|
0821lvyou
|
আলিম. আসলে সিশা দ্বীপ সাধারণ পর্যটকদের জন্য এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে খোলা হয়নি। উত্সাহী ও সাহসী পর্যটকরা যথেষ্ট কষ্ট সহ্য করে সেখানে বেড়াতে যান। সে এক কষ্টের সফর বটে। সানইয়া শহরের ইউলিন বন্দর বা ওয়েনছাং জেলার ছিংলান বন্দর থেকে জাহাজে দীর্ঘ দশ ঘন্টার পথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছাতে হয় সিশা দ্বীপে। বন্দর থেকে দ্বীপরটির দূরত্ব প্রায় ৩৩০ নটিক্যাল মাইল। যদিও দ্বীপ এলাকায় সামুদ্রিক দৃশ্য দারুণ সুন্দর, তবে উপকূলীয় এলাকায় অনেক রিফ থাকায় নৌকায় করে সেখানে ঘুরে বেড়ানো খানিকটা বিপজ্জনক।
সুবর্ণা. আচ্ছা, তাহলে আজকের ভ্রমণ শুরু করার আগে প্রথমে একটি গান শুনি। গানের নাম, 'সিশা, আমার প্রিয় জন্মস্থান'।
আলিম. সিশা দ্বীপে বেড়াতে গেলে আপনাকে অন্তত এক সপ্তাহ সময় হাতে নিয়ে যেতে হবে। যদি ভেবে থাকেন দ্বীপে পৌঁছেই কোনো রেস্টুরেন্ট ভরপেট খেয়ে নেবেন, তাহলে ভুল করবেন। দ্বীপে কোনোকিছু পাবেন না। আপনাকে সঙ্গে করে প্রয়োজনীয় সবকিছু নিয়ে যেতে হবে। দশ ঘন্টার জাহাজ-ভ্রমণে আপনি যাতে অসুস্থ না-হয়ে পড়েন, তার জন্য ভ্রমণের আগেই কিছু ওষুধ খেতে হতে পারে এবং কিছু ওষুধ সঙ্গে করে নিতে হবে। দশ ঘন্টার জার্নিতে আরাম করে শুয়ে থাকার কোনো ব্যবস্থা জাহাজে পাবেন না। এ-জন্য ভ্রমণ আরামদায়ক হবে না। তবে, এই ভ্রমণে উত্তেজনার অভাব হবে না, এ-কথা নিশ্চিতভাবেই বলতে পারি।
সুবর্ণা. জাহাজে দশ ঘন্টার পথ পাড়ি দেওয়ার পর, আপনার চোখের সামনে ভেসে উঠবে স্বর্গের মতো সুন্দর একটি দ্বীপ, সিশা দ্বীপ। দ্বীপের কাছাকাছি পৌঁছে মাছ ধরার যন্ত্রপাতি সঙ্গে থাকলে, আপনি মাছ ধরতে পারেন এবং জাপানি কায়দায় ওয়াসাবি ও সয়াসস মিশিয়ে মজা করে খেতে পারেন। দেখতে দেখতে আপনাকে নিয়ে জাহাজ পৌঁছে যাবে দ্বীপের সর্বউত্তরের রিফে। সেখানে ২৩ মিটার উঁচু একটি টাওয়ার আছে, যা দূর থেকে দেখা যায়। টাওয়ার দেখা বোঝা যাবে যে, সেখানে রিফ আছে।
আলিম. আপনার বর্ণনা শুনতে শুনতে মনে হচ্ছিল আমি জাহাজে চড়ে সিশা দ্বীপে পৌঁছে গেছি। তো, এই মুহূর্তে আমার মনে একটি পুরনো গানের সুর বাজছে। গানটির নাম 'সেইলিং'। চলুননা গানটি শোনা যাক।
সুবর্ণা. এ গানটি আমারও বেশ ভালো লাগে। চমত্কার সুর আর বাণী। সে যাক, চলুন আবার আমারা ভ্রমণে বের হই। উত্তর রিফ অতিক্রম করে সিশা দ্বীপের প্রথম দর্শনীয় স্থান কানছুয়ান-এ পৌঁছে যাবেন আপনারা। এটি সমুদ্রে ডাইভিংয়ের চমত্কার স্থান। কারণ, এখানকার পানি অতি পরিস্কার এবং এখানে আছে প্রবাল, শেল ও বহুবর্ণ মাছ। ডাইভিং-এর সময় আপনি এসব বহুবর্ণ মাছের সঙ্গে সাঁতার কাটতে পারেন। ডাইভিং শেষে এ-অঞ্চলের একমাত্র কুয়ার মিষ্টি পানিতে গা ধুয়ে নিতে পারেন। কুয়ার পানিতে গোসল করতে বেশ মজা লাগে।
আলিম. কানছুয়ান দ্বীপে মাত্র কয়েক জন জেলে বাস করে। প্রতি বছরের মত্স্য মৌসুমে তারা এ দ্বীপে এসে মাছ শিকার করে এবং মাছগুলো বাসায় নিয়ে যায়। এখানে কোনো মোবাইল বা টেলিভিশনের সংকেত নেই। বাইরের দুনিয়ার সাথে যোগাযোগের মাধ্যম হচ্ছে রেডিও। এখানকার ঘরবাড়িগুলোও অস্থায়ীভাবে তৈরী হয়। দ্বীপটিকে অনেকে মালদ্বীপের সাথে তুলনা করেন। আপনারা অবশ্যই এটি খুব পছন্দ করবেন।
সুবর্ণা. কানছুয়ান দ্বীপ থেকে জাহাজে করে দক্ষিণ দিকে প্রায় ৫ নটিক্যাল মাইল দূরে লিংইয়াং রিফ-এ যেতে পারেন। রিফটির আয়তন বেশি না। এখানে পুরো রিফ ঘুরে দেখতে ব্যয় হবে মাত্র দশ মিনিট। ছোট্ট এই রিফের সৈকতে বালি নেই, আছে প্রবাল। রিফটিতে দশ-বারোটি জেলে পরিবার বাস করে। এদের তৈরী ঘরবাড়িতেও আছে প্রবালের ব্যাপক ব্যবহার। টাইফুনের কবল থেকে এগুলোকে রক্ষা করতে ছাদে ব্যবহার করা হয় অনেক প্রবাল-পাথর। দূর থেকে দেখলে ঘরগুলোকে ছোট ছোট দুর্গের মতো মনে হয়।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |