|
ইয়ুন নান শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস সুদীর্ঘকালের। প্রদেশের এক ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ইয়ুন নান শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন জাতির ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণা এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষা সহযোগিতা জোরদারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে লক্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে।
এবারের কর্মসূচির অংশ হিসেবে ইয়ুন নান শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ইয়াং লিন তাঁর বক্তব্যে বলেন:
"ভাষা যেমন মানবজাতির যোগাযোগের উপায়, তেমনি মানবজাতির চিন্তাভাবনার উপায়ও। সুতরাং, ভাষা মানবজাতির সংস্কৃতির এক গুরুত্বপূর্ণ বাহকও। এ থেকে বলা যায় যে, ভাষার বৈচিত্র্য রক্ষা করলে তা সংস্কৃতির বৈচিত্র্যকেই রক্ষা করে"।
এবারের কর্মসূচিতে চীনে ইউনেস্কোর প্রতিনিধি অফিসের প্রধান মিন বিস্টা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট কর্মসূচির উদাহরণ টেনে বহু ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষা ক্ষেত্রে ইউনেস্কোর অবদান তুলে ধরেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন:
"ভাষার বৈচিত্র্যের প্রক্রিয়া যৌথভাবে এগিয়ে নেয়ার জন্য ইউনেস্কোর শিক্ষা, সংস্কৃতি, প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, সমাজ ও মানব বিজ্ঞান এবং তথ্য ও প্রচার বিভাগ সক্রিয়ভাবে বিভিন্ন বিভাগীয় কর্মসূচি আয়োজন করে। বাস্তব থেকে স্পষ্ট যে, ভাষার বহুমুখিতা বাস্তবায়িত হলে আঞ্চলিক ভাষা, রাষ্ট্রীয় ভাষা ও আন্তর্জাতিক ভাষার সম্প্রীতিময় সহাবস্থান নিশ্চিত করা যায়। এর ফলে তাপারস্পরিক সম্মান, বিভিন্ন সংস্কৃতির সংলাপ ও অবিরাম উন্নয়নে অবদান রাখবে।"
তিনি আরো বলেন, শিক্ষা মাতৃভাষা রক্ষার ক্ষেত্রে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য তিনি চীনের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন:
"মাতৃভাষা শিক্ষা ক্ষেত্রে চীনের অবদান প্রশংসাযোগ্য। চীনের ভাষা নীতিতে অনুমোদিত যে, বিভিন্ন ভাষা অঞ্চলের মানুষ তার প্রথম ভাষা ও মাতৃভাষা ব্যবহার করতে পারে। এ ছাড়াও তারা দেশের রাষ্ট্রীয় ভাষাও রপ্ত করতে বাধ্য হয়।"
এবারের কর্মসূচিতে দেশি-বিদেশি পন্ডিত এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি ছাড়া চীনে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতরা উপস্থিত ছিলেন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ১৯৫২ সালে বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন থেকে সৃষ্ট। সুতরাং, বাংলাদেশিরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়। এবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুনশি ফায়েজ আহমেদ গভীর আবেগের সঙ্গে সকলকে বাংলাদেশের ওই অবিস্মরণীয় ইতিহাস অবহিত করেন। তাঁর বক্তব্যে মাতৃভাষা রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরা হয় এবং এ ক্ষেত্রে চীনের অর্জিত সাফল্যের প্রশংসা করা হয়। তিনি বলেন:
"ইউনেস্কো নির্ধারিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস থেকে অন্যান্য দেশের মতো চীনা জনগণ ও সরকার সবসময় খুব গুরুত্ব দিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ধারাবাহিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে আসছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সংক্রান্ত উদযাপনী অনুষ্ঠান হচ্ছে চীন সরকারের সব প্রচেষ্টার মধ্যে অন্যতম একটি।"
ইউনেস্কোর দ্বাদশ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কর্মসূচির সুষ্ঠু আয়োজনের মধ্য দিয়ে মাতৃভাষা রক্ষা ক্ষেত্রে বিশ্বের অনেক দেশের সঙ্গে চীনের সহযোগিতা ও বিনিময় জোরদার হয়েছে। --ওয়াং হাইমান
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |