|
সুবর্ণা. সুন্দর গানটি শোনার পর এখন পেইচিং উদ্যানমেলার কিছু দর্শনীয় স্থানের সাথে শ্রোতাদের পরিচয় করিয়ে দিই। ইয়োংতিং প্যাগোডা এর মধ্যে অন্যতম। নয় তলা এই প্যাগোডার আয়তন প্রায় ৮ হাজার বর্গমিটার, উচ্চতা ৬৯.৭ মিটার। এর ভেতরে দুটি লিফ্ট স্থাপন করা হয়েছে হয়েছে। এটি পেইচিংয়ে নির্মিত প্রাচীন স্থাপত্যগুলোর মধ্যে সবচে উঁচু। চীনারা মনে করেন, ৯ হচ্ছে সবচে বড় অংক। চীনা ভাষায় এর উচ্চারণ হল 'চিউ'। এটা দীর্ঘস্থায়িত্বের প্রতিক। এ প্যাগোডার মাধ্যমে উদ্যানমেলার দীর্ঘস্থায়িত্ব কামনা করা হচ্ছে যেন। প্যাগোডার সর্বোচ্চ তলায় উঠলে গোটা মেলাপ্রাঙ্গন একসাথে দেখা যায়।
আলিম. বন্ধুরা, ২০১৩ সালের ৫ মে পেইচিংয়ের ১৪ নম্বর সাবওয়ে বা পাতাল রেললাইন আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়। এ-লাইনের পাতালরেলে চড়ে আপনারা সরাসরি উদ্যানমেলায় পৌঁছাতে পারেন। তা ছাড়া, প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বিশেষ পর্যটন বাসও শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্যানমেলা পর্যন্ত লোক পরিবহণ করে। সময় এবং সুযোগ হলে আপনারা কিন্তু এই অসাধারণ সুন্দর মেলা দেখতে আসতে ভুলবেন না।
সুবর্ণা. আসলে প্রথম দিকে এই উদ্যানমেলা চীনের তালিয়ান শহরে আয়োজন করা হয়েছিল। তখন মেলা অতো বড় ছিল না। মেলার প্রদর্শনীও ছিল ছোট আকারের। তারপর উদ্যানমেলা আয়োজন করা হয় চীনের নানচিং শহরে। তখন মেলার প্রতিপাদ্য ছিল মানুষ ও প্রকৃতি। তৃতীয় পর্যায়ের উদ্যানমেলা ২০০০ সালে শাংহাই শহরে আয়োজিত হয়। সে-মেলার স্থায়ীত্বকাল ছিল মাত্র এক মাস। মেলার প্রতিপাদ্য ছিল: মানুষ, শহর ও প্রকৃতি। তখনকার উদ্যানমেলায় চীনের বিভিন্ন অঞ্চলের উদ্ভিদের প্রদর্শনী হয়, যা পর্যটকদের আকর্ষণ করেছিল।
আলিম. তারপর চীনের কুয়াংচৌ শহর, শেনচেন শহর, সিয়ামেন শহর, চিনান শহর এবং ছোংছিং শহরে উদ্যানমেলার আয়োজন করা হয়। এসময় মেলার সময় একমাস থেকে বাড়িয়ে করা ছয় মাস। দেশ-বিদেশের ব্যবসায়ীরা এ মেলার মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে আদান-প্রদান ও যোগাযোগ করেছেন এব পাশাপাশি পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়টিও ব্যাপক প্রচার পেয়েছে।
আলিম. সময় দ্রুত চলে যায়। বন্ধুরা, আপনার বুঝতেই পারছেন, পেইচিং উদ্যানমেলা সম্পর্কে মাত্র একটি অনুষ্ঠানে সবকিছু বলে শেষ করা অসম্ভব। কিন্তু তারপরও আশা করছি আপনারা এ-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ মেলা সম্পর্কে ভালো ধারণা পেয়েছেন। সময় ও সুযোগ পেলে আপনারা এ মেলা পরিদর্শনে আসবেন আশা করি।
বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান শেষ করার আগে আপনাদের লেখা চিঠিপত্র থেকে বাছাই করা কয়েকটি চিঠি পড়ে শোনাতে চাই। প্রথম চিঠি লিখেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুপি গ্রামের মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান। তিনি লিখেছেন:
