চীনাদের দৈনন্দিন জীবনে চা একটি অপরিহার্য পানীয় বলে মনে করা হয় । দীর্ঘকাল ধরে চীনে চা বিষয়ক সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য প্রচলিত হয়ে আসছে । প্রতি বছর এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময় চীনের চন্দ্রবর্ষের ছিংমিং পার্বন চলাকালে চীনে বসন্তকালীন চা বাজারে ওঠে ।
পৃথিবীতে চীন হচ্ছে চায়ের উত্সস্থল । এ দেশও বিশ্বের এমন একটি দেশ , যে দেশে সবচেয়ে আগে চা উত্পাদন করা হয় এবং চা খাওয়ার রীতি-নীতি চালু হয় । খ্রীষ্টীয় ৬১৮ থেকে ৯০৭ সাল পর্যন্ত চীনের থাং রাজবংশের আমলে বিখ্যাত বুদ্ধিজীবি লু ইয়্যু চা ও চায়ের রীতি-নীতি বিষয়ক বিশ্বের প্রথম গ্রন্থ রচনা করেন । এতে চীনের চা উত্পাদনের ইতিহাস , চা তৈরির প্রযুক্তি এবং এ সম্পর্কিত বিভিন্ন আচার – প্রথার বর্ণনা করা হয়েছে । এ গ্রন্থ রচনা এবং চা সম্পর্কিত ধারাবাহিক বিভিন্ন ঐতিহ্যময় তত্পরতা চালানোর ফলে চীনের চা বিষয়ক সংস্কৃতির বিকাশ ত্বরান্বিত হয়েছে । এ গ্রন্থের লেখক লু ইয়্যুকেও চায়ের আবিস্কার বলে আখ্যায়িত করা হয় ।
চীনে চা একটি রাষ্ট্রীয় পানীয় হিসেবে বিবেচিত । চীনের প্রাচীনকালে বেহালা বাজানো , দাবা খেলা , হাতের লেখা , চিত্রাঙ্কন , কবিতা রচনা , মদ ও চা খাওয়াকে বুদ্ধিজীবিদের দৈনন্দিন জীবনের ৭টি প্রয়োজনীয় কাজ বলে মনে করা হতো । এ থেকে বোঝা যায় যে , চা চীনের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি ও শিল্পকলার একটি অংশ হয়ে উঠেছে । যুগ যুগ ধরে চীনের বিভিন্ন রাজবংশের আমলে চা সম্পর্কিত বিপুল সংখ্যক কবিতা , চিত্রাঙ্কন ও সংগীত কর্ম দেখা গেছে । চা খাওয়া এবং চা সম্পর্কিত বিচিত্র আমোদ প্রমোদ বুদ্ধিজীবিদের একটি জনপ্রিয় বিনিময়ে পরিণত হয়।
1 2