|
পথপ্রদর্শক আরো বলেছেন, পাথরের তিনটি স্মৃতিফলকেই পৃথক পৃথকভাবে মান, হান, মঙ্গোলিয়া ও তিব্বতসহ চার ভাষায় খোদাই করা রয়েছে। সামনে দিকে লিপিবদ্ধ রয়েছে মান ভাষায়। বাম ও ডান দিকে পৃথক পৃথকভাবে মঙ্গোলিয়া ও তিব্বতী ভাষায়। পিছন দিকে রয়েছে হান ভাষা। এটা মাতৃভূমির ঐক্য ও সংহতির প্রতীক।
আরো সামনে গেলে, বিভিন্ন আকারের পাথরের ধাপ একটার পর একটা উঁচু। চোখের সামনে ভেসে উঠবে বিরোচিতভাবে মন্দিরের ভিত্তি—সাদা প্রাঙ্গন এবং লাল প্রাঙ্গন। প্রাঙ্গনের উচ্চতা ৪৩ মিটার এবং এর দুটো অংশ আছে। নিচের অংশ হচ্ছে মূল প্রাঙ্গন। কারণ স্থাপত্যটির রঙ সাদা, তাই একে সাদা প্রাঙ্গন বলে গণ্য করা হয়। লাল প্রাঙ্গন হচ্ছে সাদা প্রাঙ্গনের ওপরে নির্মিত মন্দিরের প্রধান স্থাপত্য। পাহাড়গুলোর প্রেক্ষাপটে সাদা প্রাঙ্গন এবং লাল প্রাঙ্গনে দৃঢ় ও গভীর দেয়ালের মত এক ধরনের জলদ-গম্ভীর সৌন্দর্য্য দেখা যায়। এর শৈল্পিক প্রভাব শক্তিশালী।
লাল প্রাঙ্গনের মাঝখানে ৬টি বিভিন্ন রঙের ঝকমকে কাঁচের বুদ্ধ কুলুঙ্গি রয়েছে। কুলুঙ্গির ভেতরে একটি বড় ওয়ানশৌ বুদ্ধ এবং অনেক ছোট ওয়ানশৌ বুদ্ধ খোদাই রয়েছে। লাল প্রাঙ্গনের মাঝখানে রয়েছে ওয়ান ফা কুই ই প্রাসাদ।
ওয়ান ফা কুই ই প্রাসাদ হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান আয়োজন অথবা ছিং রাজবংশের সম্রাটের গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যালঘু জাতির প্রধান এবং রাজকীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাত করার স্থান। প্রাসাদের ঠিক মাঝখানে দেবতার মূর্তি উত্সর্গিত করা রয়েছে। পর্যটকরা চোখ তুলে সীলিং-এর দিকে তাকালেই বৈশিষ্ট্যময় স্থাপত্য শৈলীর নান্দনিক দৃশ্য দেখতে পাবেন। পথপ্রদর্শক বলেন,
স্থাপত্য শৈলীর বিষয়বস্তু হলো ড্রাগন মুক্তা খেলা। তা সম্রাট ছিয়াংলোং-এর দেশকে একীভূত করার প্রতীক। স্থাপত্য শৈলী কাঠ দিয়ে তৈরী এবং কাঠের বাইরে স্বর্ণের আবরণে ঢাকা। স্থাপত্য শৈলীর নিচে একটি বৈচিত্রময় নকশাঁ-খচিত ঢাকনা ঝোলানো রয়েছে। সেটা হল সে বছর তার মায়ের প্রতি দীর্ঘায়ূ কামনা করার জন্য সম্রাট ছিয়াংলোং কারুশিল্পীকে স্বর্ণ ও রৌপ্য সুতা দিয়ে বানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। ঢাকনাটিতে পশ্চিমা স্বর্গের বর্ণনা রয়েছে।
মিস ছেন হচ্ছেন সিঙ্গাপুরের মানুষ। তিনি পু থুও জোং ছেং মন্দিরে ভ্রমণ করতে এসেছেন। কারণ, তার কাজ স্থাপত্যের সঙ্গে সম্পর্কিত। পু থুও জোং ছেং মন্দিরটির স্থাপত্য স্টাইলের ওপর বিশেষ আগ্রহ নিয়ে দেখেছেন। তিনি বলেন,
আমি পোতালা প্রাসাদে যাই নি। কমপক্ষে এখানে তো দেখা হলো। এখানে আসলে তার প্রাথমিক ছাপ আমার মনে পড়ে। ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে পোতালা প্রাসাদ দেখতে যাবো। সাধারণত আমি স্থাপত্য দেখতে যাই। কারণ স্থাপত্য আমার কাজ। আগের মানুষেরা ছিল খুবই বৈশিষ্ট্যময়। হাত দিয়ে তারা এ ধরনের স্থাপত্য নির্মাণ করতে পারতেন। এটা বিশ্বাস করা যায় না। ছেংতে হোক অথবা পেইচিং হোক। আমার মনে হয় চীনা মানুষেরা খুবই চমত্কার।
পু থুও জোং ছিং মন্দির তার বৈশিষ্ট্যময় অবস্থান এবং স্থাপত্যের স্টাইল চীনের মন্দিরগুলোর মধ্যে অদ্বিতীয়। সুযোগ পেলে, আপনারাও অবশ্যই ছেংতে-এ এসে নিজ চোখে এই রাজকীয় মন্দিরের শ্রীমণ্ডিত ভঙ্গিমা দেখে যেতে পারেন।
![]() |
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |