|
বন্ধুরা, তিব্বতের না ছু অঞ্চল ছিংহাই-তিব্বত মালভূমির 'থাং কু লা' পর্বত, 'নিয়ান ছিং থাং কু লা' পর্বত ও 'কাং তি সি' পর্বতের মধ্যে অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এখানকার গড় উচ্চতা সাড়ে ৪ হাজার মিটারেরও বেশি। বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ মূলভূভাগের মাত্র ৪৮ শতাংশ। বছরে গড় তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে ৩ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। তবে প্রাকৃতিক পরিবেশের দিক থেকে এমন দুর্বল মালভূমিতে এক বলিষ্ঠ মানবফুল ফুটেছে। এ ফুল না ছু অঞ্চলের সামরিক এলাকার সেবিকা ফেং ইয়ান।
ফেং ইয়ান ১৯৯৮ সালে চীনের সি ছুয়ান প্রদেশের রাজধানী ছেং তু সামরিক অঞ্চলের এক চিকিত্সা বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছিলেন। সে সময় না ছু অঞ্চলে এক ভয়াবহ তুষার দুর্যোগ ঘটে। শীতের কারণে সেখানকার মানুষের হাত-পা নষ্ট হওয়া এবং দুর্গতদের চিকিত্সা ব্যবস্থার করুণ অবস্থা টেলিভিশনে দেখে ফেং ইয়ান ভীষণ মর্মাহত হন; তিনি সেখানে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। লেখাপড়া শেষে মূলভূভাগে বিখ্যাত হাসপাতালে কর্মসংস্থানের সুযোগ পিছনে ফেলে তিনি না ছু অঞ্চলে সামরিক বাহিনীর একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান সেবিকা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এ সম্পর্কে ফেং ইয়ান বলেন:
"লেখাপড়া শেষে কী হতো সে সম্পর্কে আমার ধারণা খুবই স্পষ্ট। আমার বাবা তাঁর সারা জীবন তিব্বতের মূলভূভাগে কাজ করেছেন। তিব্বতের দ্বিতীয় প্রজন্মের একজন হিসেবে আমিও তিব্বতে কাজ করি এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে আরও উচু স্থানে কাজ করি।"
ফেং ইয়ান সেখানে ১২ বছর কাজ করছেন। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সাড়ে ৪ হাজার মিটার উঁচু ভূমিকে চিকিত্সা মহলে 'জীবনের নিষিদ্ধ এলাকার নিষিদ্ধ এলাকা' বলে অভিহিত করা হয়। ফেং ইয়ানের সঙ্গে কাজ করতেন এমন দুজন সেবিকা প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে একসঙ্গেই সেখান থেকে বিদায় নেন। না ছু সামরিক শাখা অঞ্চলের চিকিত্সা বিভাগের মহাপরিচালক মা খুয়ান চুন বলেন:
"সেসময় আমি মাঝে মাঝে ফেং ইয়ানের সঙ্গে কথা বলতাম। আমি তাকে বলতাম, না ছু সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এতো উঁচু এলাকা এবং এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ এতো দুর্বল - কেন তুমি এ জায়গা ছেড়ে যাচ্ছো না? আমি যতবার জিজ্ঞেস করেছি, ফেং ইয়ান শুধু হেসেছে। মুখে কোনো কথা বলেনি।"
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |