|
1218lvyou
|
সমুদ্র, পাহাড়, নদী, মরুভূমি ও তৃণভূমিসহ প্রাকৃতিক পরিবেশের নানা ধরনের দৃশ্য পর্যটকদের আকর্ষণ করে থাকে। পশ্চিম চীনের নিংসিয়া হুই জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের শাবোথৌ দর্শনীয় এলাকা একটি দারুণ সুন্দর পর্যটন স্থান।
সেখানকার থেংকেলি মরুভূমি, মরুভূমির উদ্ভিদ ও পশুপাখির সহাবস্থানের দৃশ্য পর্যটকদের খুবই প্রিয়। আজকের অনুষ্ঠানে আমরা আপনাদের নিয়ে এ দর্শনীয় স্থানে বেড়াতে যাবো।
আলিম. নিংসিয়া শাপোথৌ প্রাকৃতিক সংরক্ষণ এলাকা ১৯৮৪ সালে গড়ে তোলা হয়। এর আয়তন প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর। থেংকেলি মরুভূমি ও সেখানকার উদ্ভিদ আর পশুপাখি সংরক্ষণ করার জন্য এ এলাকা গড়ে তোলা হয়েছে। এলাকাটি থেংকেলি মরুভূমির দক্ষিণপূর্বাঞ্চলে অবস্থিত এবং এখানে তৃণভূমির পাশপাশি আছে মরুভূমি।
সুবর্ণা. শাপোথৌ নিংসিয়াং হুই জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের চোংওয়ে শহরে অবস্থিত। এখানকার মরুময় পরিবেশ এবং সুন্দর দর্শনীয় স্থান বিশ্ববিখ্যাত। চীনের জাতীয় ভূগোল ম্যাগাজিনে শাপোথৌকে চীনের সবচে সুন্দর দর্শনীয় স্থানগুলোর অন্যতম হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। শাপোথৌ মরুভূমির উপর বাওলান রেলপথ অবস্থিত। রেলপথ দিয়ে গাড়ি চলাচলকে অবাধ ও নিরাপদ করতে বিংশ শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকে রেলপথের দু'পাশে বাতাস প্রতিরোধক ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের পর রেলপথের দু'পাশে ঘন করে বিভিন্ন ধরনের গাছের চারা লাগানো হয়। রেলপথের দু'পাশে ঘন গাছ থাকায়, এখানকার বালি-মাটি স্থির থাকে এবং রেল চলাচলকে রাখে নির্বিঘ্ন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞরা এ মরুশাসন প্রকল্প পরিদর্শনে এসেছেন। বিংশ শতাব্দীর আশির দশকে এলাকাটি বৈশিষ্ট্যময় পর্যটন স্থানে পরিণত হয়।
আলিম. শাপোথৌ পর্যটন এলাকার একটি দারুণ মজার খেলা 'বালি স্কি'। পর্যটকরা কয়েক শো মিটার উঁচু বালির পাহাড় থেকে স্কি করে নিচে নেমে আসেন। খেলাটি বেশ মজার। বালি স্কি করার সময় এক ধরনের বিশেষ শব্দ শোনা যায়। শব্দটি ঘন্টাধ্বনির মতো। এর নাম 'সোনার বালির ঘন্টাধ্বনি'। বালি পাহাড়ের উত্তর দিকে থেংকেলি মরুভূমি। কিন্তু বালি পাহাড়ের দক্ষিণাঞ্চলে সবুজ মরুদ্যান। পর্যটকরা মরুভূমির দৃশ্য পরিদর্শন করার সঙ্গে সঙ্গে এখানে উটের পিঠে চড়তে পারেন। সেটিও এক মজার অভিজ্ঞতা।
সুবর্ণা. এখানে পর্যটকদের জন্য অপেক্ষা করছে আরেকটি মজার খেলা। ছাগলের পুরনো চামড়া দিয়ে তৈরি এক ধরনের ভাসমান ভেলা দিয়ে তারা হুয়াংহো নদী অতিক্রম করতে পারেন। এই ভেলায় মাত্র একজন চড়তে পারেন। এই ভেলা চরে আপনি দ্রুত নদী অতিক্রম করতে পারবেন।
চোওয়ে শহরের পশ্চিম দিকে ১৬ কিলোমিটার দূরে শাপোথৌ দর্শনীয় এলাকা। নিংসিয়া স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের রাজধানী ইনছুয়ান থেকে গাড়িতে সেখানে যেতে ৩ ঘন্টা লাগে। শাপোথৌ'র দক্ষিণাঞ্চলে পাহাড় ও পর্বত, উত্তরাঞ্চলে বিশাল থেংকেলি মরুভূমি এবং মাঝখানে হুয়াংহো নদী। বালি ও নদীর মধ্যে আছে সবুজ মরুদ্বীপ। বালি আর নদীর পাশাপাশি অবস্থান বিশ্বে বিরল।
আলিম. শাপোথৌ'র বালি এবং হাইনান প্রদেশের সানইয়া শহরের সৈকতের বালির মধ্যে কিছু পার্থক্য আছে। এখানকার বালি নরম ও হাল্কা। কিন্তু বালির মধ্যে কোনো কড়ি বা শেল খুঁজে পাওয়া যাবে না। এখানকার বালি অতি পরিস্কার হয়ে বলে সুর্যালোকে সোনার রঙ দেখা যায়।
সুবর্ণা. শাপোথৌ'র সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য ছাড়াও, নিংসিয়ার সাংস্কৃতিক সম্পদসমৃদ্ধ পর্যটন এলাকাও অনেক আকর্ষণীয়। জেনপেইপু'র পুরনো নাম জেনপেইখৌ। প্রাচীনকালে এখানে দুটি সীমান্ত এলাকায় কেল্লা নির্মিত হওয়ায় এর এ নামকরণ করা হয়েছে। দুটি কেল্লা উত্তর ও দক্ষিণ দিকে অবস্থিত। স্থানীয় অঞ্চলের লোকরা দুটি কেল্লাটি পুরনো কেল্লা ও নতুন কেল্লা বলে ডাকে। প্রাচীনকালে চীনের মিং ও ছিং রাজবংশে হোলান পাহাড়ের বাইরে বিভিন্ন সংখ্যালঘু জাতির আগ্রাসন প্রতিরোধ করার জন্য এ দুটি কেল্লা নির্মাণ করা হয়। কেল্লা দুটি মাটির তৈরি। জানা গেছে, পুরনো কেল্লা মিং রাজবংশের হোংজি আমলে অর্থাত্ ১৫০০ সালে নির্মিত হয় এবং নতুন কেল্লা ছিং রাজবংশের ছিয়ানলোং আমলে অর্থাত্ ১৭৪০ সালে নির্মিত হয়। পুরনো কেল্লার দৈর্ঘ্য ১৭৫ মিটার, বিস্তার ১৬০ মিটার। এর উত্তর দিকে ২০০ মিটার দূরে নতুন কেল্লা অবস্থিত। নতুন কেল্লার দৈর্ঘ্য ১৭০ মিটার, বিস্তার ১৫০ মিটার এবং উচ্চতা ১০ মিটারেরও বেশি। এখানে চীনের অনেক চলচ্চিত্রের শ্যুটিং হয়েছে এবং এখনো হয়।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |