Web bengali.cri.cn   
ছেংতু-এ অতিকায় পান্ডাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ
  2009-12-29 17:44:54  cri

    যদিও এখন ঠাণ্ডা শীতকাল চলছে। তবুও প্রতিটি পান্ডার বাসস্থানে তাদের ছায়া দেখা যায়। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ধীরে ধীরে গাছ উঠছে। কেউ কেউ অন্য পান্ডাদের আলিঙ্গন করছে। দেখতে খুবই আদুরে। কোন কোন পর্যটক জিজ্ঞেস করেন যে, এতো ঠাণ্ডা শীতকালেও কেন পান্ডাদের ঠাণ্ডা লাগছে না এবং ঘরের বাইরে থাকছে? পথপ্রদর্শক হুয়াং চিয়ে'র ব্যাখ্যা শোনার পর সবাই এর কারণ বুঝেছেন। হুয়াং চিয়ে বলেন,

    শীতকাল পান্ডাদের প্রিয় আবহাওয়া। কারণ তাদের বাসস্থান সাধারণত সমুদ্রসমতল থেকে ১ হাজার ৫শ' থেকে ৩ হাজার ৪শ' মিটার উঁচু বাঁশ বনে অবস্থিত। সারা বছরই সেখানকার তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকে। পান্ডাদের স্হূল চামড়া আছে। তা কার্পাস তুলার কাপড়ের মতো। এছাড়া তাদের চামড়ায় ঘাম হয় না। সুতরাং, তাদের ঠাণ্ডা লাগে না। তাই সবচেয়ে বেশি ঠাণ্ডার শীতকালেও পান্ডারা শীতঘুমে আচ্ছন্ন থাকে না। তারা বাইরে গিয়ে খাবার খুঁজে বের করে।

    অনেক বন্ধুরা মনে করেন, খাবার বেশি খাওয়া এবং বেশি ঘুম কাতুরে হওয়া পান্ডাদের মোটা হওয়ার প্রধান কারণ। খেলার সময় অনেক পর্যটকরা এই বিষয়টি আবিষ্কার করেছেন। এ সব মোটা বন্ধুরা মাটিতে শুয়ে কিছু বাঁশকে দিয়ে নিজের গা ঢেকে দিতে পছন্দ করে। ফলে তারা 'একাগ্রচিত্তে' সুস্বাদু খাবার খেতে পারে। পথপ্রদর্শক হুয়াং চিয়ে বলেছেন, প্রতি দিন পান্ডারা ১৬ ঘন্টারও বেশি সময় নিয়ে খাবার খায় বা খাবার খুঁজে বের করে। বাকী ৮ ঘন্টা ঘুমায়। কেউ কেউ জিজ্ঞেস করবেন যে, পান্ডাদের খাবার খাওয়ার সময় কেন এত বেশি? এক দিনে তারা কত বাঁশ খেতে পারে?

    আসলে ৮০ লাখ বছর আগে, পান্ডা মাংসাশী প্রাণী ছিল। পরে বিবর্তনের প্রক্রিয়ায় পান্ডারা মাংসাশী থেকে ভেজিটারিয়ান হিসেবে বাঁশকে খাবার হিসেবে বাছাই করলো। তবে তারা মাংসাশী প্রাণীর পাচনতন্ত্র বজায় রেখেছে। সুতরাং অব্যাহতভাবে খাবার খাওয়ার মধ্য দিয়ে পুষ্টি নিশ্চিত করা এবং তত্পরতা কমানোর মধ্য দিয়ে শক্তিকে বজায় রাখা ব্যবস্থাও ধরে রাখলো। পথপ্রদর্শক হুয়াং চিয়ে বলেন,

    পান্ডা প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ কেজি বাঁশ খায়। তবে শুধু এর মধ্যে ১৭ শতাংশ সে হজম করে ফেলে। তার মানে দশ-বার কেজি বাঁশ সরাসরি দেহ থেকে বর্জ্যপদার্থ হিসেবে বেড় হয়ে যায়। সুতরাং পান্ডাদের একটানা খাওয়ার মধ্য দিয়ে আরো বেশি পুষ্টি অর্জন করার পাশাপাশি দৈনন্দিন তত্পরতা কম হলেও শক্তি বজায় থেকে যায়।

    হুয়াং চিয়ে বলেছেন, আসলে পান্ডা এক ধরনের খুব চতুর প্রাণী। তারা ভালোভাবে জানে কোন ঋতুতে কি ধরনের বাঁশ সবচেয়ে সুস্বাদু এবং বাঁশের কোন অংশ সবচেয়ে টাটকা। সুতরাং পান্ডা প্রজননবিদরা প্রতিটি পান্ডাদের বাছাই করার জন্য প্রতিদিন ৫০ কেজি বাঁশ প্রস্তুত রাখেন।

    কৃত্রিমভাবে পান্ডা লালন-পালনের কাজ পান্ডা কেন্দ্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। বিশেষ চাহিদার কারণে শিশু পান্ডাদের কক্ষ উন্মুক্ত করা হয় না। পর্যটকরা বাইরে থেকে জানালার মাধ্যমে পান্ডাদের দেখতে পারেন। হুয়াং চিয়ে বলেছেন, সাম্প্রতিক সাসগুলোতে শিশু কক্ষের জানালার বাইরে পর্যটকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

    হুপেই প্রদেশের পর্যটক চাং মান বলেছেন, তিনি বিভিন্ন শহরের চিড়িয়াখানায় অনেক বয়স্ক পান্ডা দেখেছেন। তবে এতো ছোট্ট পান্ডা তিনি এই প্রথমবারের মতো দেখলেন। তিনি বলেন,

    আগে আমরা চিড়িয়াখানায় অতিকায় পান্ডা দেখেছি। এখানকার পান্ডারা আরো প্রাণশক্তিসম্পন্ন। এবার আমরা সবেমাত্র জন্ম হওয়া ছোট্ট পান্ডার পাশাপাশি বয়স্ক পান্ডাও দেখেছি। এখানকার পান্ডা সংরক্ষণ কাজ খুব নিখুঁত। পান্ডারা খুব আদুরে।

    মার্কিন পর্যটক জর্ডান মারিউমা সারাটা সকাল বৃহদাকার পান্ডা পার্কে ঘুরে বেড়িয়েছেন। তিনি ২০টিরও বেশি পান্ডা দেখেছেন। তিনি বলেন,

    অতিকায় পান্ডা খুবই সুন্দর। খুব খুশি লাগছে যে চীনে পান্ডাদের খুব ভালো যত্ন নেয়া হয়। আজ আমি প্রথমবারের মতো পান্ডা দেখেছি। পান্ডারা খুব তুলতুলে। তাকে ভালোবাসবো না তা কি হয়? 


1 2
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040