|
বন্ধুরা, 'চীনকে জানুন, ইন্দোনেশিয়ার সফর' শীর্ষক জাতীয় সংগীত ও নৃত্য পরিবেশনার উদ্বোধন হয়ে গেলে সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তার কারতিনি ভবনে। চীনের 'তুং ফাং' শিল্পীগোষ্ঠী পরিবেশিত মনোজ্ঞ সংগীত ও নৃত্যের মধ্য দিয়ে স্থানীয় দর্শক-শ্রোতারা খুব কাছ থেকে চীনা সংস্কৃতির এক মহাসম্মিলনী উপভোগ করেন। আর এ অনুষ্ঠানের ভিতর দিয়ে 'চীনকে জানুন, ইন্দোনেশিয়ার সফর' সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমেরও সূচনা হয়। বন্ধুরা, আজকের সাংস্কৃতিক ঘটনা অনুষ্ঠানে আমরা এ বিষয় নিয়েই আলোচনা করবো।
আপনারা এইমাত্র শুনলেন ওই অনুষ্ঠানে চীনা তরুণ গায়ীকা হুও সি ইয়ুর গাওয়া ইন্দোনেশীয় ভাষার গান, 'চি চিন'-এর অংশবিশেষ। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সুসিলো বামবাং নিজে এ গানের সুর দিয়েছেন। গানটি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দর্শক-শ্রোতাদের করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে পরিবেশনা হল। অনুষ্ঠানে চীনের ছাও সিয়ান জাতি, মঙ্গোলিয়া জাতি ও তিব্বত জাতিসহ বিভিন্ন জাতির স্ববৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সংগীত ও নৃত্য পরিবেশিত হয়। এর মধ্য দিয়ে চীনা জাতির ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে 'চীনকে জানুন, ইন্দোনেশিয়ার সফরের' কার্যক্রমের প্রধান উদ্যোক্তা–চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের তথ্য কার্যালয়ের উপ-মহাপরিচালক ওয়াং চুং ওয়েই এবার কার্যক্রম আয়োজনের লক্ষ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ইন্দোনেশিয়ায় এবারের কার্যক্রম আয়োজন করা হচ্ছে চীন ও ইন্দোনেশিয়ার সাংস্কৃতিক বিনিময় তত্পরতার এক বড় ব্যাপার। দুমাস আগে চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও ইন্দোনেশিয়া সফর করেন। দুদেশের নেতারা পরস্পর প্রতি রাজনৈতিক আস্থা ও আর্থ-বাণিজ্যিক উন্নয়ন বেগবান করার কথা বলেন। এবারের কার্যক্রমে চীনা শিল্পীদের পরিবেশিত চীনা জাতির সংগীত ও নৃত্য, কুং ফু, চলচ্চিত্র ও ছবি প্রদর্শনীসহ ধারাবাহিক মনোজ্ঞ প্রদর্শনী ইন্দোনেশিয়ার জনগণকে আরও কাছ থেকে চীনা সংস্কৃতিকে উপলব্ধি করার এক উপযুক্ত সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন:
"সংস্কৃতি হচ্ছে মানবজাতির ক্রম অগ্রগতি অর্জনের শক্তি। এটা বিভিন্ন সভ্যতা ভাগাভাগি ও বিনিময়ের মাধ্যমে অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি অর্জনের এক গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। আশা করি, এবারের কার্যক্রমের মাধ্যমে চীনা জনগণ ও আসিয়ানের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও আস্থা গভীর হবে।"
এবারের কার্যক্রম চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের তথ্য কার্যালয়, জাতীয় বেতার, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র ব্যুরো, চীনা পররাষ্ট্র সমিতি, ইন্দোনেশিয়ায় চীনা দূতাবাস, চীনের শান তুং প্রদেশের চি নিং শহরের সি ছুই জেলা এবং ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে আর আসিয়ান সচিবালয়ের সহায়তায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। অবশ্য এবারের কার্যক্রমে ইন্দোনেশিয়া সরকারের ব্যাপক সহায়তাও পেয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার কল্যাণমন্ত্রী এবারের কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি মনে করেন, ইন্দোনেশিয়া সংস্কৃতির মধ্যে চীনা সংস্কৃতি রয়েছে। বর্তমানে দুদেশের সংস্কৃতি যৌথভাবে রক্ষা ও উন্নত করলে তা পরস্পরের ব্যবধান কমানোর জন্য সহায়ক হবে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন:
"সবাই জানেন যে, জনসংখ্যার দিক থেকে চীন হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম দেশ। চীনে সুদীর্ঘকালের সভ্যতাও রয়েছে। সুতরাং, পর্যটন উন্নয়ন ক্ষেত্রে চীন আরও বিরাট সুপ্তশক্তি সম্পন্ন জাতি। চীনের উন্নয়ন আরও উন্মুক্ত দৃষ্টিভংগি নিয়ে দেশটিকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরছে। বিশেষ করে এখন আরও বেশি চীনা পর্যটক ইন্দোনেশিয়া ভ্রমণ করে। পাশাপাশি অধিক থেকে অধিকতর বিদেশি পর্যটক চীন ভ্রমণে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। ইন্দোনেশিয়ার সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক সম্পদের মধ্যে চীনের জাতীয় সংস্কৃতি রয়েছে। হান জাতির সংস্কৃতি উন্নয়নের পাশাপাশি ইন্দোনেশিয়ার সংস্কৃতিও স্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। সুতরাং, আমাদের জাতীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা করা দরকার।"
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |