|
ক. ছিয়ানতাওহু হ্রদে হাজারটিরও বেশি দ্বীপ আছে। এখন সেসব দ্বীপের খানিকটা পরিচয় দিচ্ছি। মেইফেংকুয়ান দ্বীপ ছিয়ানতাওহু দ্বীপপুঞ্জের সবচে উঁচু দ্বীপ। ছিয়ানতাওহু জেলা থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। মেইফেংকুয়ান দ্বীপ থেকে ছিয়ানতাওহু এলাকার ৩০০টিরও বেশি দ্বীপ দেখা যায়। যদি আপনারা মেইফেংকুয়ান দ্বীপের উঁচু স্থানে আরোহণ না করেন, তবে ছিয়ানতাওহু এলাকার মনোহর দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন না।
বানর ও ময়ুর দ্বীপেও যেতে পারেন। বানর দ্বীপে স্বাভাবিকভাবে অনেক বানরের বাস। ময়ুর দ্বীপে দেখতে পাবেন ময়ুরের পেখম তুলে নাচ।
খ. ছিয়ানতাওহু পর্যটন এলাকায় নানা ধরনের সাংস্কৃতিক উত্সব আয়োজন করা হয়। যেমন: প্রতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে আয়োজিত হয় 'সুন্দর নদী উত্সব'। তখন আন্তর্জাতিক প্রমোদতরী মেলা ও সাংস্কৃতিক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। পর্যটকরা সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন মজার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারেন। আরেকটি কথা, হাংচৌ শহরের ছুনআন জেলা হল চীনের সবজি উত্পাদনের মূল কেন্দ্রগুলোর একটি। এখানে অনেক চা-বাগানও আছে। ছিয়ানতাওহু হ্রদ এলাকায় উত্পাদিত ছিয়ানতাওইউইয়ে সবুজ চা বিশ্ব বিখ্যাত।
ক. প্রতি বছরের মার্চ ও এপ্রিল মাসে এখানে চা-তোলা উত্সব আয়োজিত হয়। পর্যটকরা এখানে বেড়াতে আসলে পরীক্ষামূলকভাবে বিনা পয়সায় চা বাগানে চা তুলতে পারেন এবং চা চাষীদের চা তৈরীর প্রক্রিয়া দেখতে পারেন। নিজের হাতে তোলা চা পাতা দিয়ে তৈরী চা খাওয়া একটি খুবই মজার ব্যাপার, তাই না?।
খ. এবার আমরা আরেকটি গান শুনবো। গানের নাম 'চা-বাগানের মেয়ে'। গানের কথা অনেকটা এমন: আকাশের মেঘ পাহাড়ের উপর দিয়ে দূরে চলে যায়/ নদীতেও তার ছায়া পড়তে পারে না/ যদি তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, কেন এত দ্রুত চলে যায়/ পাহাড়ের অপর দিকের গান শুনে.. চা বাগানের মেয়ে দারুণ সুন্দর/ মেঘও তাকে ভালবাসে/ মেয়েটিকে দেখে একটি ছেলে বাড়ি ফেরার কথা ভুলে গেছে/ সুর্য অস্ত যেয়ে চাঁদ আকাশে উঠেছে..
ক. সুন্দর গানটি শোনার পর এখন ছিয়ানতাওহু জেলার কিছু তথ্য জানাচ্ছি। ছিয়ানতাওহু জেলা হাংচৌ শহরের কাছে অবস্থিত একটি ছোট জেলা। হাংচৌ শহর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১৪০ কিলোমিটার। বর্তমানে জেলার লোকসংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার। সিনআনচিয়াং পানি ও বিদ্যুত্ কেন্দ্র নির্মাণের কারণে পুরনো ছুনআন জেলা ছিয়ানতাওহু হ্রদে বিলীন হয়েছে।
ছিয়ানতাওহু এলাকায় নানা ধরনের ঝরনা দেখা যায়। এগুলোর মধ্যে সবচে পরিচিতটির নাম 'নোংফুশানছুয়ান'; চীনা ভাষায় যার অর্থ 'কৃষক ঝরনা'। ছিয়ানতাওহু হ্রদের ৭০ মিটার গভীরে এর উত্পত্তিস্থল।
খ. এ ঝরনার পানি খেতে বেশ মিষ্টি। ছিয়ানতাওহু জেলায় নানা ধরনের খাবার উত্পাদিত হয়। যেমন, শুকনো মাছ। হ্রদের ৯৪ ধরনের মাছ রোদে শুকিয়ে শুটকি তৈরী করা হয়। তা ছাড়া, আরেকটি খাবার আমার বেশ পছন্দ। এর নাম 'চীনা ওয়ালনাট'। এখন শুধু ছুয়ানআন ও লিনআন জেলায় ওয়ালনাট পাওয়া যায়। এ ধরনের ওয়ালনাট বিভিন্ন ধরনের উপাদানের সঙ্গে রোস্ট করার পর খেতে একটু মিষ্টি লাগে। খাবারে ওয়ালনাটের সুগন্ধও বজায় থাকে।
ক. ছিয়ানতাওহু হাংচৌ শহরের বৃহত্তম জেলা। এখানে পাহাড়ের সংখ্যা বেশি। তাই নানা ধরনের ফল পাওয়া যায়। বিশেষ করে বুনো কিউয়ি ফল অনেক মজাদার ও পুষ্টিকর। আমরা জানি, কিউয়ি ফলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। আজকাল বিদেশি কিউয়ি ফলও পাওয়া যায়। বুনো কিউয়ি ফল প্রথমে চীনে উত্পাদিত হয়। এ ধরনের বুনো কিউয়ি ফলের আকার অত বড় নয়; তবে খেতে অনেক মিষ্টি ও নরম। সুযোগ পেলে আপনারা অবশ্যই তা খেয়ে দেখবেন।
খ. প্রশ্ন হচ্ছে, ছিয়ানতাওহু জেলায় কীভাবে যাবেন? আসুন জানিয়ে দিই। হাংচৌ থেকে ছিয়ানতাওহু পর্যটন এলাকার দূরত্ব মাত্র ১৪০ কিলোমিটার। বাসে যেতে ২ ঘন্টা সময় লাগে; বাস টিকিটের দাম ৫৮ ইউয়ান। প্রতিদিন সকল ৬টা থেকে রাত ৭টা পর্যন্ত প্রতি আধ ঘন্টা পর পর বাস পাওয়া যায়। তা ছাড়া, শাংহাই ও নানচিং থেকেও বাসে চড়ে ছিয়ানতাওহুতে আসতে পারেন।
ক. সময় ও সুযোগ পেলে আপনারা অবশ্যই এখানে বেড়াতে আসবেন। অনুষ্ঠান শেষ করার আগে আমরা আজকের কুইজ প্রতিযোগিতার প্রশ্নটি করবো। প্রশ্নটি হচ্ছে: ছিয়ানতাওহু পর্যটন এলাকায় মোট কতটি দ্বীপ আছে?
খ. প্রশ্নটি আবার বলছি: ছিয়ানতাওহু পর্যটন এলাকায় মোট কতটি দ্বীপ আছে? আমাদের ইমেল ঠিকানা ben@cri.com.cn, আমাদের চিঠি লিখতে ভুলবেন না।
ক. যাবার আগে আরেকটি গান শুনলে কেমন হয়? গানের নাম 'সন্ধ্যাবেলায় নৌকা চড়া'।(সুবর্ণা/আলিম)
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |