Web bengali.cri.cn   
ছিছিহাআরে বরফ ও তুষার-দৃশ্য উপভোগ
  2011-01-11 14:38:21  cri
    প্রতি বছরের শেষ দিক থেকে শুরু করে পরবর্তী বছরের প্রথম দিক পর্যন্ত বহু সংখ্যক পর্যটক উত্তর-পূর্ব চীনের সোংনেং তৃণভূমিতে জালুং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের প্রাকৃতিক সংরক্ষণ অঞ্চলে আসেন। জালুংয়ে স্বচ্ছ বরফ এবং মানুষের চেয়ে লম্বা হলুদ রঙের নলখাগড়ার বন পার হয়ে নিজের চোখে শতাধিক সাদা-কালো লাল-মুকুট সারস পাখিকে আকাশে নাচ-গান করতে দেখে দূর থেকে আসা অতিথিরা অবাক হন। হংকংয়ের ছবি তোলা অনুরাগী লি পিং গত কয়েক বছর ধরে নিয়মিতভাবে এখানে সারস পাখির ছবি তুলতে আসেন। চলতি বছর তিনি কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে আসেন। তিনি বলেন,

    (রি-১)

    "প্রথম দিকে আমি শুনি এখানে তুষারে সারস পাখি দেখার দৃশ্য আছে। আসার পর মনে হয় খুবই সুন্দর। প্রতি বছর এখানে অবমুক্ত করা সারস পাখির সংখ্যা বাড়ছে। খুবই সমারোহময়। বিশেষ করে সারস পাখি যখন তুষারে হাঁটে, তখন তা সত্যই প্রকৃতি ও প্রাণের সম্প্রীতিময় সৌন্দর্য্য সৃষ্টি করে।"

    'সারস পাখি অবমুক্ত করা' হচ্ছে জালুং সংরক্ষণ অঞ্চলের সবচেয়ে উদ্দীপনাময় সময়। সারস পাখি পালকরা খাঁচার দরজা খুলে দিলে দেড় মিটার উঁচু একে একটি সারস পাখি মডেলের মতো একের পর একটি বের হয়। পালকরা 'রানওয়েতে' কিছু প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পন্ন করে পাখিগুলোকে মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঠাণ্ডা আবহাওয়া উপযোগী করে। এরপর পাখিগুলো প্রথমে কিছুক্ষণ পায়ে হেঁটে তারপর দ্রুত দৌড়াতে থাকে এবং শেষে পাখা ঝাপটিয়ে আকাশে উড়ে যায়। বরফ ও তুষারে এত সুন্দর নৃত্য দেখে দূর থেকে আসা পর্যটকরা বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যান।

    (রি-২)

    "প্রতি বছর বিশেষ করে এই সময়ে এখানে আসার প্রত্যাশা করি। খুবই সুন্দর একটি জায়গা। সারস পাখিও সুন্দর।"

    বর্তমানে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ ইউনিয়ন লাল-মুকুট সারস পাখিকে বিলুপ্তির সম্মুখীন জাত-তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করেছে। বর্তমানে সারা বিশ্বে এরকম সারস পাখির সংখ্যা ২ হাজারের বেশি নয়। কিন্তু প্রতি বছর গ্রীষ্ম কাটাতে হেইলুংচিয়াং প্রদেশের ছিছিহাআরে জালুং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের প্রাকৃতিক সংরক্ষণ অঞ্চলে আসা অতিবিরল সারস পাখির সংখ্যা ৪শ'রও বেশি। জালুং জলাভূমিতে হ্রদ বেশি। এটা হচ্ছে বিরল প্রজাতি পানি-পাখির স্বর্গ, এমনকি সারস পাখির সবচেয়ে সুন্দর জন্মভূমি। একারণে ছিছিহাআর শহর 'সারস পাখি শহর' হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে।

    সারস এক ধরনের পরিযায়ী পাখি যারা বসন্ত ও গ্রীষ্মকালে উত্তরাঞ্চলে থাকে এবং শরত্ ও শীতকালে দক্ষিণাঞ্চলে চলে আসে। হেইলুংচিয়াং প্রদেশের ছিছিহাআর জালুং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের প্রাকৃতিক সংরক্ষণ অঞ্চলের কর্মীরা অব্যাহতভাবে গবেষণা ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে চীনের প্রথম লাল-মুকুট সারস পাখির স্থান পরিবর্তন না করা জাত সৃষ্টি করেছেন। বর্তমানে কৃত্রিমভাবে প্রজনন করা ও পোষমানা লাল-মুকুট সারস পাখির সংখ্যা প্রায় ৩শ'। জালুং জাতীয় পর্যায়ের প্রাকৃতিক সংরক্ষণ অঞ্চলের প্রশাসন ব্যুরোর উপ-মহাপরিচালক লি ছাংইয়ো বলেন, কৃত্রিমভাবে পালন করা লাল-মুকুট সারস প্রতিবছর একবার স্থান পরিবর্তনের রেওয়াজ বদল করে একাগ্রচিত্তে বরফ ও তুষার বিশ্বে থেকে যায়। ফলে বহু পর্যটক শীতকালে লাল-মুকুট সারস পাখির সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারেন। তিনি বলেন,

    (রি-৩)

    "বর্তমানে পর্যটকের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি। কারণ তুষারে সারস-পাখি দেখার সুযোগ বিশ্বে খুবই কম। চলতি বছর লাল-মুকুট সারস পাখির সংখ্যা অনেক বেশি। বর্তমানে শীতকালে অবমুক্ত করা সারস পাখির সংখ্যা ১৩০টিরও বেশি। পর্যটনের দিক থেকে বলা যায় তা খুবই সমারোহময়।"

    সারস পাখির সৌন্দর্য উপভোগ করা ছাড়াও জালুং স্কী অনুরাগীদের আকর্ষণীয় জায়গা। গাড়িতে করে ছিছিহাআর শহরের মিংইউয়ে দ্বীপ থেকে স্কী স্টেডিয়াম আসার পথে বরফে জমে থাকা গাছ দেখে মনে হয় মিংইউয়ে দ্বীপের চারপাশ যেন রূপকথার রাজ্য।


1 2
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040