|
আলিম: তাই নাকি? সিয়ামেন আমি কখনও যাইনি, শুনেছি সেটি একটি দারুণ সুন্দর উপকূলীয় শহর, নীল আকাশ, সাদা মেঘ ও নারিকেল গাছ আছে সেখানে; সব মিলিয়ে সুন্দর রোম্যান্টিক একটি পরিবেশ। আমি কী ঠিক শুনেছি, সুবর্ণা?
সুবর্ণা. হ্যাঁ, আপনি ঠিকই শুনেছেন। সেখানকার লোকদের জীবন সহজ-সরল ও আরামদায়ক। আমি রাস্তায় অনেক লোককে নিজেদের বাসার সামনে বসে বন্ধুদের সঙ্গে বসে 'কংফু চা' পান করতে দেখেছি। দৃশ্যটি আমার খুব ভালো লেগেছে। তাদের দেখলে বেশ শান্ত ও সুখী মনে হয়। আজকের অনুষ্ঠানে আমরা সিয়ামেন শহরের অতি জনপ্রিয় কংফু চা সম্পর্কে আলোচনা করবো। বন্ধুরা, কংফু চা এখন ফুচিয়ানের সীমানা পেড়িয়ে থেকে গোটা চীনেই পরিচিতি লাভ করেছে।
আলিম. আচ্ছা, আমি শুনেছি এবার আপনি সিয়ামেন শহরের একটি চা দোকানের মালিকের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং উনি আপনাদের জন্য কংফু চায়ের অনেক তথ্য জানিয়েছেন, তাই না?
সুবর্ণা. হ্যাঁ, গত ১০ বছর ধরে ম্যাডাম ছেন সিয়ামেন শহরের শাংলি এলাকায় চা দোকান চালাচ্ছেন। তাঁর জন্মস্থান ফুচিয়ান প্রদেশের আনশি জেলায়। আনসি জেলায় তাদের নিজস্ব চা বাগান আছে; টাটকা চায়ের পাতা চা গাছ থেকে তোলার পর সিয়ামেন শহরের চা দোকানে পাঠানো হয়। তাদের চায়ের গুণগত মান ভাল এবং দামেও তুলনামূলকভাবে সস্তা। তাই এই চা চীনের অন্যান্য অঞ্চলেও জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আনশি জেলার থিয়েকুয়ানইন চা-এর জন্য বিখ্যাত। বর্তমানে কংফু চা খাওয়া ফুচিয়ান প্রদেশের লোকদের অভ্যেস ও রীতিনীতিতে পরিণত হয়েছে। সেখানকার লোকেরা স্বাস্থ্য-সচেতন এবং চা-পান সেখানে একটি স্বাস্থ্যকর পদ্ধতি হিসেবে স্বীকৃত। এ সম্পর্কে ম্যাডাম ছেন বলেছেন,
'আগে চা কীভাবে পান করতে হয় তা সবাই জানতো না। ২০০২ সালের পর লোকেরা ধীরে ধীরে চা খেতে শুরু করে। বর্তমানে এখানকার বিভিন্ন পরিবারের লোক প্রতিদিন চা খায়; এটা তাদের অভ্যেসে পরিণত হয়েছে। আমি প্রতিদিন দোকানে এসে এক কাপ চা পান করার পর কাজ শুরু করি; নইলে কেমন অসুস্থ অসুস্থ লাগে।'
আলিম. আচ্ছা, কংফু চায়ের আরও কিছু তথ্য জানার আগে এখন একটি সুন্দর গান প্রচার করি। গানের নাম 'চা পাহাড়ের প্রেমের গান'। গানের কথা মোটামুটি এমন: চা পাহাড়ে চা-পাতা তোলার কাজে ব্যস্ত মেয়েটি দারুণ সুন্দর; তার সুন্দর দুই হাত চা-পাতা তোলায় ব্যস্ত/ প্রজাপতি ও মৌমাছি তার আশেপাশে ঘুরে বেড়ায়/ অপর পাহাড়ের একটি ছেলে সুন্দর এই মেয়েটির প্রেমে পড়ে....
সুবর্ণা. সুন্দর গানটি শোনার পর এখন আশি থিয়েকুয়ানইন চায়ের আরও কিছু তথ্য জানাই। আনশি থিয়েকুয়ানইন'র উত্পাদিত এলাকা অন্তঃ আনশি ও বহিঃ আনশি—এই দুটি ভাগে বিভক্ত। অন্তঃআনশি হল পাহাড়ের মধ্যে সিড়ির ধাপের মত থাককাটা মাঠে চায়ের মাটি এবং সেখানকার আবহাওয়া একটু ঠাণ্ডা, এক বছরের মধ্যে মাত্র বসন্তকাল ও শরত্কালে চা উত্পাদিত হয়। তবে বহিঃআনশি'র আবহাওয়া একটু উষ্ণ, এক বছরের মধ্যে চার ঋতুতে চা উত্পাদিত হয়। চা পাতা তোলা ও তৈরীর প্রযুক্তি অতি জটিল, চায়ের পাতা শুকানো ও প্রক্রিয়াকরণসহ কমপক্ষে ৮টি ধাপ আছে। বাংলাদেশের কালো চা তৈরীর পদক্ষেপ জটিল কিনা?
আলিম. আপনি ঠিকই আন্দাজ করেছেন, সুবর্ণা। যে-কোনো চা-পাতা ও তোলা এবং সে-পাতাকে প্রক্রিয়াজত করে ব্যবহার উপযোগী করা একটি জটিল প্রক্রিয়া। বাংলাদেশের কালো চাও এই জটিল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই যায়।
সুবর্ণা. আনশি থিয়েকুয়ানইনের চা তৈরীর বিভিন্ন ধাপ সম্পর্কে ম্যাডাম ছেন বলেছেন, আমাদের কৃষকরা পাহাড়ে গিয়ে চা পাতা তুলে বাঁশের ঝুড়ির মধ্যে রেখে বাছাই করে এবং সুর্যালোকে কিছুক্ষণ রেখে চা পাতার ওপরে জমে থাকা পানি শুকিয়ে নেয়। তারপর পাতাগুলো একটু নরম করার জন্য ঝুড়ির মধ্যে নেড়ে-চেড়ে রাখা হয়।
আলিম. চা পাতা তোলার পর তৈরীর সময় ও প্রযুক্তিভেদে থিয়েকুয়ানইন চা দু'ধরনের হয়: হাল্কা সুগন্ধী ও বেশি সুগন্ধী চা। কেউ হালকা সুগন্ধী চা পছন্দ করেন, কেউ পছন্দ করেন বেশি সুগন্ধী চা। এ সম্পর্কে ম্যাডাম ছেন বলেছেন,
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |