Web bengali.cri.cn   
'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' চীনের বহুমুখীসাংস্কৃতিক উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করছে
  2011-02-23 15:12:50  cri

এ বছরের ২১শে ফেব্রুয়ারি হচ্ছে দ্বাদশ 'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস'। প্রায় ২ শ' দেশি-বিদেশি বন্ধু এবারের উদযাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এর মধ্যে চীনে ইউনেস্কো কার্যালয়ের প্রতিনিধি, চীনের আন্তর্জাতিক শিক্ষা বিনিময় সমিতির মহাসচিব চিয়াং বো এবং চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতসহ দেশি-বিদেশী সংস্থার কর্মকর্তারা এবারের অনুষ্ঠানে অংশ নেন এবং বক্তব্য রাখেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফয়েজ আহমেদ বলেন:

"এবারের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আয়োজনকে খুবই সফল বলে মনে করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক ঘোষিত হয়। তারপর থেকে প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি এ উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আমি দেখেছি, বর্তমানে মাতৃভাষা দিবস শুধু বাংলাদেশী জনগণের নিজেদের দিবস নেই, চীনের আন্তর্জাতিক শিক্ষা বিনিময় সমিতিসহ চীনের বিখ্যাত শিক্ষা সংস্থাও প্রতি বছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সংক্রান্ত ধারাবাহিক কার্যক্রম আয়োজন করে।"

২১শে ফেব্রুয়ারিকে 'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' ঘোষণার এক গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হচ্ছে মানুষকে বিশ্বের বিভিন্ন জাতির মাতৃভাষা সংস্কৃতির অবস্থা জানতে সহায়তা করা এবং ভাষা ও সংস্কৃতির বহুমুখী উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন সরকার ভাষা সংস্কৃতি রক্ষা ক্ষেত্রে অনেক প্রচেষ্টা নিয়েছে। অনেক শিক্ষা সংস্থাও সক্রিয়ভাবে ভাষা রক্ষার অভিযানে যোগ দিয়েছে। চীনের আন্তর্জাতিক শিক্ষা বিনিময় সমিতি হচ্ছে তাদের মধ্যে অন্যতম একটি।

এ সমিতির মহাসচিব চিয়াং বো জানান, চীনের আন্তর্জাতিক শিক্ষা বিনিময় সমিতির কাজ হচ্ছে বহুপাক্ষিক ও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ভিত্তিতে সাংস্কৃতিক সহযোগিতা ও বিনিময় চালানো। ২০০৬ সাল থেকে চীনের আন্তর্জাতিক শিক্ষা বিনিময় সমিতি, পেইচিংয়ে ইউনেস্কো কার্যালয়, চীনে বাংলাদেশের দূতাবাস এবং পেইচিংয়ের কয়েকটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে 'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' সংক্রান্ত ধারাবাহিক কার্যক্রমের আয়োজন করে আসছে। সকল মাতৃভাষা এবং ভাষা ও সংস্কৃতির মধ্যকার সম্পর্ককে প্রতিবছরের মাতৃভাষা দিবস কর্মসূচির প্রধান প্রতিপাদ্য হিসেবে স্থির করা হয়। যেমন মাতৃভাষা শিক্ষা জোরদার করা, বহুমুখী সংস্কৃতি লালন করা, মাতৃভাষা রক্ষা করা, সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার হওয়া এবং যৌথভাবে সম্প্রীতিময় সমাজ গড়ে তোলা। এ সম্পর্কে মহাসচিব চিয়াং বো বলেন:

"এবারের কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে পুরোপুরিভাবে চীনের ভাষা রক্ষার সাফল্য তুলে ধরার আশাবাদ ব্যক্ত করে চীনের আন্তর্জাতিক শিক্ষা বিনিময় সমিতি। আমরা সংস্কৃতির বহুমুখিতা বজায় রাখার পক্ষপাতি; আমরাও মাতৃভাষার বৈচিত্র্যের পক্ষপাতি। এর ফলে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে চীনের প্রভাব বাড়বে। ভবিষ্যতে আমরা এ ধরনের আরও বেশি কার্যক্রম পরিচালনার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো। সংস্কৃতির বহুমুখিতা ও ভাষার বৈচিত্র্যের জন্য সহায়ক হয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে

এমন এক সম্প্রীতিময় পরিবেশ সৃষ্টি করবো।"

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সংখ্যালঘু জাতির ভাষা রক্ষা ক্ষেত্রে চীন সরকার অনেক উদ্যোগ নেয়। এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন সংখ্যালঘু জাতির ভাষায় শিক্ষাদান করা এবং সংখ্যালঘু জাতির ভাষা সংক্রান্ত মেধাস্বত্ব সেবা প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা। সংখ্যালঘু জাতির ভাষা রক্ষার মধ্য দিয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্কৃতিকে সম্মান করা এবং তার উত্তরাধিকার হওয়া সম্ভব হয়। এ সম্পর্কে মহাসচিব চিয়াং বো বলেন:

"চীন সরকার সংখ্যালঘুজাতি অঞ্চলে একসাথে হান ও স্থানীয় ভাষায় শিক্ষাদানে সহায়তা দেয়। এমন কি, কিছু কিছু সংখ্যালঘুজাতির ভাষা ও শব্দ সংরক্ষণও করা হয়। এ থেকে স্পষ্ট যে, চীন সরকার এর ওপর কত গুরুত্ব দেয়। বিশ্ব সংস্কৃতির বৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে ভাষাকে একটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি বলে মনে করা হয়। মাতৃভাষা সুষ্ঠুভাবে রক্ষা করলে সংস্কৃতির বহুমুখিতা ত্বরান্বিত করা সম্ভব হবে। এতে আমাদের বিশ্বও আরও সমৃদ্ধ হয়ে যাবে।"

'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের' তাত্পর্য হচ্ছে বহুমুখী সংস্কৃতির সম্প্রীতিময় উন্নয়নের গতিকে ত্বরান্বিত করা। এর সুষ্ঠু আয়োজন চীনা জনগণের মাতৃভাষা রক্ষার চেতনাকে উন্নত করেছে এবং বহুমুখী সংস্কৃতির অবিরাম উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণে এক বিনিময় ও সহযোগিতামূলক প্ল্যাটফর্ম সৃষ্টি করেছে। --ওয়াং হাইমান


1 2
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040