Web bengali.cri.cn   
তিব্বতের চিয়ামা পল্লীর খনিশিল্প উন্নয়নের পথ
  2012-07-27 22:09:10  cri

চিয়ামা পল্লীর খনিঅঞ্চল সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক উঁচুতে, গাছগাছড়া বিরল, বসবাসের পরিবেশ দুর্বল এবং ঐতিহাসিক সমস্যা অপেক্ষাকৃত বেশি। পাঁচ বছর আগে হুয়াথাইলোং কোম্পানি চিয়ামা পল্লীতে এসে অনেক স্থানীয় ছোট আকারের শিল্পপ্রতিষ্ঠান অধিগ্রহণ ও একীকরণ করেছে। তারা পরিবেশ সংরক্ষণ আর জ্বালানিসম্পদ সাশ্রয় ও দূষিত পদার্থ নির্গমন হ্রাস করার ধারণাকে কোম্পানির উন্নয়নের সর্বপ্রথম স্থানে রেখেছে। থাং ইয়োং ছিং জানিয়েছেন, 'হুয়াথাইলোং কোম্পানির বসবাস পরিবেশ সংরক্ষণ প্রকল্পে বিনিয়োগের পরিমাণ ১১.৭ শতাংশ, যা চীন সরকারের ৩ শতাংশ মানদণ্ডের চেয়ে অনেক বেশি। এটা চীনের সংখ্যালঘু জাতি-অধ্যুষিত অঞ্চলের খনি উন্নয়নে রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া ভূগর্ভে আমাদের ৫.৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পরিবহন পথ আছে। এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে পৃষ্ঠ পরিবহন থেকে সৃষ্ট ধূলিকণা এড়ানো। এখন পানির পুনর্ব্যবহারের হার ৯৪ শতাংশেরও বেশি। আমাদের এতো বড় একটি কারখানায় কোন চিমনি নেই। এক ফোঁটা দূষিত পানিও নির্গমন হয় না। আমরা দশ হাজার বর্গমিটার আয়তনের একটি সৌরশক্তিচালিত তাপ উত্পন্নকরণ প্রকল্প নির্মাণ করেছি।'

চিয়ামা পল্লীতে হুয়াথাইলোং কোম্পানির খনি শিল্প উন্নয়ন প্রকল্প

কয়েক বছরে হুয়াথাইলোং কোম্পানি খনি অঞ্চলের পানির চক্র প্রক্রিয়াকরণ, সবুজায়ন আর মাটি ও জল সংরক্ষণসহ সংশ্লিষ্ট পরিবেশ সংরক্ষণ প্রকল্পের জন্য ১৮ কোটি ইউয়ান বরাদ্দ করেছে। পরিবেশ সংরক্ষণ ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ ব্যয় করার পাশাপাশি হুয়াথাইলোং কোম্পানি স্থানীয় জনসাধারণের অভিন্ন সমৃদ্ধি সৃষ্টির প্লাটফর্ম প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছে। থাং ইয়োং ছিং বলেন, 'শিল্পপ্রতিষ্ঠান তিব্বতে থাকতে চাইলে বসবাস পরিবেশ সংরক্ষণের ওপর যদি গুরুত্ব না দেয়, তাহলে এখানে পা রাখার জায়গা হবে না। যদি জাতিগত সামঞ্জেসের ওপর গুরুত্ব না দেয়, এখানে থাকার কোনো উপায় নেই।'