গত ১০ মার্চের "চলুন বেড়িয়ে আসি" অনুষ্ঠানে ছেংতুয়ের ছিংছেংশান পাহাড় ও তুচিয়াংইয়ান জলসেচ প্রকল্প সম্পর্কে জেনে ভালো লাগলো। ছিংছেংশান পাহাড় চীনের তাও ধর্মের উত্পত্তিস্থলগুলোর অন্যতম। পর্যটকরা এ পাহাড়ে বেড়াতে আসলে, পাহাড়ের রাস্তায় তাও ধর্মের সন্ন্যাসীদের দেখা যাবে। পাহাড়ের মধ্যে অনেক মন্দির আছে। সিছুয়ান চিকেন বার্গার' ভীষণ ঝাল এবং মজা। ছেংতু শহরের খাবার ও তুচিয়াংইয়ান জলসেচ প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ ।
সুবর্ণা.পরের চিঠি লিখেছেন বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার এনামুল হক। তিনি ছিখেছেন: 'চলুন বেড়িয়ে আসি' অনুষ্ঠানে সিচুয়ান অপেরার আশ্চর্য্য কৌশল মুখোশ পরিবর্তন করা সম্পর্কে জানলাম । এ ছাড়া, এ অনুষ্ঠান থেকে বিনকার্ড ডিশ রান্না করার পদ্ধতি সম্পর্কে ও জানতে পারলাম । কিছু অজানা বিষয় সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দেবার জন্য cri কে ধন্যবাদ জানাই। এই অনুষ্ঠানে শ্রোতাদের চিঠিপত্র পড়ে শোনানোর ব্যবস্থা করলে ভাল হয়। আশা রাখি শ্রোতাদের লিখিত গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন চিঠি পড়ে শোনানোর ব্যবস্থা করবেন।
আলিম. আজকের শেষ চিঠি লিখেছেন বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার ডাক্তার মোহাম্মদ বাবলর রশিদ। তিনি লিখেছেন: বিগত ৬ই মার্চের "চলুন বেড়িয়ে আসি" অনুষ্ঠান থেকে আমরা পেইচিংয়ের উষ্ণ প্রস্রবণ সম্পর্কে জানতে পেরেছি। এসব উষ্ণ প্রস্রবণ প্রাচীনকাল থেকেই বয়ে চলেছে । লোকেরা সেখানে বসে সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগ করার পাশাপাশি উষ্ণ প্রস্রবণে গা ভেজানোর আনন্দ নেয় । আরো জানতে পারলাম যে এখানে ২১ হাজার বর্গমিটার আয়তনের উষ্ণ প্রস্রবণ বাগানের মধ্যে ৭২টি বিভিন্ন ধরনের পুল আছে। উষ্ণ প্রস্রবণের মধ্যে ক্যালসিয়াম, লৌহ, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়ামসহ বিভিন্ন খনিজ উপাদান রয়েছে, যা শরীরের মাংসপেশী, অস্থিসন্ধির জন্য খুবই উপকারী; উষ্ণ প্রস্রবণে বসে শরীরের ক্লান্তি দূর করা যায় . উষ্ণ প্রস্রবণের পানির মধ্যে বিদ্যমান বিভিন্ন খনিজ উপাদান মানুষের চামড়ার জন্যও উপকারী। এখানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের কেউ কেউ সপ্তাহে কমপক্ষে দুই থেকে তিনবার উষ্ণ প্রস্রবণে গা ভেজাতে আসেন।
সুবর্ণা. বন্ধুরা, আপনার যারা নিয়মিত চিঠি লিখে আমাদের উত্সাহিত করছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ। অনুষ্ঠানে সময় ফুরিয়ে এলো। শেষ করার আগে আমরা এ সপ্তাহের ক্যুইজ প্রতিযোগিতার প্রশ্ন করবো। প্রশ্নটি হচ্ছে: পেইচিং উদ্যানমেলার ইয়োংতিং প্যাগোডার উচ্চতা কত মিটার?
আলিম. প্রশ্নটি আবার বলি: পেইচিং উদ্যানমেলার ইয়োংতিং প্যাগোডার উচ্চতা কত মিটার?
সুবর্ণা. আমরা আপনাদের চিঠির অপেক্ষায় রইলাম। আমাদের যোগাযোগ ঠিকানা ben@cri.com.cn
আলিম. সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন। আগামী সপ্তাহে আবার কথা হবে। যাইচিয়ান। (সুবর্ণা/আলিম)
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |