Web bengali.cri.cn   
থিয়ানচিন শহরের পুরনো স্থাপত্য পরিদর্শন
  2013-03-27 14:38:55  cri
আলিম: সুবর্ণা, আমি চীনের রাজধানী পেইচিংয়ের বাইরে যাওয়ার সুযোগ এখনো পাইনি। তবে, এরমধ্যে পেইচিংয়ে অবস্থিত চীনের সম্রাটদের প্রাসাদ এলাকা 'ফরবিডেন সিটি' দেখেছি। বিশাল এলাকাজুড়ে সেই প্রাসাদ এলাকা। আট হাজারেরও বেশি ছোটবড় ঘর আছে সেখানে। সে এক এলাহী কারবার। এরপর, মাত্র সেদিন আমার সৌভাগ্য হয়েছে চীনের মহাপ্রাচীর দেখার। নিজের চোখে দেখে এসেছি হাজার হাজার কিলোমিটার লম্বা চীনের প্রাচীরের একাংশ। আশ্চর্য হয়েছি এই ভেবে যে, আড়াই-তিন হাজার বছর আগে কী করে অমন প্রাচীর নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছিল! আমরা প্রাচীরে উঠতে ক্যাবল কারের আশ্রয় নিয়েছিলাম। সেটিও এক মজার অভিজ্ঞতা। তবে, প্রাচীরে উঠতে গিয়ে আমার মনটা বিষন্নতায় ছেয়ে গিয়েছিল একটা কথা ভেবে। এই প্রাচীর নির্মাণ করতে গিয়ে না-জানি কতো লক্ষ শ্রমিককে প্রাণ দিতে হয়েছে।

সুবর্ণা. আপনি ঠিকই বলেছেন, লক্ষ-কোটি শ্রমিকের রক্ত আর ঘামের বিনিময়ে তৈরী হয়েছে এই মহাপ্রাচীর। আচ্ছা, সময় পেলে আপনি আরও বেশি জায়গায় ভ্রমণ করবেন বলে আশা করি। চীনের দেখার মতো অসংখ্য জায়গা আছে। আপনি খুবই মজা পাবেন। তবে, আজকের অনুষ্ঠানে আমরা শ্রোতাবন্ধুদের জানাবো পেইচিংয়ে কাছে একটি ঐতিহাসিক শহরের কিছু দর্শনীয় স্থানের তথ্য। শহরের নাম থিয়ানচিন। আপনি ট্রেনে চেপে মাত্র ৪০ মিনিটে পেইচিং থেকে থিয়ানচিনে পৌঁছাতে পারেন। আমি কয়েকবার এ-শহরে বেড়াতে গেছি, কারণ পেইচিংয়ের বেশ কাছের একটি শহর এটি এবং যাতায়াত ব্যবস্থাও খুবই ভালো। প্রতি ১৫ মিনিট পর পর পেইচিং থেকে থিয়ানচিনের উদ্দেশে একটি ট্রেন ছেড়ে যায়।

আলিম. আমিও সুযোগ পেলে সেখানে যাবো। আচ্ছা, শহরের কোন কোন দৃশ্য আপনার সবচে ভালো লেগেছে?

সুবর্ণা. আসলে থিয়ানচিন পেইচিংয়ের মতোই একটি পুরনো ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক শহর। এখানকার রীতিনীতি ও সংস্কৃতি অনেকটা পেইচিংয়ের মতোই, তবে থিয়ানচিনের সংস্কৃতি পেইচিংয়ের তুলনায় অধিক ঐতিহ্যনির্ভর। থিয়ানচিনের কেন্দ্রীয় এলাকার রাস্তাগুলোর নামকরণ করা হয়েছে চীনের বিভিন্ন অঞ্চলের শহর বা জেলার নাম অনুসারে।

আলিম. আমি শুনেছি সেখানে পাশ্চাত্য স্টাইলের অনেক পুরনো স্থাপত্য রয়েছে। ১৮৪০ সালের আফিম যুদ্ধের পর, পাশ্চাত্যের সৈন্য এবং কূটনৈতিক কর্মকর্তারা চীনের বিভিন্ন শহরে প্রবেশ করেছিল। ১৮৬০ সালের ডিসেম্বর মাসে থিয়ানচিন শহরের উদাদাও এলাকা বৃটেনের হস্তগত হয় এবং তখন থেকে বিদেশিরা এ-অঞ্চলে পাশ্চাত্য স্থাপত্যের স্টাইল অনুযায়ী নানা ধরনের ভবন নির্মাণ করে। স্বাভাবিকভাবেই এসব স্থাপত্যে ইউরোপীয় স্থাপত্যের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেখা যায়।

সুবর্ণা. হ্যাঁ, যখন আমি উদাদাওতে বেড়াতে যাই, এসব পাশ্চাত্য স্টাইলের স্থাপত্য আমার ভালো লেগেছে। এসব স্থাপত্য ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সেখানে। বিভিন্ন ডিজাইনের ইউরোপিয় স্থাপত্যের এই শহরের পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাস্তায় হাঁটার সময় ইউরোপের রাস্তায় হাঁটার অনুভূতি সৃষ্টি হয় মনে। এখানকার স্থাপত্যগুলোর মধ্যে সবচে বিখ্যাত হল সিয়াও বাই লৌ অর্থাত্ ছোট সাদা ভবন। সেটি পুরনো চীনের থিয়ানচিনের সবচে সমৃদ্ধ ব্যবসা এলাকা। যদিও বর্তমানে ভবনের সামনের দিকটি আধুনিক শহরের মতো, তবে ভবনের পেছনের ছোট অলিগলিতে দাঁড়িয়ে আপনি প্রাচীনকালের থিয়ানচিনকে অনুভব করতে পারবেন। পুরনো ইট, দেয়াল ও পুরনো গাছের পাতা আপনাকে নিয়ে যাবে প্রাচীণ থিয়ানচিনে।

আলিম. সুবর্ণা, আপনি খুবই চমত্কার করে বর্ণনা দিলেন। এলাকাটি দেখার আগ্রহ আমার আরো বেড়ে গেল। আপনার কাছ থেকে থিয়ানচিন সম্পর্কে আরো তথ্য জানবো। তবে, তার আগে শ্রোতাবন্ধুদের একটি গান শোনাতে চাই। গানের নাম 'আমি থিয়ানচিনের বাসিন্দা'।


1 2 3
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040