Web bengali.cri.cn   
কুইচৌ প্রদেশের চাওশিং জেলার তুং জাতির গ্রামে 'চলুন বেড়িয়ে আসি'
  2013-05-15 16:56:22  cri
বন্ধুরা, চীন একটি বড় দেশ এবং এখানে সংখ্যালঘু জাতির সংখ্যাও অনেক বেশি। বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অনেক সংখ্যালঘু জাতির লোক বসবাস করে। তাদের জীবনযাপনের পদ্ধতি হান জাতির লোকদের চেয়ে অনেক দিক থেকেই আলাদা। নগরায়ণের এই যুগে চীনও ব্যতিক্রম নয়। এদেশেও শহরায়ণ বা নগরায়ণ হচ্ছে। কিন্তু দেশের বহু অঞ্চলে বহু সংখ্যালঘু জাতি তাদের ঐতিহ্যবাহী জীবনযাপন পদ্ধতি বজায় রেখেছে। কুইইয়াং শহরের চাওশিং জেলার তুং জাতির গ্রামগুলো সেগুলোর অন্যতম। আজকের অনুষ্ঠানে আমরা আপনাদের নিয়ে এ-গ্রামগুলোতে বেড়াতে যাবো এবং সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীগুলোর জীবন ও রীতিনীতি সম্পর্কে ধারণা নেয়ার চেষ্টা করবো।

আলিম. ২০১২ সালের শেষ দিকে তুং জাতির মানব-সংস্কৃতি সম্পদ জাদুঘরের পরিচালক এবং ১৩ বছর বয়স্ক তুং জাতির মেয়ে উ লিয়ান ইউয়ুন একসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ১৫তম জাতীয় শিল্পকলা ও মানব-সংস্কৃতিসম্পদ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন এবং বিশ্বের মঞ্চে তুং জাতির লোকদের জীবনযাপন প্রণালী দ্বিতীয়বারের মতো তুলে ধরেছেন। সেই থেকে নির্জন লিপিং জেলার তুং জাতির গ্রামগুলো বিখ্যাত হয়ে ওঠে। বর্তমানে স্থানীয় অঞ্চলের তুং জাতির এবং অন্যান্য জাতির ঐতিহ্যিক জীবনযাপন পদ্ধতির টেকসই সংরক্ষণ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও পণ্ডিতদের প্রধান কাজে পরিণত হয়েছে।

সুবর্ণা. আমি কখনও কুইচৌ প্রদেশে যাইনি। প্রদেশটি দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে অবস্থিত ইউয়ুননান প্রদেশসংলগ্ন সংখ্যালঘু জাতির একটি আবাসস্থল। স্থানীয় অঞ্চলের লোকেরা ঝাল ও টক খাবার খেতে খুবই পছন্দ করে এবং সুন্দর নাচ ও গান করতে পারে। আমরা তুং জাতির গ্রামে বেড়াতে যাবো। তবে, যাবার আগে আমরা তুং জাতির একটি গান শুনবো।

আলিম. আচ্ছা, শ্রোতাবন্ধুরা, সুন্দর গানটি শোনার পর চলুন বেড়িয়ে আসি তুং জাতির গ্রামে। কুইচৌ প্রদেশের রাজধানী কুইইয়াং শহর থেকে গাড়ি চালিয়ে পাহাড়ের ভেতরে অবস্থিত তুং জাতির গ্রামে পৌঁছাতে গোটা একটা দিন লেগে যাবে। ছিংশুই নদীর শাখা এ-গ্রামগুলোর ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে। পাঁচটি ছোট গ্রাম নিয়ে গঠিত তুং জাতির দুটি এলাকার নাম 'তিমেন'। তুং জাতির ভাষায় 'তিমেন' অর্থ অব্যাহতভাবে ঝর্ণা বয়ে চলার স্থান। তুং জাতির ৯০ শতাংশেরও বেশি লোকের পারিবারিক নাম 'উ'। প্রাচীনকালের মিং রাজবংশের শেষ আমলে এবং ছিং রাজবংশের শুরুতে 'উ' বংশের লোকেরা এখানে এসে বসবাস শুরু করেছিল। এ-জাতির ইতিহাস সাত শত বছরের পুরাতন।

সুবর্ণা. স্থানীয় অঞ্চলের সংস্কৃতিসম্পদ যাদুঘরটি অবস্থিত গ্রামের কাছে একটি দারুণ সুন্দর সেতুর কাছে। সাধারণত কাঠ দিয়ে পাহাড় ও কৃষিক্ষেতের পাশে তৈরি করা হয় তুং জাতির মাচান ঘর। এসব ঘরের সামনে দিয়ে ছোট নদী আকাঁবাকাঁ হয়ে বয়ে যায় বহুদূরে। নদীর অপর পার্শ্বে সবুজ রঙয়ের বাঁশঝাড়। বাঁশ বনের ভেতরেও দেখা যাবে কিছু মাচান ঘর। মাঝে মাঝে দেখা যাবে বাঁশের তৈরি ঝুড়ি নিয়ে গরুর পালের সঙ্গে হেটে যাচ্ছে কৃষক। দৃশ্যটি খুবই সুন্দর। তুং জাতির সেতু নির্মাণের প্রযুক্তি অবাক করার মতো। কারণ, একটি লম্বা সেতু নির্মাণ করার সময়ও তারা কোনো পেরেক ব্যবহার করে না। কুইচৌ প্রদেশের অন্যান্য পর্যটন গ্রামের চেয়ে এখানকার রীতিনীতি আরও ভালভাবে সংরক্ষিত আছে। এখানকার স্থানীয় লোকেরা ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিতে নিজেদের জীবন কাটায়। মাটিতে কৃষিকাজ শেষে এখানকার কৃষকদের বাসায় ফিরে যাওয়ার দৃশ্যটি প্রাচীনকালের মতো। আধুনিক জীবনযাপন পদ্ধতির সাথে তাদের জীবনযাপনের রয়েছে বিরাট পার্থক্য।

আলিম. অনেক পর্যটক এখানে আসার পর মনের শান্তি খুঁজে পান। যেমন, চীনের তাইওয়ান প্রদেশের লেখক ও অনুবাদক হু ইন মেং এ-গ্রামে পরিদর্শন করার পর লিখেছেন: "তুং জাতির তিমেন গ্রাম স্বর্গের মতো। এখানকার মানুষ, প্রকৃতি, জীবনযাপন পদ্ধতি ও বিভিন্ন উপকরণ--সবই পরিস্কার, শান্ত ও আরামদায়ক। একবার এখানে এলে কেউ তা ভুলতে পারবে না।" আমি একদিন এই গ্রামে বেড়াতে যাবো বলে আশা করি। সেখানে কাটাবো অন্তত একটি রাত; তুং জাতির গ্রামের রাত কেমন হবে তা দেখার খুব ইচ্ছা আমা। তবে সেতো ভবিষ্যতের কথা। বর্তমানে শুনে নিই একটি গান। গানের নামও 'তুং জাতির গ্রামের রাত'। চলুন একসঙ্গে গানটি শুনি।


1 2
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040