|
খ.ছিয়ানমেন ব্যবসা এলাকার কথা বলতে গেলে তাশিলান এলাকার কথা অবশ্যই বলতে হবে। তাশিলান হচ্ছে এ ব্যবসা এলাকার কেন্দ্রীয় অঞ্চল। চীনা ভাষায় তাশিলানের অর্থ হল বড় সাইজের চোরাইমাল। কারণ প্রাচীনকালে চীনের মিং ও ছিং রাজবংশে রাতের বেলা রাজপ্রাসাদের কাছাকাছি এলাকায় কারফিউ চালু করা হয়। রাতের বেলা রাস্তা ও ছোট অলিগলিতে চোরাইমাল লুকিয়ে রাখা হতো। এ কারণে এ অঞ্চলের নাম তাশিলান । ১০০ বছর ধরে উন্নয়নের পর তালিশানের দোকানের সংখ্যা এখন অনেক বেশি। যেমন রেশমী কাপড় দোকান, ওষুধের দোকান, জুতার দোকান, রেস্তরাঁ, থিয়েটার, জেড পাথরের দোকান, স্বর্ণের দোকান ইত্যাদি।
ক.হ্যাঁ,পেইচিংয়ের অনেক বিখ্যাত পুরনো দোকান ও ট্রেডমার্ক ছিয়ানমেন থেকে সুপরিচিত হয়েছে। যেমন ছুয়ানচিউতে রোস্ট ডাক, রুইফুসিয়াং রেশম কাপড়ের দোকান, থোংরেনথাং চীনা ওষুধের দোকান ইত্যাদি।
খ. আরেকটি কথা উল্লেখ করতে হবে, তা হচ্ছে ছিয়ানমেন এলাকার বিভিন্ন চায়ের দোকান। এ চায়ের দোকান সাধারণত চার রকম রয়েছে। প্রথমত: চা খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গল্প বা কাহিনী শোনা। দ্বিতীয়ত: চা খাওয়ার পর মদ ও হাল্কা ধরনের খাবার খাওয়া যায়। তৃতীয়ত: ব্যববায়ীদের জন্য ব্যবসা পরামর্শ করার চা দোকান। চতুর্থত: উন্মুক্ত চা দোকান, সাধারণত একটি বড় গাছের নিচে কয়েকটি টেবিল ও চেয়ার রেখে দেয়, এ রকমের চা দোকান উপকন্ঠ এলাকায় বেশি দেখা যায়। প্রাচীনকালে চীনের ছিং রাজবংশের শেষ আমলে পেইচিংয়ের বিভিন্ন চা দোকানের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ছিল।
ক.চা দোকানের প্রবেশ এলাকায় কাউন্টার স্থাপন করে, মাঝখানে একটি বড় সাইজের তামার চা পাত্র রাখা হয়, এ পাত্রের মুখ খুবই লম্বা, কাপ দিয়ে লম্বা মুখের মাধ্যমে চা খাওয়া যায়। চীনা ভাষায় এ ধরনের চাকে তাওয়ানছা বলা হয়। বর্তমানে ছিয়ানমেন এলাকায় প্রাচীনকালের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন চায়ের দোকান আছে, এর নাম হচ্ছে লাওশে চা দোকান। মাঝে মাঝে এখানে গল্প বা কাহিনীর প্রদর্শনী দেখা যায়, এখানে বসে চা খেয়ে প্রাচীনকালে পেইচিংয়ের নাগরিকদের জীবনযাপনের আমেজ উপভোগ করা যায়।
খ.তাহলে এখন শ্রোতাবন্ধুদের জন্য আরেকটি মিষ্টি গানটি শোনাবো। গানের নাম চা পাহাড়ের প্রেমের গান। গানের কথায় বলা হয়েছে, চা পাহাড়ের মেয়ে দারুণ সুন্দর, চায়ের পাতা নেওয়ার জন্য ব্যস্ত, প্রজাপতি সুন্দর মেয়ের কাছে চলে আসছে, মৌমাছিও মেয়ের কাছে গান গায়। অপর পাহাড়ের ছেলে মেয়েকে দেখে খুবই পছন্দ করে, মেয়ের প্রতি সুন্দর প্রেমের গান গায়…..
ক.সুন্দর গানটি শোনার পর এখন ছিয়ানমেন রেলস্টেশনের কথা নিয়ে কিছু তথ্য জানাই। থিয়ান আন মেন চত্বর পরিদর্শন করলে অবশ্যই এ রেলস্টেশনের সামনে আসতে হবে। এ রেলস্টেশন চত্বরের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলে অবস্থিত, এর স্থাপত্য স্টাইল পাশ্চাত্যের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। ১৯০১ সাল থেকে এ স্টেশন নির্মাণের কাজ শুরু হয় এবং ১৯০৬ সালে তা সম্পন্ন হয়েছে। এর ১০০ বছরেরও বেশি সময়ের ইতিহাস রয়েছে। প্রতিষ্ঠার সময় এ স্টেশন ছিল চীনের বৃহত্তম রেলস্টেশন, এর মধ্যে তিনটি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যার মোট দৈর্ঘ্য ৩৭৭ মিটার। ওয়েটিং রুমের আয়তন ১৫০০ বর্গমিটার। ১৯৫৯ সালে পেইচিং রেলস্টেশন চালু করার পর, এ পুরনো রেলস্টেশনের চলাচল বন্ধ হয়েছে। তারপর থেকে এ স্টেশনটি শপিং মলে পরিণত হয়েছে। এখন পর্যটকরা এখানে এসে ছবি তুলতে পারে।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |