Web bengali.cri.cn   
ফুরোং জেলায় প্রবেশ
  2011-08-30 10:25:51  cri
    মধ্য চীনের হুনান প্রদেশের রহস্যময় পাহাড়ের মধ্যে ২০০০ বছরেরও বেশি সময়কালের একটি ঐতিহাসিক জেলা আছে। এখানকার দৃশ্য সুন্দর, অলিগলি ও দীর্ঘ পাথরের রাস্তার পাশে বাঁশ দিয়ে তৈরী মাচান ঘর দেখা যায়। এখানকার আন্তরিক রীতিনীতি থু জাতির বোনদের মিষ্টি কন্ঠ জলপ্রপাতের শব্দের সঙ্গে সংমিশ্রিত। এ স্থানট হল চীনের থুজিয়া জাতির জলপ্রপাতের ওপর থাকা পুরনো জেলা—ফুরোং জেলা। আজকের অনুষ্ঠানে আমরা হুনান প্রদেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের ফুরোং জেলায় যাবো।

    গত শতাব্দীর ৮০ দশকে চীনের ফুরোং জেলা নামে নির্মিত একটি চলচ্চিত্র হুনান প্রদেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চল থেকে বিশ্বে বিখ্যাত হয়েছে। এ চলচ্চিত্র বিখ্যাত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চলচ্চিত্রের শুটিং স্থান সিয়াংসি ইয়োংস্যুন জেলার ওয়াং গ্রামটিও বিখ্যাত হয়ে যায়। এ পর্যন্ত আমরা রোডম্যাপ থেকে ওয়াং গ্রামটিকে খুঁজে বের করতে পারি, তবে অনেকে চলচ্চিত্র দেখার পর তাকে ফুরোং জেলা বলে ডাকে।

ওয়াং গ্রাম বা ফুরোং জেলা যাই হোক না কেন, হাজার বছর ধরে তা পশ্চিম হুনানের ব্যবসায়ীদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা।

    আমি এখন ফুরোং জেলার প্রধান রাস্তা—উ লি পাথরের রাস্তায় আছি। এটা হচ্ছে একটি প্রাচীনকালের রাস্তা। এর দু'পাশে এক লাইনে কাঠের বাসভবন দাঁড়িয়ে আছে। এসব কাঠের ভবনে প্রবেশ করে, আপনারা দেখতে পাবেন প্রতিটি পরিবারের কাউন্টার আছে এবং এ কাউন্টার মাটি থেকে ১ মিটারেরও বেশি উচ্চুঁ স্থানে স্থাপন করা হয়েছে। এ ধরনের ডিজাইনে প্রাচীনকালের ব্যবসায়ীরা ঘোড়ায় চড়ে সহজভাবে দোকানের মালিকের সঙ্গে ব্যবসা করতে পারতেন।

    ফুরোং জেলায় প্রবেশ করে পাথরের রাস্তায় হেঁটে হেঁটে স্বপ্নের মতো রহস্যময় সুন্দর দৃশ্যের মধ্যে বিশেষ বৈশিষ্ট্য খুঁজে বের করতে পারবেন। ভোর বেলায় হাল্কা কুয়াশা ইয়োস্যুই নদীর পাশে ধীরে ধীরে গাঢ় হয়ে ওঠে, গোটা জেলা রহস্যময় কুয়াশার ঘিরে থাকে, পাথরের রাস্তা, মাচান ঘর ও কার্ভিং দোয়াল তখন অর্ধেক দেখা যায়। সন্ধ্যা বেলায় সূর্য্য পশ্চিম দিকে হেলে পড়ে। এর আলো সবুজ পাথরের মাধ্যমে জেলার বিভিন্ন স্থানে ছায়ার মত প্রতিফলিত হয়, একটি অতি সন্দর দৃশ্য তখন দেখা যায়। গত শতাব্দীর ৮০'র দশকের মাঝামাঝি সময় মৃত্যুবরণ করা চীনের বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক ফুরোং জেলা নামক চলচ্চিত্রের শুটিং স্থান খুঁজে বের করার জন্য ৭০০০ কিলোমিটারের মত পথ চলে ওয়াং গ্রামে আসেন এবং এ স্থানকে বাছাই করেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,

    এ স্থানে আসার পর আমি প্রত্যেকটি জায়গা ভালোভাবে দেখেছি,, দারুণ সুন্দর। এ পাথরের রাস্তা দেখতে ছোংছিং শহরের রাস্তার মতো। নদীর তীরে সিঁড়িতে আরোহণ করা অনেক মাচান ঘর দেখা যায় এবং সেখানে ছোট অলিগলি আছে। এতো বড় সাইজের মাচান ঘর ও সুন্দর দৃশ্য দেখে আমার ভীষণ ভালো লেগে যায়।

    সুন্দর দৃশ্য ছাড়াও ফুরোং জেলায় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যও রয়েছে। যেমন পশ্চিম হুনান প্রদেশের রীতিনীতি জাদুঘরে শিচৌ তামার স্তম্ভ। তা হল চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের প্রকাশিত চীনের প্রথম পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তির অন্যতম। এর ওজন ২৫০০ কেজি। স্তম্ভের উপর ২৫০০টি অক্ষর দিয়ে থুচিয়া জাতির ইতিহাস লিপিবদ্ধ রয়েছে। জাদুঘরের কর্মী চাও পেং বলেন,

    তামার স্তম্ভ হল প্রাচীনকালে চীনে ব্যবহৃত সীমান্ত এলাকা নির্ধারণের প্রতীক। শিচৌ তামার স্তম্ভ হল প্রাচীনকালের চীনের ছু রাজা মা সিফান ও শিচৌ সরকারের কর্মকর্তা পেং শি চৌ'র মধ্যে যুদ্ধ অবসানের পর নির্ধারিত সীমান্ত স্তম্ভ। স্তম্ভের উপর রাজা ছু'র বিদ্রোহের প্রতিটি নীতিমালা লিপিবদ্ধ রয়েছে। এ স্তম্ভ ঝুঁলিয়ে রাখার পর শিচৌ অঞ্চলের অধিবাসীদের ৮০০ বছরেরও বেশি সময় শান্ত জীবন কেটেছিল।


1 2
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040