Web bengali.cri.cn   
সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখা হো শুন গ্রন্থাগার
  2012-02-01 14:46:13  cri

চীনের ইয়ুন নান প্রদেশের থোং ছোং চেলার হো শুন মহকুমায় প্রাচ্য ও পাশ্চাতের স্থাপত্যকর্মের বৈশিষ্ট্যসমৃদ্ধ একটি ভবন রয়েছে। একজন পথনির্দেশক এখানকার ইতিহাসের সঙ্গে পর্যটকদেরকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেন। প্রাচীন ডেস্ক ও চেয়ার মানুষকে জানান দিচ্ছে, এটি হচ্ছে চীনের সবচেয়ে প্রাচীন ও বৃহত্তম গ্রামীণ গ্রন্থাগার, অর্থাত্ হো শুন গ্রন্থাগার।

হো শুন হচ্ছে এমন একটি জায়গা যেখানকার অধিকাংশ মানুষ প্রবাসে থাকেন। সেখানে স্থায়ী বসবাসকারীর সংখ্যা ছ' হাজারের কিছু বেশি হলেও ১৮ সহস্রাধিক অধিবাসী বিদেশে বাস করেন। তাদের বেশিরভাগ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে অবস্থান। উনিশ শ' আটাশ সালে মিয়ানমার প্রবাসী চীনারা জন্মস্থানের সংস্কৃতি ও শিক্ষা খাতের উন্নয়নে অর্থ দিয়ে একটি ছোট পাঠাগার স্থাপন করেন। তারপর এই ছোট পাঠাগার মহকুমার বাসিন্দাদের চাহিদা মেটাতে পারছে না দেখে আরো অনেক প্রাবাসী চীনা ও চীনা বংশোদ্ভূত বিদেশিরা প্রচুর বই কিনে একটি গ্রন্থাগার নির্মাণ করেন। সেটিই হলো এখনকার হো শুন গ্রন্থাগার। তখন হো শুনের প্রবাসীরা আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য করতেন এবং ঘোড়ার বহরে মালামালের পরিবহন করতেন। তাঁরা হো শুনের সংস্কৃতি ও শিক্ষা খাতের উন্নয়নে গ্রন্থাগার নির্মাণ করেন।

এ গ্রন্থাগারের মহাপরিচালক ছুন ইউ আমাদের সংবাদদাতাকে ব্যাখ্যা করেন,

'এটা হচ্ছে গণঅধ্যয়নকক্ষ। সাধারণত মহকুমার মানুষেরা এখানে বই ও পত্রিকা পড়েন। এখানে মোট ৪১ ধরনের পত্রিকা ও একশ'রও বেশি সাময়িকী রাখা হয় এবং আট হাজারেরও বেশি বই আছে।'

ছুন ইউ আরো বলেন, অধ্যয়নকক্ষ হলো গ্রন্থাগারের কেন্দ্রীয় স্থান। গ্রন্থাগারের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর ৮০ বছর পেরিয়ে গেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পর্যটকদের সংখ্যা বাড়ার কারণে এখানে স্থান সংকুলান হচ্ছে না। তাই আমরা গ্রন্থাগারের পাশে নতুন করে অধ্যয়নকক্ষ নির্মাণ করি। ভবিষ্যতে আমরা বাইরে অধ্যয়ন এলাকা নির্মাণ করবো। ফলে সবাই ফুল বাগানে বই ও পত্রিকা পড়তে পারবেন।

গত শতাব্দীর চল্লিশের দশকে চীনের জাপানি আক্রমণ প্রতিরোধ যুদ্ধকালে মিয়ামারে একজন চীনা প্রবাসী হো শুন গ্রন্থাগারকে একটি রেডিও দেন। গ্রন্থাগারের কর্মীরা প্রতিদিন রেডিওয়ের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি খবর শুনে তারপর লিখে প্রিন্ট করে বিভিন্ন সংস্থায় বিতরণ করতেন। জাপানের আত্মসমর্পনের খবর প্রথমে হো শুন গ্রন্থাগার এবং তারপর এই গ্রন্থাগার বার্তার মাধ্যমে হো শুনের প্রত্যেকটি পরিবারে ছড়িয়ে পড়ে। তখন হো শুন গ্রন্থাগার বই পড়ানো ও বই ধার দেওয়ার ভূমিকা ছাড়িয়ে সেখানে তথ্যমাধ্যমের ভূমিকাও পালন করতো।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হো শুন গ্রন্থাগার বিখ্যাত হয়ে ওঠার প্রেক্ষাপটে অনেক প্রকাশনালয় ও লেখক এই গ্রন্থাগারে বই দান করছেন। তা ছাড়া, তারা অর্থ ও আনুসঙ্গিক ক্ষেত্রেও হো শুন গ্রন্থাগারকে সমর্থন দিয়ে আসছেন। বিদেশে চীনা প্রবাসী ও চীনা বংশোদ্ভূত বিদেশিদের আর্থিক সাহায্য কখনও থামেনি।

ইন্টারনেট প্রযুক্তির অব্যাহত উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে হো শুন গ্রন্থাগারে ইলেক্টোনিক অধ্যয়ন এলাকাও নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে ২০টি কম্পিউটারে ইন্টারনেটে যাওয়া যায়। বৈচিত্র্যময় তথ্য হো শুন বসবাসীদেরকে আরো বেশি জ্ঞান যুগিয়েছে। বর্তমানে হো শুন গ্রন্থাগার বই পড়ানো ও ধার দেওয়ার ঐতিহ্যবাহী ভূমিকা পালন ছাড়াও, গ্রামাঞ্চলের বিজ্ঞানসম্মত ও সাংস্কৃতিক বিনির্মাণের দায়িত্বও পালন করে। এখানে আয়োজিত চাষাবাদ ও পশুপালন সম্পর্কিত এক-একটি আলোচনাসভা অধিবাসীদের জ্ঞান অর্জনের জানালায় পরিণত হয়েছে।

1 2
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040