|
সাংহাই বিশ্বমেলা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে আজ আমরা সাংহাইয়ের নিকটবর্তী—চীনের চিয়াংসু প্রদেশ দেখতে যাবো। আমরা এক সাথে সেখানে দক্ষিণ চীনের গভীর কাব্যিক ও ছবির মত দৃশ্যের আড়ম্বর অনুভব করবো।
মিং রাজবংশের শহর দেয়াল
চীনের পর্যটন বিভাগের তুলে ধরা 'ইয়াংসি নদীর বদ্বীপ এলাকার বিশ্বমেলা প্রসঙ্গ অভিজ্ঞতা ভ্রমণের' ৫৫টি লাইনে চিয়াংসু ১৩টি স্থান দখল করেছে। চিয়াংসু প্রদেশে আসলে প্রথমে আপনাকে রাজধানী নানচিং শহরকে দেখতে হবে। চীনের আধুনিক যুগের বিখ্যাত সাহিত্যিক জু জিছিং নানচিং ভ্রমণের পর 'নানচিং' নামের প্রবন্ধে এরকম মূল্যায়ন করেছেনঃ নানচিংয়ে বেড়ানো অ্যানটিক দোকান পরিদর্শনেরই মতো। প্রত্যেক জায়গায় যুগের নকশা কাটার ছাপ রয়েছে। আপনি অনুমান করতে পারেন, ভেবে দেখতে পারেন, এমনকি কল্পনাও করতে পারেন...এ সব থেকে প্রতিফলিত হয়েছে যে, নানচিং চীনের একটি ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের শহর।
প্লেন গাছ
চীনের ৪টি প্রাচীন নগর এবং ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বিখ্যাত শহর হিসেবে নানচিংয়ের ইতিহাস এক হাজার বছরেরও বেশি। নানচিং শহরে প্রবেশ করলে প্রথমে নানচিং মিং রাজবংশের শহর দেয়ালের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। দেয়ালটি ৬শ' বছরেরও আগে নির্মিত হয়। এখানে বর্তমানে ২৩ কিলোমিটারের বেশি দেয়াল অক্ষত রয়েছে। এটা বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ ও প্রাচীন দেয়াল। মিং রাজবংশের শহর দেয়ালের ভেতর ও বাইরে চলা আধুনিককাল এবং ইতিহাসে চলার মতো। এখানে চীনের প্রাচীন এবং প্রাণবন্ত সংস্কৃতি অনুভব করা যায়।
মাথৌ দেয়াল
নানচিং শহরে অনেক প্লেন গাছ চাষ করা হয়। গ্রীষ্মকাল আসার সময় সারা শহরটি গভীর প্লেন গাছের ছায়ায় ঢাকা পড়ে। এখানে আসলে কনফুসিয়া মন্দির এবং ছিনহুয়াই নদীর ছবির মত দৃশ্য উপভোগ না করে পারা যাবে না। পথপ্রদর্শক শেং ছিনহুয়াই নদীর দু'তীরের স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন,
আপনারা মনোযোগ দিয়ে নদীর দু'তীরের স্থাপত্য দেখুন। আমরা আবিষ্কার করবো যে, এখানকার স্থাপত্য হুই স্টাইলের। হুই স্টাইলের স্থাপত্যের প্রতিনিধিত্বকারী স্টাইল হচ্ছে স্টীল গ্রে রঙের ইট, ছোট টালি এবং মাথৌ দেয়াল। মাথৌ দেয়াল অর্থাত উপরে উঁচু ও ঝুঁকে পড়া বিশিষ্ট দেয়াল কোণ। তা দেখতে সুন্দর। পাশাপাশি এটা খুব ব্যবহারিক। এর কাজ হলো আগুণ প্রতিরোধ। ছাদের ছোট টালি আমাদের ব্যবহৃত ছোট বাটির চেয়েও ছোট। এর ভূমিকা হলো শীতকালে উষ্ণ এবং গ্রীষ্মকালে ঠাণ্ডা রাখা।
কনফুসিয়াস মন্দির
কনফুসিয়াস মন্দির হচ্ছে চীনের প্রাচীনকালের মহান চিন্তাবিদ ও শিক্ষাবিদ কনফুসিয়াসের প্রতি নৈবেদ্য ও শ্রদ্ধা নিবেদনের মন্দির। এর ইতিহাস ১ হাজার বছরেরও বেশি।
ছিনহুয়াই নদী হচ্ছে নানচিংয়ের মাতৃ নদী। নদীর দু'তীরে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান রয়েছে। এতে নানচিং শহরের ২ হাজার বছরেরও বেশি ইতিহাস ও সংস্কৃতি উন্নয়নের প্রক্রিয়া রয়েছে। এটি হলো নানচিং ইতিহাসের সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র। তা নানচিংয়ের সমৃদ্ধির প্রতিনিধিত্ব করে।
ছিনহুয়া নদী
রাতে ছিনহুয়া নদী ভ্রমণ করা নানচিংয়ের বৈশিষ্ট্যময় নমুনায় পরিণত হয়েছে। ছিনহুয়া নদীর তীরে ঐতিহাসিক বাগান—জান ইউয়ান বাগান এবং বাইলুচৌ পার্ক, চীনের প্রাচীনকালের বৃহত্তম রাজকীয় পরীক্ষার স্থান—চিয়াং নান কোং ইউয়ান এবং প্রাচীনকালের অনেক বিশিষ্ট লেখকের পুরনো বাসস্থান রয়েছে। এ সব বিখ্যাত বাস ভবন বা পার্ক ছিনহুয়া নদীর তীরে এক একটি মুক্তার মতো।
রাতের ছিনহুয়া নদী
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |