|
২১শে ফেব্রুয়ারি চীনে বাংলাদেশ দূতাবাস আনন্দঘন ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভরপুর হয়ে ওঠে। ইউনেস্কোর 'দ্বাদশ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' সংক্রান্ত উদযাপনী অনুষ্ঠান এখানে জাঁকজমকপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মনোগ্রাহী অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশী বন্ধুরা সমবেত হন। বাংলাদেশী বন্ধুদের জন্য ২১শে ফেব্রুয়ারি বিশেষ তাত্পর্যবহ। ১৯৫২ সালে বাংলাদেশের জনগণ বাংলাভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করেন। ওই বছরের ২১শে ফেব্রুয়ারি পাঁচ জন আন্দোলনকারী সরকারি বাহিনীর গুলিতে নিহত হন। তাঁদের স্মরণে বাংলাদেশে প্রতিবছর পালিত হয় ২১শে ফেব্রুয়ারি বা ভাষা শহীদ দিবস। ভাষার জন্য এ আত্মদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ২১শে ফেব্রুয়ারিকে 'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' হিসেবে ঘোষণা করে। সেই থেকে সারা বিশ্বে এ দিবসটি পালিত হচ্ছে ভাষার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের প্রতীকী দিবস হিসেবে।
পেইচিংয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসে এবারের উদযাপনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশী বন্ধু নাজিমুর বলেন:
"আজ শুধু ২১শে ফেব্রুয়ারি নয়, আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসও। সকলের জন্য এটি এক উদযাপনযোগ্য দিন। আমাদের উচিত এ পাঁচ শহীদকে ভালোভাবে স্মরণ করা; তাদেরকে সম্মান করা। প্রতিবছরে আমি নিশ্চয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তত্পরতায় অংশ নেবো।"
চীনে বাংলাদেশ দূতাবাসে সবাই কবিতা ও গানের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রতি নিজেদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। সবাই পরস্পরের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং শুভকামনা জানান। নানা পরিবেশনার মাধ্যমে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা বিভাগের তরুণ কর্মীরাও এবারের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানের দর্শক-শ্রোতারা তুমুল করতালির মধ্য দিয়ে সি আর আই'র তরুণ কর্মীদের পরিবেশনা উপভোগ করেন। বাংলাদেশী বন্ধু সুমি হাসিমুখে আবেগপূর্ণভাবে বলেন:
"আজকের অনুষ্ঠানটি খুবই চমত্কার! তোমরা খুবই সুন্দর গান গাইতে পারো। এ গানটিও আমার প্রিয়। আমি এটি খুব পছন্দ করি।"
পেইচিং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বাংলাদেশী তরুণ রাশেদুল ইসলামও এবারের উদযাপনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন। তিনি আমাদের সংবাদদাতাকে বলেন, চীনে বাংলাদেশ দূতাবাস সকলের জন্য এক উপযুক্ত সুযোগ সৃষ্টি করেছে। সেকারণে বিদেশের মাটিতেও নিজস্ব জাতির সংস্কৃতির স্বাদ গ্রহণ করতে পারা যাচ্ছে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন:
"এবার দূতাবাসে এসে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আয়োজনে অংশ নিতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। একই সঙ্গে আমি খুবই মুগ্ধ হয়েছি সি আর আই'র কয়েকজন চীনা বন্ধুর চমত্কার পরিবেশনা দেখে। আমি মনে করি, এটা এবারের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে প্রদান করা এক সুন্দর উপহার।"
![]() |
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |