|
শ্রোতাবন্ধুরা, আপনারা নিশ্চয়ই জানেন ২১ ফেব্রুয়ারি হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। জাতিসংঘ অঙ্গসংস্থা ইউনেস্কোর প্রস্তাবে ১৯৯৯ সালের সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে এ দিবস নির্ধারণ করা হয়।
সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের সমর্থক হিসেবে চীন সবসময় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ওপর গুরুত্ব দেয়। ২০০৬ সাল থেকে প্রতিবছর চীনের আন্তর্জাতিক শিক্ষা বিনিময় সমিতি, চীনে ইউনেস্কো প্রতিনিধি অফিস এবং জাতীয় ভাষা পরিষদের যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সংক্রান্ত উদযাপনী অনুষ্ঠান আয়োজিত হচ্ছে চীনে। চলতি বছরের ১৩ ও ১৪ মে চীনের ইয়ুন নান প্রদেশের রাজধানী খুন মিংয়ের ইয়ুন নান শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউনেস্কোর দ্বাদশ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনী অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। এবারের কর্মসূচির প্রধান প্রতিপাদ্য হচ্ছে 'বহুমুখী সংস্কৃতি, সম্প্রীতিময় চীন'। এর লক্ষ্য হচ্ছে সমৃদ্ধ চীনা সংস্কৃতি প্রচার করা এবং ভাষা ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্য রক্ষা করা। আচ্ছা বন্ধুরা, আজকের সাংস্কৃতিক বিনিময় অনুষ্ঠানে আমরা এ বিষয় নিয়েই আলোচনা করবো।
ইয়ুন নান প্রদেশের রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের ভাইস-চেয়ারম্যান জেং হুয়া এবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেয়ার সময় ভাষা রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন:
"ভাষা হচ্ছে মানবজাতি সভ্যতার প্রতীক। এটি মানবজাতির উত্তরাধিকার সংরক্ষণ ও উন্নয়নের সবচেয়ে শক্তিশালী উপায়ও। ভাষা ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্য বাড়ানোর লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সংক্রান্ত উদযাপনী অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। বিশ্বায়নের পটভূমিতে গোটা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং উন্নয়ন অর্জনের ক্ষেত্রে জাতীয় সংস্কৃতির বৈচিত্র্য রক্ষার বেশ গুরুত্বপূর্ণ তাত্পর্য রয়েছে। এটিও আমাদের সমাজতান্ত্রিক সমাজের সুষমতা গড়ে তোলার এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়"।
একই সঙ্গে তিনি বলেন, মাতৃভাষা রক্ষার তাত্পর্য ইতোমধ্যেই বিশ্বের এক মতৈক্যে পরিণত হয়েছে। ইয়ুন নান প্রদেশ পুরোপুরিভাবে সংখ্যালঘু জাতির বৈচিত্র্যময় সম্পদ ব্যবহার করে এই প্রদেশটির সমৃদ্ধ সংস্কৃতি বিশ্বকে প্রদর্শন করবে।
এবারের কর্মসূচির আয়োজক হিসেবে চীনের আন্তর্জাতিক শিক্ষা বিনিময় সমিতির মহাপরিচালক এবং চীনের সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী চাং সিন শেং উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনে বহু ভাষার সাম্য উল্লেখ্য করেন। তিনি বলেন:
"ভাষা সমস্যা আসলে একটি দেশের সংবিধানের মধ্যে প্রতিফলিত হয়, যা দেশের ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত। ভাষা সমস্যাও দেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতি থেকে রূপান্তরিত হয়। চীন গণপ্রজাতন্ত্র হচ্ছে এক বহু-জাতি দেশ। আমাদের এখানে জাতি ছোট হোক বা বড় হোক, তাদের জনসংখ্যা কম হোক বা বেশি হোক কিংবা তারা অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়ত অঞ্চল বা অনুন্নত যে অঞ্চলেই বাস করুক না কেন সবার অবস্থা সমান। এর মধ্যে ভাষার সাম্যও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চীন গণপ্রজাতন্ত্রের সংবিধানে সারা দেশে হান ভাষা ব্যবহার বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি বলা হয়েছে, বিভিন্ন জাতির নিজের ভাষা ও বর্ণ ব্যবহারের অধিকার রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হয়েছে যে, চীন বিভিন্ন জাতির ভাষার ওপর একই রকম গুরুত্ব আরোপ করে।"
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |