|
0605lvyou
|
আলিম. ১৮৯৯ সালে ফরাসী কূটনীতিবিদ অগিস্তা ফ্রাঁসোয়া তাঁর সাতটি ক্যামেরা নিয়ে ইউয়ুননান প্রদেশের খুনমিং শহরে এসেছিলেন। তিনি শহরটিতে ৫ বছর বসবাস করেন এবং ক্যামেরায় ধরে রাখেন ছোট্ট এই শহরের বিভিন্ন দৃশ্যের ছবি। তারপর ১০০ বছরেরও বেশি সময় পার হয়ে গেছে; খুনমিং শহরের সেই প্রাচীন দৃশ্য আর দেখা যায় না। এখন খুনমিং পরিণত হয়েছে আধুনিক শহরে। তবে, খুনমিংয়ের আঞ্চলিক ভাষা, খাবার ও স্থানীয় আবহাওয়া আগের মতোই রয়ে গেছে---সুন্দর আর আকর্ষণীয়। খুনমিং শহর চীনের ইউয়ুনকুই মালভূমিতে অবস্থিত বিধায় এখানে দিন অনেক বড়। এখানে সূর্য ডোবে রাত আটটায়। শহরটিতে সবসময় একটি শান্ত ও সুখী সুখী ভাব বিরাজ করে। শহরটি পেইচিং, শাংহাই বা কুয়াংচৌ-এর বড় শহরের মতো নয়। খুনমিং সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর মানুষ অধ্যুষিত একটি ঐতিহাসিক শহর।
সুবর্ণা. তাহলে এ শহরের আরও কিছু তথ্য জানার আগে আমরা একটি সুন্দর গান শুনবো। গানের নাম 'বহুবর্ণ মেঘের দক্ষিণ দিক'। চীনা ভাষায় ইউয়ুননানের অর্থ হল 'বহুবর্ণ মেঘের দক্ষিণ দিক'। চলুন একসঙ্গে এ সুন্দর গানটি শুনি।
আলিম. সুন্দর গানটি শোনার পর ইউয়ুননান বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু তথ্য শ্রোতাদের জানাতে চাই। ইউয়ুননান বিশ্ববিদ্যালয় খুনমিং শহরের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম। বাংলাদেশের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়টির ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে। কারণ, এ-বিশ্ববিদ্যালয়টি বাংলাদেশের নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যায়ের সাথে সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের সম্পর্কে আবদ্ধ। ইউয়ুননান বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা ভাষার শিক্ষকেরা নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিডিউটের শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। তাদের মাধ্যমে অনেক বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রী চীনা ভাষা শিখেছেন এবং তারা বাংলাদেশ-চীন বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের দূত হিসেবে দু'দেশের সম্পর্কের উন্নয়নে অনেক অবদান রেখেছেন। এ ছাড়া, বর্তমানে বাংলাদেশের অনেক ব্যবসায়ী ও ছাত্রছাত্রী খুনমিং শহরে বসবাস করেন।
সুবর্ণা. ইউয়ুনান বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসটি দারুন সুন্দর। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনের অধিকাংশই গত শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকে নির্মিত হয়েছিল। ক্যাম্পাসে পুরনো অফিস ভবনের পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে মনে হবে গত শতাব্দীতে ফিরে গেছি। ক্যাম্পাসে আছে প্রাচীনকালের বৈশিষ্ট্যময় স্থাপত্য চিকোং ভবন। ছিং রাজবংশের সরকারী কর্তকর্তাদের নিয়োগ-পরীক্ষা এখানে আয়োজন করা হতো। তা ছাড়া, ফরাসি স্টাইলের স্থাপত্যও এখানে দেখা যায়। ১৯২২ সালে নির্মিত ইউয়ুননান বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ভবনটি এলাকার সবচে পুরনো স্থাপত্যগুলোর একটি।
আলিম. খুনমিংকে বলা যায় চির বসন্তের শহর। চারটি ঋতুতেই এখানে বসন্ত কাল বিরাজ করে। এ কারণে, শীতকালেও এখানকার গাছ ও ঘাস সবুজ থাকে। ইউয়ুননান বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আছে প্রচুর 'মেইডেনহেয়ার' গাছ। শরত্কালে যখন গাছের পাতা সবুজ থেকে সোনালী রঙয়ে পরিণত হয় এবং বিভিন্ন গাছের পাতা ছোট পাখার মতো গাছের শাখায় ঝুলে থাকে---তখন দারুণ এক সুন্দর দৃশ্যের অবতারণা হয়। এখানকার একটি বিখ্যাত রাস্তার নাম 'ওয়েনলিন রাস্তা'। প্রাচীনকালে ছিং রাজবংশের সরকারী নিয়োগ-পরীক্ষা অংশগ্রহণকারীরা এ-রাস্তার পাশে অবস্থিত আবাসিক হোটেলে রাত্রিযাপন করতো। এ-রাস্তায় অনেক চায়ের দোকান ও হোটেল গড়ে উঠেছিল সে-কারণেই। বর্তমানে এই রাস্তাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে পাব ও কফিশপ।
সুবর্ণা. আলিম ভাই, আপনি পাব ও কফি দোকানের কথা বলায় আমার মনে পড়ে গেল ইউয়ুননান প্রদেশের আরেকটি সুন্দর পর্যটন এলাকার কথা। এলাকাটির নাম 'লিচিয়াং'। নাসি জাতির লোকদের বাসস্থান এই এলাকাটি। এখানকার বাসভবনগুলো সংখ্যালঘু জাতির বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। পাথর দিয়ে তৈরি বাসভবনগুলো সুশৃঙ্খলভাবে গড়ে উঠেছে। দূর থেকে দেখতে দারুণ সুন্দর লাগে। এই লিচিয়াংকে নিয়ে একটি সুন্দর কগান আছে। চলুন শ্রোতাদের সঙ্গে নিয়ে আমরা গানটি শুনে নিই।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |