|
শাংহাই বিশ্বমেলা পার্কের জার্মানি প্যাভিলিয়নের এক পাশে অবস্থিত জার্মান রেস্তোঁরা হচ্ছে বিশ্বমেলা পার্কের সবচেয়ে বড় রেস্তোঁরাগুলোর মধ্যে অন্যতম। এর অনাড়ম্বর নকশা ও প্রতিনিধিস্থানীয় জার্মান স্টাইল বিশ্বের বিভিন্ন এলাকার পর্যটকদের আকর্ষণ করছে। এছাড়া গ্রীষ্মের উত্তাপের মধ্যে এক কাপ সুস্বাদু বিয়ার খাওয়া নিঃসন্দেহে অনেক পর্যটকের পছন্দের ব্যাপার। আজ আমরা এক সাথে জার্মান রেস্তোঁরায় জার্মানির বিয়ার সংস্কৃতি জানবো।
জার্মানরা বিয়ার খুব পছন্দ করেন। বিশেরও বেশি শ্রেণীর ১ হাজার ৫ শতাধিক ধরনের বিয়ার পাওয়া যায় ওই দেশে। বিয়ার বিক্রির ক্ষেত্রে জার্মানি অনেক বছর ধরে বিশ্বের প্রথম স্থান ধরে রেখেছে। বিশ্বমেলার দর্শকরা যাতে প্রতিনিধিস্থানীয় জার্মান বিয়ার উপভোগ করতে পারেন সেজন্য অ্যানগারের ও ওবেরমের ফেয়ার ফুড প্রফেশনাল সার্ভিসেস লিমিটেট বিশেষভাবে জার্মানি থেকে সকল বার স্থাপনা ও বিয়ারের টাটকা উপকরণ নিয়ে এসেছে। প্রতিনিধিস্থানীয় জার্মান স্বাদ মানুষ পছন্দ করেছে। জার্মান রেস্তোঁরা এ পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ লিটারের বিয়ার বিক্রি করেছে। এর মধ্যে কালো বিয়ার সবচেয়ে বেশি। জার্মানি প্যাভিলিয়নের মহাব্যবস্থাপক অ্যানগারের ও ওবেরমের কোম্পানির দায়িত্বশীল কর্মকর্তা গেরহার্ড ওবেরমের ব্যাখ্যা করেন,
(রি-১)
"এখানে বিক্রি হওয়া বিয়ারের মধ্যে ৬০ শতাংশই হল কালো বিয়ার, ৩০ শতাংশ গম বিয়ার এবং বাকী ১০ শতাংশ লাগার বিয়ার। কালো বিয়ার চীনে খুবই জনপ্রিয়। কারণ তেতো স্বাদের মধ্যেও এটা কিছুটা মিষ্টি। এটা চীনাদের স্বাদের সঙ্গে মানানসই। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে মানুষ এটা খেতে খুবই পছন্দ করেন।"
সংবাদদাতা দেখেছেন যে, প্রতিদিন দুপুর ও সান্ধ্যকালীন আহারের ব্যস্ত সময়ে ৪শ' বর্গমিটারের বেশি জার্মান রেস্তোঁরায় কোন খালি আসন পাওয়া যায় না। প্রায় প্রত্যেকেই এক কাপ বিয়ার খান। গেরহার্ড ওবেরমের সংবাদদাতাকে জানান, ১৫১৬ সালে জার্মানি বিয়ার প্রস্তুত বিধি প্রণয়ন করে। কয়েক শ' বছর ধরে জার্মানরা কঠোরভাবে সে বিধি অনুযায়ী বিয়ার তৈরি করে যাচ্ছেন। সুতরাং জার্মান বিয়ারের গুণগতমান সবসময় একই। তিনি বলেন,
(রি-২)
"জার্মানিতে আমাদের বিয়ার সংক্রান্ত বিধি আছে। বিধি অনুসারে শুধু পানি, যব, মণ্ড ও আজিঘ দিয়ে বিয়ার বানাতে হয়। কিন্তু অন্যান্য দেশ ও অঞ্চলে মানুষেরা বিয়ার বানাতে চাল বা শ্বেতসারসহ বিভিন্ন আনুষঙ্গিক উপকরণ ব্যবহার করেন। যদিও উপকরণ মাত্র কয়েক ধরনের, তবুও জার্মানরা অদ্ভূতভাবে বিয়ারকে ভিন্ন স্বাদ, ভিন্ন রঙ ও ভিন্ন সুরাসক্তিতে পরিবর্তন করতে পারেন। উদাহরণ হিসেবে গেরহার্ড ওবেরমের সংবাদদাতার কাছে কালো বিয়ারের অদ্ভূত পরিবর্তন ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, বিয়ার বানানোর জন্য প্রথমে দরকার সঠিক পানি বাছাই করা। যেমন কালো বিয়ার বানানোর জন্য যে পানি দরকার জার্মানির মিউনিখের পানির গুণগতমান ঠিক তার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। তারপর উত্কৃষ্ট যব বাছাই করতে হয় এবং সেটাকে যথেষ্ট পানি শোষণ করা পর্যন্ত রাখতে হয়। প্রয়োজনীয় মণ্ড তৈরি হওয়ার পর সেটাকে শুকাতে হয়। শুকানোর পর্যায়ে অনেক জ্ঞান রয়েছে।" তিনি বলেন,
(রি-৩)
"মণ্ড শুকানোর তাপমাত্রা ভিন্ন হলে বিয়ারের চূড়ান্ত রঙও ভিন্ন হয়। যদি শুকানোর তাপমাত্রা উঁচু হয়, তাহলে যব কালো রঙে পরিবর্তিত হয়। তারপর পানিসহ বিভিন্ন উপকরণের সঙ্গে মিলে তরলের রঙ কালো হয়ে যায়। মণ্ড শুকানোর তাপমাত্রা সাধারণত ৮০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। কিন্তু কালো বিয়ার শুকানোর তাপমাত্র ১০০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের বেশি। অর্থাত্ ২০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রার পার্থক্য রয়েছে। ঊচ্চ তাপমাত্রা যবকে কালো করে। এর কারণে বিয়ারও অবশ্যই কালো রঙ দেখায়। এছাড়া শুকানোর তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কারণে কালো বিয়ারের স্বাদ আরো মিষ্টি হয়। তবে একই পদ্ধতি অনুসরণ করলেও ভিন্ন কারখানায় বানানো কালো বিয়ারের মিষ্টতা ভিন্ন হয়। এ কারণেই জার্মানিতে বিভিন্ন রকমের কালো বিয়ার রয়েছে।"
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |