|
হেইলোংচিয়াং প্রদেশের পূর্বাঞ্চলের সীমান্ত অঞ্চলে অবস্থিত শিংখাই হ্রদ হচ্ছে চীন ও রাশিয়ার সীমারেখায় অবস্থিত একটি বৃহত্ মিঠে পানির হ্রদ। বসন্তকাল এলে শিংখাই হ্রদ পাখির স্বর্গে পরিণত হয়। দল বেঁধে বেঁধে বিভিন্ন ধরনের যাযাবর পাখি হাজার হাজার মাইল দূর থেকে এখানে আসে, তারপর এখান থেকে আবার রাশিয়ার দিকে উড়ে যায়। বসন্তকাল থেকে শিংখাই হ্রদের পর্যটনের ব্যস্ত সময় শুরু হয়। জলাভূমিতে পাখি দেখা, বড় জাহাজে হ্রদ ভ্রমণ করা, বড় বড় সাদা মাছ খাওয়া - এ সব হচ্ছে পর্যটকদের শিংখাই হ্রদ ভ্রমণের সময় অবশ্যম্ভাবী কর্মসূচি। শিংখাই হ্রদে আসার পর পর্যটক কুও সিয়াও ইয়াংয়ের মনে এ হ্রদ গভীর দাগ কেটেছে। তিনি বলেন,
'আমি মনে করি, শিংখাই হ্রদ সত্যিই আকর্ষণীয়। আমি কখনো এতো বেশি পাখি দেখিনি। আমি কখনো এতো বড় হ্রদ দেখিনি। এটা দেখতে যেন সাগরের মতো। ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে আমি আবার এখানে বেড়াতে আসবো।'
শীতকালে শিংখাই হ্রদের দৃশ্য আবার অন্যরকম হয়ে যায়। বরফ জমে যাওয়া হ্রদের ওপর দিয়ে হাঁটলে দারূণ রোমাঞ্চকর মজা পাওয়া যায়। সাদা বরফ দেখতে মোটা তুলার মতো; মনে হয় তুলার তৈরি লেপ দিয়ে হ্রদ ঢেকে রাখা হয়েছে। হ্রদে ঠাণ্ডা বাতাসের মধ্যে খুচরো খুচরো তুষার দিয়েয় অসংখ্য রূপালী ড্রাগণে পরিণত করা হয়েছে। পর্যটকরা এখানে এসে কেবল হ্রদের ওপর দৌঁড়াতে চায়। সৈকতে মাঝে মধ্যে দু'একটি ক্ষুদ্র প্রাণীর পদচিহ্ন দেখা যায়। হ্রদের ভিতরে অবস্থিত জলাভূমি সোনালী নলখাগড়া ও ঘাসগুলোয় ঢেকে গেছে। ঘাসের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পাখির বাসা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তা দেখে গ্রীষ্মকালে এখানকার পাখিদের স্বর্গের সুষমা ভরা ব্যস্ততা বোঝা যায়। দেখুন, অনেক মানুষ হ্রদে ব্যস্ততার মধ্যে কাজ করছে। কেউ কেউ বরফের মধ্যে গুহা তৈরি করছে, কেউ কেউ মাছ ধরার জাল নিচ্ছে। ৩০০০ মিটার দৈর্ঘ্যের বড় জাল হ্রদের ভিতর থেকে বাইরে বের করে আনার পর আমরা দেখেছি যে, শিংখাই হ্রদের সাদা মাছ ও রুই মাছসহ নানা প্রাকৃতিক ও দুষণমুক্ত মাছ রয়েছে। সে মাছগুলো পুরো একটা ঘোড়ার গাড়ি ভরে যাবে। হার্বিন শহর থেকে আসা পর্যটক মা ওয়েন মিং বলেন,
'আমি শুনেছি, আজ প্রথম জাল ফেলে মাছ ধরবে। আমি বিশেষ করে তা কেনার জন্য এখানে এসেছি। আমার কেনা এ সাদা মাছটির ওজন দেড় কেজির কম। স্থানীয় লোকজন বিশ্বাস করে যে, প্রথম জালের মাছ খেতে যত সুস্বাদু তত সৌভাগ্যের সূচনা।'
শীতকাল হচ্ছে হেইলোংচিয়াং প্রদেশের সবচেয়ে ঠাণ্ডা সময়। কিন্তু হেইলোংচিয়াংয়ের উষ্ণপ্রস্রবণ বিষয়ক ভ্রমণ খুব জনপ্রিয়। দুর্বোট অন্তঃর্মঙ্গোলিয় জাতি স্বায়ত্তশাসিত জেলা হেইলোংচিয়াং প্রদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। এ স্থানটি হচ্ছে চীনের অতি শীত অঞ্চলের বৃহত্তম বহিরঙ্গানে উষ্ণপ্রস্রবণ দর্শনীয় স্থান। দশ বারোটি উষ্ণপ্রস্রবণ হ্রদের পাশে পর পর নির্মিত। উষ্ণপ্রস্রবণের গরম পানির ধোয়া দিয়ে সাজানো পরিবেশ যেন প্রাকৃতিক স্বর্গ সৃষ্টি করেছে।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |