Web bengali.cri.cn   
পু থুও জোং ছেং মন্দির
  2010-01-26 16:39:43  cri

 

    উত্তর চীনের হোপেই প্রদেশের ছেংতে শহরে তিব্বতের 'পোতালা প্রাসাদ'-এর মত একটি তিব্বতী বৌদ্ধ ধর্মীয় মন্দির—পু থুও জোং ছেং মন্দির রয়েছে। মন্দিরের আকার তিব্বতের পোতালা প্রাসাদের প্রায় অর্ধেকের মত হওয়ার কারণে স্থানীয় অধিবাসীরা তাকে 'ছোট পোতালা প্রাসাদ' বলে গণ্য করেন। আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদের সঙ্গে ছিং রাজবংশের রাজকীয় তিব্বতী বৌদ্ধ ধর্মীয় মন্দির পরিদর্শন করবো। আমরা এক সাথে হান ও তিব্বত জাতির স্থাপত্যের স্টাইলে তৈরী এ প্রাসাদটি ঘুরে ঘুরে দেখবো ও উপভোগ করবো।

    পু থুও জোং ছেং মন্দির ২ শতাধিক বছর আগের ছিং রাজবংশের সম্রাট ছিয়ানলৌং আমলে নির্মিত হয়। ২০ হেকটরেরও বেশি ভূমিতে প্রধানত মন্দিরের বড় দরজা, পাথরের-স্মৃতিফলক প্যাভিলিয়ন, মন্দিরের পাঁচটি তোরণ এবং বিভিন্ন রঙের ঝকমকে কাঁচের তোরণসহ অনেক দর্শনীয় বস্তু রয়েছে।

    পু থুও জোং ছেং মন্দির এই নামটির তিব্বতী ভাষার অর্থ হলো 'পোতালা প্রাসাদ'। এর সামগ্রিক কাঠামো তিব্বতের পোতালা প্রাসাদের অনুরূপ। তবে তা তিব্বতের পোতালা প্রাসাদের মত মহামাময় নয়। তাহলে পু থুও জোং ছেং মন্দির এবং তিব্বতের পোতালা প্রাসাদের মধ্যে পার্থক্য কি? পু থুও জোং ছেং মন্দিরের প্রশাসনিক বিভাগের কর্মকর্তা মাদাম ওয়েই উত্তরে বলেছেন,

    তাদের পার্থক্য প্রথম হলো আয়তনে, পু থুও জোং ছেং মন্দির তিব্বতের পোতালা প্রাসাদের চেয়ে অর্ধেকেরও ছোট। এছাড়া প্রধান স্থাপত্যে রয়েছে কিছুটা ভিন্ন আঙ্গিক। আকারেও অতো বেশি উল্লেখযোগ্য নয়। তৃতীয় পার্থক্য হল এটা রাজকীয় মন্দির। পোতালা প্রাসাদের মর্যাদার চেয়ে একটু উঁচু।

    মন্দিরের বড় দরজার মধ্য দিয়ে গেলে প্রথমে পর্যটকদের চোখের সামনে একটি হলুদ রঙের ঝকমকে কাঁচের টালি'র তৈরী চীনের ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যের তোরণ। তোরণের নিচে তিনটি দরজা, চারটি স্তম্ভ এবং আরো সাতটি ছোট তোরণ। এ ধরনের স্থাপত্য সে সময় খুবই জনপ্রিয় ছিল। তোরণটি পেইচিংয়ের পেইহাই পার্কের ছিয়োংহুয়া দ্বীপের সামনের স্যুইমিছুন তোরণের প্রায় সমান।

    তোরণে লেখা রয়েছে 'পু মেন ইং সিয়ান' এই চারটি অক্ষরই হল সম্রাট ছিয়াংলোংয়ের হাতের লেখা। এর অর্থ হলঃ সব প্রাণ আন্তরিকভাবে এই দরজা পার হয়ে ভেতরে গেলে ক্ষমতার দেবীর সঙ্গে দেখা হবে। ছিং রাজবংশে ঝকমকে রঙের কাঁচের তোরণ শ্রেণীর প্রতীক। নিম্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা তোরণের সামনে পর্যন্ত যেতে পারেন এবং ভেতরে ঢুকতে পারেন না।

    আরো সামনে গেলে দেখা যাবে পাথরের একটি স্মৃতিফলক প্যাভিলিয়নে আরো পাথরের তিনটি স্মৃতিফলক। এগুলোয় মন্দিরটির ইতিহাস লিপিবদ্ধ রয়েছে। পথপ্রদর্শক রেন থিয়ানহুই বলেন,

    আমরা দেখেছি যে পাথরের স্মৃতিফলক প্যাভিলিয়নে তিনটি পাথরের স্মৃতিফলক রয়েছে। মাঝখানের পাথরের স্মৃতিফলকটিতে মন্দির নির্মাণের কারণ এবং ঐতিহাসিক পটভূমি লিপিবদ্ধ রয়েছে। সম্রাট ছিয়াংলোং'র শাসনামলের ১৬ বর্ষের সময় ছিল ছিয়াংলোংয়ের ৬০তম জন্ম বার্ষিকী। এর দ্বিতীয় বছর ছিল তার মা'য়ের ৮০তম জন্ম বার্ষিকী। সে সময় তিব্বত, ছিংহাই, সিনচিয়াং ও মঙ্গোলিয়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলের সংখ্যালঘু জাতির রাজ পরিবার ও শীর্ষ নেতাকে ছেংতে শহরে গিয়ে অভিনন্দন জানাতে হতো। সম্রাট ছিয়াংলোং এ সব মহাসম্মেলনের ওপর অনেক গুরুত্ব দিতেন। তাদের তিব্বতী বৌদ্ধ ধর্মের পূজারি বিবেচনা করে ছিয়াংলোং তিব্বতের পোতালা প্রাসাদের নমুনা অনুযায়ী পু থুও জোং ছেং মন্দিরটি নির্মাণের আদেশ দেন। আকারে ছোট হলেও একে ছোট পোতালা প্রাসাদ বলেই গণ্য করা হয়।


1 2
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040