হুয়াথাইলোং কোম্পানি সেতু ও সড়ক নির্মাণ, স্কুল প্রতিষ্ঠার জন্য চাঁদা প্রদান, জলসেচ প্রকল্প নির্মাণ এবং স্থানীয় অধিবাসীদেরকে কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়াসহ কতোকগুলো সুবিধাজনক ব্যবস্থার মাধ্যমে নিকটবর্তী অঞ্চলের কৃষক ও পশুপালকদের আয় বৃদ্ধি করেছে এবং খনি অঞ্চলের বসবাস পরিবেশ উন্নয়ন করেছে। এটা দেখে খনি সম্পদ উন্নয়ন সম্পর্কে জনসাধারণের মনোভাব ধাপে ধাপে পরিবর্তিত হয়েছে। উনত্রিশ বছর বয়সী তিব্বতী যুবক লুরোলিসিন হুয়াথাইলোং কোম্পানিতে তিব্বতী ও চীনা ভাষার অনুবাদ ও সমন্বয়ের কাজ করেন। তিনি বলেন, 'এ কোম্পানি এখানে আসার প্রথম দিকে আমরা নানা ঝড়বৃষ্টি অতিক্রম করেছি। স্থানীয় অধিবাসীদের গালি ও আঘাতও পেয়েছি। তারা মনে করতো, আমরা টাকা উপার্জনের জন্য এসেছি, জনসাধারণের সুবিধার জন্য নয়। আসলে তারা জানতো না, হুয়াথাইলোং কোম্পানি জনসাধারণের জন্য এতো ভালো সুযোগ-সুবিধা বয়ে আনে এবং এতো ভালোভাবে পরিবেশ সংরক্ষণ করে। প্রথমে অনেক বিরোধিতার কণ্ঠ ছিল। কিন্তু এখন সবাই সমর্থন করে।'

এখন লুরোলিসিন চিয়ামা শিল্প ও বাণিজ্য কোম্পানির উপ-প্রধান ব্যবস্থাপক হয়েছেন। এ কোম্পানিটি হচ্ছে ১ কোটি ৬০ লাখ ইউয়ান ব্যয়ে এ গ্রামের অতীতের বিশৃঙ্খল গাড়িবহর অধিগ্রহণ করার পর প্রতিষ্ঠিত হুয়াথাইলোং কোম্পানির একটি শাখা কোম্পানি। এর মধ্যে ৪৯ শতাংশ শেয়ারের অধিকারী হচ্ছেন গ্রামবাসী। প্রতি বছর তারা মুনাফার ভাগ পান। যেমন ২০১১ সালের শেষ দিকে চিয়ামা পল্লীর প্রতিটি কৃষক ও পশুপালক পরিবার ১৮০০ ইউয়ান করে মুনাফা পায়।

তা ছাড়া হুয়াথাইলোং কোম্পানি ৪ কোটি ৭০ লাখ ইউয়ান ব্যয়ে স্থানীয় পরিবহন ও জীবনযাপন-সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো উন্নয়ন করেছে। 'বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, পরিবেশ সংরক্ষণ, সবুজায়ন এবং সুষম নির্মাণের' ধারণা অনুসরণ করে হুয়াথাইলোং কোম্পানি কেবল জনসাধারণের প্রশংসা পেয়েছে তা নয়, বরং স্থানীয় সরকারের স্বীকৃতিও পেয়েছে। তিব্বতের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের মোচুকোংকা জেলার কমিউনিস্ট পার্টি কমিটির সম্পাদক লিন থাও বলেন, 'চীনের সোনা গোষ্ঠি হুয়াথাইলোং কোম্পানির পরিচালনায় অংশগ্রহণ করে। তারা সংখ্যালঘুজাতির কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দেয়। স্থানীয় অধিবাসীদের কর্মসংস্থানের হার বাড়িয়ে দিয়েছে। চিয়ামা পল্লীর জনসাধারণের কাছেও তাদের অতি ভালো মূল্যায়ন আছে।'

জানা গেছে, হুয়াথাইলোং কোম্পানি দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পে দৈনিক ৪০ হাজার টন খনিজাত বস্তু প্রক্রিয়াকরণের পরিকল্পনা করেছে। এর ফলে ভবিষ্যতে হুয়াথাইলোং কোম্পানি চীনের উচ্চ-সমুদ্রপৃষ্ঠ অঞ্চলে সর্বাধিক খনিসম্পদ উন্নয়ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। (ইয়ু/এসআর)


1 2
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040