Web bengali.cri.cn   
তিব্বতের চিয়ামা পল্লীর খনিশিল্প উন্নয়নের পথ
  2012-07-27 22:09:10  cri

শোংজানকানবুর জন্মস্থান তিব্বতের লাসার উত্তর শহরতলিতে অবস্থিত চিয়ামা পল্লী

 তিব্বতের লাসার উত্তর শহরতলিতে অবস্থিত চিয়ামা পল্লী হচ্ছে তুবো রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা শোংজানকানবুর জন্মস্থান। এ সুদীর্ঘ ইতিহাস ও উজ্জ্বল সংস্কৃতির অধিকারী ভূমিতে মালভূমির প্রাকৃতিক অবস্থাসহ নানা উপাদানের কারণে এখানকার কৃষক ও পশুপালকরা এক সময় খুবই দরিদ্র ছিল। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এখানকার অবস্থা ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে। স্থানীয় অধিবাসী আওয়াচিরেন বলেন, 'আমি স্কুলে যাইনি। আমি তেমন শিক্ষিত নয়। আমার বয়সও হয়েছে। তা সত্ত্বেও এখানে আমি প্রতি মাসে ২০০০ ইউয়ান আয় করতে পারি। এর জন্য আমি কৃতজ্ঞতা বোধ করি। গত বছর সব ব্যয় ছাড়া আমার পরিবারের বার্ষিক আয় ছিল ২ লাখ ২০ হাজার ইউয়ান। এটা হচ্ছে খনি শিল্প কোম্পানি এখানে আসার পর আমাদের জন্য বয়ে আনা আকাশ-পাতাল পরিবর্তন।'

আওয়াচিরেন সিআরআই'র সংবাদদাতাকে সাক্ষাত্কার দেন

আওয়াচিরেনের উল্লেখিত খনি শিল্প কোম্পানি হচ্ছে হুয়াথাইলোং খনি শিল্প উন্নয়ন লিমিটেড কোম্পানি। এ কোম্পানি হচ্ছে চীনের সোনা গোষ্ঠির ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি শাখা কোম্পানি। এ কোম্পানির প্রধান কাজ হচ্ছে তিব্বতের মোজুকোংকা জেলার চিয়ামা পল্লীতে তামা কেন্দ্রিক বহু ধাতব খনি প্রকল্প উন্নয়ন করা।

এখন ৫৮ বছর বয়সী আওয়াচিরেন এ কোম্পানিতে পাহারাদার ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। তাঁর দুই ছেলেও হুয়াথাইলোং কোম্পানির অধিনস্থ চিয়ামা শিল্প ও বাণিজ্য কোম্পানিতে আকরিক পরিবহনের কাজ করেন। দুই ছেলের মাথাপিছু মাসিক আয় প্রায় ৬০০০ ইউয়ান। এ অঙ্ক তিব্বতের সাধারণ কৃষক ও পশুপালকদের মাথাপিছু বার্ষিক নেট আয়ের চেয়ে প্রায় ১০০০ ইউয়ান বেশি। হুয়াথাইলোং কোম্পানির আগমনে অনেক তিব্বতী পরিবারের আয় বৃদ্ধি হয়েছে। এ কোম্পানির প্রধান ব্যবস্থাপক থেন ইয়ো ছিং বলেন, 'এখন কোম্পানিতে ২৯৪ জন সংখ্যালঘু জাতির কর্মী আছে। তাদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে মান জাতি, ঈ জাতি আর তিব্বতী জাতি। প্রায় ৩০ শতাংশ কর্মী হচ্ছেন তিব্বতী জাতির। আমি মনে করি, আমাদের পরবর্তী প্রকল্প চালু হওয়ার পর এ অনুপাত আরো বৃদ্ধি পাবে।'

হুয়াথাইলোং কোম্পানি ২০১০ সালের জুলাই মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে চিয়ামা পল্লীতে প্রকল্পটি শুরু করে। তারা প্রতিদিন ৬০০০ টন খনিপণ্য প্রক্রিয়া করে। কেবল ২০১১ সালের প্রথম প্রান্তিকে এ কোম্পানির ১০ কোটি ৫০ লাখ ইউয়ানের মোট উত্পাদনের সাহায্যে চীনের বিভিন্ন প্রদেশের প্রথম প্রান্তিকের মোট উত্পাদনে প্রবৃদ্ধির হারের তালিকায় তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল প্রথম স্থান দখল করে।

জানা গেছে, তিব্বতের ১৭ ধরনের খনি সম্পদের পরিমাণ চীনের বিভিন্ন প্রদেশের মধ্যে নবম স্থানে রয়েছে। এর মধ্যে ক্রোমিয়াম, কারুশিল্পের স্ফটিক ও চুনির মজুদের পরিমাণ চীনে প্রথম স্থানে রয়েছে। তামা ও আগ্নেয়গিরির ছাইয়ের মজুদের পরিমাণ চীনে দ্বিতীয় স্থানে আছে। বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তিব্বতের খনি সম্পদের সম্ভাব্য অর্থনৈতিক মূল্য ১ ট্রিলিয়ন ইউয়ানেরও বেশি। ছিংহাই-তিব্বত রেলপথ প্রতিষ্ঠার পর পরিবহনের ব্যয় হ্রাস পাওয়ার পর তিব্বত ছোট-বড় ব্যবসায়ীদের গন্তব্যস্থানে পরিণত হয়েছে।

চিয়ামা পল্লীর আকরিক খনির ক্রিয়াকর্ম শুরু হয়েছে ১৫ বছর আগে। কিছু ছোট আকারের খনি কোম্পানি কেবল খননের ওপর গুরুত্ব দিতো, কিন্তু পরিবেশ সংরক্ষণকে উপেক্ষা করতো। মাঝে মধ্যে খনির দূষিত পানি খেয়ে গরু ও ছাগল মারা যেত। ফলে স্থানীয় কৃষক ও পশুপালকদের মধ্যে খনিসম্পদ উন্নয়ন-বিরোধী মত ছিল।

1 2
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040