Web bengali.cri.cn   
ঘুড়ির শহর ওয়েইফাংতে: চলুন বেড়িয়ে আসি
  2013-04-24 15:48:45  cri

আলিম. পেইচিংয়ে যখন আমি বিভিন্ন পার্কে বেড়াতে যাই, তখন রাতের সময় লিড-বাতিসহ ঘুড়ি দেখেছি। নানা রঙয়ের বাতি দিয়ে সাজিয়ে রাখা এসব ঘুড়ি রাতের বেলায় দারুণ সুন্দর লাগে। বাতিসহ এসব ঘুড়ি রাতের বেলায়ও আকাশে ওড়ানো যায়। বিষয়টা বেশ মজার।

সুবর্ণা. আচ্ছা, ঘুড়ি নিয়ে কিছু আলোচনা করার পর এখন গানের পালা। গানের নাম 'ঘুড়ির গান'। এটি ইংরেজী ভাষায় গাওয়া একটি সুন্দর ও দুঃখের গান। গানের গায়িকা থমাস রোজি। এ গানের সুর আমার খুব ভালো লাগে। চলুন একসঙ্গে গানটি শুনি।

আলিম. আচ্ছা, সুন্দর গানটি শোনার পর এখন ওয়েইফাংয়ের কয়েকটি পর্যটন স্থানের তথ্য জানিয়ে দিচ্ছি। শিহুইউয়ান এর মধ্যে অন্যতম। এটি মিং রাজবংশের চিয়াচিং আমলে একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বাসস্থান ছিল। ছিং রাজবংশের কুয়াংস্যু আমলে অর্থাত্ ১৮৮৫ সালে ওয়েইফাং শহরের সবচে ধনী ব্যক্তি তিং শান বাও বাড়িটি কিনে নিয়েছিলেন। বাড়িটি কালো ইট ও ধূসর টালি দিয়ে তৈরী। ভেতরের কাঠামো ইট ও কাঠ দিয়ে গঠিত। বাড়িটির মোট আয়তন প্রায় ২০০০ বর্গমিটার। এটি উত্তর চীনের বৈশিষ্ট্যময় প্রাচীন স্থাপত্যগুলোর অন্যতম।

সুবর্ণা. আরেকটি মজার পর্যটন স্থানে গত বছর আমি গিয়েছিলাম। সেটি হচ্ছে ওয়েইফাং শহরের উপকন্ঠ এলাকার হানথিংয়ে অবস্থিত ইয়াংচিয়াপু পার্ক। এখানে হাতে তৈরী ঘুড়ি পাওয়া যায়। পার্কের ভেতরে আপনারা স্থানীয় লোকদের দ্বারা তৈরী ঘুড়ি দেখতে পাবেন। পর্যটকদের দেখার জন্য পার্কের মধ্যে কয়েকটি স্থানে হস্তশিল্পীরা হাত দিয়ে ঘুড়ির বাঁশের কাঠামো তৈরী করেন এবং কাগজ দিয়ে প্রজাপতি ও পাখিসহ বিভিন্ন ধরনের ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ির ডিজাইন করেন। গোটা বিষয়টা বেশ মজার ও আনন্দদায়ক।

আলিম. আচ্ছা, ঘুড়ি সম্পর্কে অনেক গল্প প্রচলিত আছে। শুনেছি প্রাচীনকালে লোকেরা পরিবারের পূর্বপুরুষ বা নিহত আত্মীয়স্বজনকে স্মরণ করার জন্য বছরের এপ্রিল মাসে আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর মাধ্যমে নিহতদের উদ্দেশ্যে খবর পাঠাতো।

সুবর্ণা. হ্যাঁ, ঘুড়ির চীনা নাম 'ইউয়ান'। অধিকাংশ লোক মনে করে যে, ঘুড়ির প্রচলন চীন থেকে হয়েছে এবং তারপর তা বিশ্বেও ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছে। আসলে প্রাচীনকালে চীনে ঘুড়ি কাঠ দিয়ে তৈরী করা হত। প্রায় ২৫০০ বছর আগে, প্রাচীনকালের ছুনছিউ আমলে, একজন দার্শনিক মুওছু তিন বছর সময় ধরে কাঠ দিয়ে একটি ঘুড়ি তৈরী করেছিলেন, তা হল বিশ্বের সবচে পুরনো ঘুড়ি। তুংহান আমলে চীনারা কাগজ আবিষ্কার করার পর, ঘুড়ি বর্তমানের আকার ধারণ করে; অর্থাত তখন থেকেই ঘুড়িতে কাগজ ব্যবহার শুরু হয়। জানা গেছে, প্রাচীনকালে ঘুড়ি সামরিক যন্ত্র হিসেবেও ব্যবহৃত হত। তখন ঘুড়ি দিয়ে বাতাসের দিক ও মাত্রা মাপা হত এবং তথ্য সরবরাহ করা হত।

আলিম. শুনেছি ত্রয়োদশ শতাব্দীতে ইটালির বিখ্যাত পর্যটক মার্কো পোলো চীন থেকে ইউরোপে ঘুড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন। তখন থেকেই পশ্চিমা দেশগুলোতেও ঘুড়ির প্রচলন শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্রের আদিবাসীরা মনে করতো যে, বজ্রপাত ও বিদ্যুত্ হল দেবতাদের রাগের প্রতীক। তবে মার্কিন বিজ্ঞানী ফ্রাঙ্কলিন ঘুড়ির মাধ্যমে প্রমাণ করেন যে, বজ্রপাত ও বিদ্যুত্ হল প্রাকৃতিক ব্যাপার। (সুবর্ণা/আলিম)


1 2
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040