|
মিনা শহর হচ্ছে একটি উপত্যকায় নির্মিত শহর। পাহাড়ের ওপর থেকে পড়া পাথর ও খরস্রোত তাবুর শহরের জন্য কঠিন সমস্যা। বিশ্বমেলা উদ্যানের তাবুর শহরের প্রদর্শনীতে সৌদি আরব ছবি ও ভিডিওসহ বিভিন্ন উপায়ে পর্যটকদেরকে এসব সমস্যার সমাধান পরিকল্পনা ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।
ডক্টর ঘামদি ব্যাখ্যা করেন, মিনা শহরে একটি ১০ লাখ কিউবিক মিটারের জলাধার নির্মাণ করা হয়েছে, যাতে ৩০ লাখ হজ্জযাত্রীর খাবার পানির সমস্যা সমাধান করা যায়। একটি বিরাট ভূগর্ভস্থ আঁস্তাকুড় মিনা শহরের দৈনন্দিন জীবনের বর্জ্য নিষ্কাশনের দায়িত্ব পালন করে। প্রতি বছর মক্কা হজ্জের ৩/৪ দিনে ৬০ হাজার পরিচ্ছন্নকর্মী সারা শহরের বর্জ্য পরিষ্কার করে। এছাড়া তাবুর শহরের পরিবহন, বিদ্যুত সরবরাহ, দমকল ও চিকিত্সাসহ বিভিন্ন স্থাপনা ও সংস্থাও বিশ্বের অন্যান্য আধুনিক শহরের মতোই।
বিশ্বমেলা উদ্যানের তাবুর শহর মিনা প্রদর্শনী কেন্দ্রে পুনর্নির্মিত জামারাত সেতুর মডেল পর্যটকদেরকে মনোযোগ আকর্ষণ করে। মিনা থেকে মক্কা মহামসজিদে গেলে জামারাত সেতুর ওপর দিয়েই যেতে হয়। শয়তানের প্রতি পাথর নিক্ষেপ অনুষ্ঠান সে সেতুতে সম্পন্ন করতে হয়। হজ্জযাত্রীরা সেতুতে দাঁড়িয়ে পাথরগুলোকে সেতুর ওপর তিনটি গোল গর্তে নিক্ষেপ করেন। এর অর্থ গর্তের ভেতর শয়তানকে আঘাত করা এবং নিজের শরীরের শয়তান পাথরের সঙ্গে ছেড়ে দেয়া।
ঘামদি বলেন, হজ্জ চলাকালে প্রতি ঘন্টায় প্রায় ৫ লাখ মানুষ সেতু পার হন। কিন্তু পুরনো জামারাত সেতুর শুধু দুটি তলা ছিল। সুতরাং ভিড়ে পদপিষ্ট হবার দুর্ঘটনা মাঝে মাঝে ঘটত। তাই কয়েক বছর আগে সৌদি সরকার জামারাত সেতুর পুনর্নির্মাণ প্রকল্প শুরু করে এবং ২০০৯ সালে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়। ৫তলা নতুন জামারাত সেতুর ১১টি প্রবেশদ্বার এবং ১২টি নির্গমন পথ রয়েছে। ফলে মানুষের স্রোত কার্যকরভাবে প্রশমিত হয়েছে। ঘামদি বলেন,
"আগে সবাই একই প্রবেশদ্বার দিয়ে প্রবেশ করতেন এবং একই নির্গমন পথ দিয়ে বের হতেন। এখন হজ্জযাত্রীরা বিভিন্ন তলার প্রবেশ নির্গমন পথ ব্যবহার করতে পারেন। এ সেতুর ডিজাইন খুবই জটিল। এর নিচে অ্যাম্বুলেন্স, জরুরী স্থাপনা ও বিশেষ রাজপথ আছে। সেতুর ৫টি তলা আছে। আপনি মিনা শহরের পাহাড়ে হোক বা উপত্যকায় হোক যেখানে থাকুন না কেন, কোন রাজপথ দিয়ে চলবেন তা সহজে নির্ধারণ করা যায়। এছাড়া জরুরী অবস্থার জন্য রয়েছে হেলিকপ্টার পথ। কোন কোন লিফট থেকে একটি করে অ্যাম্বুলেন্স ধরা যায়।"
হজ্জযাত্রীর সংখ্যা প্রতি বছর বাড়ার প্রেক্ষাপটে -- সম্ভবত্য যা ৫০ লাখে গিয়ে দাঁড়াবে -- কীভাবে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা উন্নত করা যায় সেটা তাবুর শহর মিনার বর্তমানে বড় সমস্যা। ডক্টর ঘামদি বলেন, এখন তারা পাহাড়ের গায়ে ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। উপত্যকায় তাবু ভবনের সঙ্গে এগুলোকে জুড়ে দেয়া হবে। এছাড়া চীনের সহায়তায় সৌদি আরব বিরাটাকারের দ্রুতগতির ট্রেন ব্যবস্থা গড়ে তুলছে, যাতে আরো বেশি হজ্জযাত্রীর পবিত্র শহর মক্কায় যাওয়ার পথ সুগম করা যায়। ঘোমদি বলেন,
"আমরা পাহাড়ে বাসস্থান উন্মোচন শুরু করেছি। বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে কিছু কিছু উঁচু স্থাপত্য নির্মিত হচ্ছে। এছাড়া আমরা দূষণমুক্ত জ্বালানী সম্পদ দিয়ে পরিবহন ব্যবস্থা উন্নত করতে এবং দূষণ নিঃসরণ কমাতে চাই। চীন এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে সৌদি আরবকে সাহায্য করছে। এর লক্ষ্য হচ্ছে প্রতিবছর ৫০ লাখ হজ্জযাত্রীকে সেবা দেয়া এবং চীনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা। চলতি বছর একটি দ্রুতগতির রেলপথ নির্মিত হবে। পরের তিন বছরে নির্মিত হবে আরো ৪টি রেলপথ।"
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |