একটি লক্ষণীয় দিক।
আলিম. আচ্ছা, প্রিয় শ্রোতা, মরিসাসের কিছু তথ্য জানার পর এখন একটি গান শুনি আমরা। গানের নাম 'সমুদ্রের ঢেউ'। গানের কথা বাংলায় অনুবাদ করলে মোটামুটি এমন দাঁড়ায়: 'আমি তোমার সঙ্গে সামুদ্রিক কচ্ছপের সাঁতার কাটা দেখতে চাই/ আস্তে আস্তে সৈকতে এসে সমুদ্রের ঢেউ দেখতে চাই/ তোমার কোনো ভয় বা একাকী লাগবে না/ আমি সবসময় তোমার সঙ্গে থাকতে চাই/ তোমাকে সুখী দেখতে চাই/ দিন দিনের মতো চলছে; আমরাও একদিন বৃদ্ধ হবো/ আমি জানি একদিন তুমি আমাকে ভালবাসবে/ কারণ, আমার মনে হয় আমি খুবই ভালো ছেলে/ সময় দ্রুত চলে যায়, সুন্দরীও প্রবীণ নারীতে পরিণত হবে/ আমিও বৃদ্ধ হবো/ সেদিন আমরা হাতে হাত রেখে সমুদ্রের ঢেউ দেখবো...
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |