|
মার্শালের সহকর্মী তাঁর জিহ্বা চেক করার পর তাঁকে জানান যে, তাঁর জিহ্বা ইতোমধ্যেই গোলাপী রঙের পরিবর্তে লাল রঙে পরিণত হয়েছে। এ থেকে স্পষ্ট যে, তাঁর জিহ্বায় এলার্জী দেখা দিয়েছে। অবশ্যই এটি ভাইরাস আক্রমনের পর গ্যাস্ট্রিক আলসার হওয়ার প্রাথমিক অবস্থা। মার্শাল বলেন:
"এ খবর শুনে আমি অনেক আনন্দিত হয়ে উঠি। কিন্তু এ খবরটি আমার স্ত্রীকে জানানোর পর তিনি আমাকে বললেন ' এখন তোমার দু'টি বাছাই আছে। একটি হচ্ছে তাড়াতাড়ি জীবাণু প্রতিরোধ ঔষধ খাওয়া। আরেকটি হচ্ছে তাড়াতাড়ি আমাদের বাসা থেকে চলে গিয়ে অন্য কোন জায়গায় বসবাস করা'"।
মার্শাল যেন একজন যাদুকরের মতো তিনি বিসমুথ দিয়ে তৈরী একটি ঔষুধ খেয়ে শরীরের অবস্থার উন্নতি ঘটান। গবেষণাগারে ব্যাপক পরীক্ষা নিরীক্ষা চালানোর পর শেষ পর্যন্ত তারা দু'জন ১৯৮৮ সালের শেষে দিকে প্রথমবারের মতো এর সাফল্য নিশ্চিত করেছেন। এর ফলে প্রমাণিত হয়েছে যে, হেলিকোবাকটার পাইলোরি ও গ্যাস্ট্রিক আলসারের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে।
এর পর থেকে আরও অনেক বিজ্ঞানী এ ক্ষেত্রে গবেষণার কাজে যোগ দেন। ১৯৯২ সাল পর্যন্ত সারা বিশ্বে মোট তিনটি গ্রুপে ব্যাপক ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা শুরু হয়। ' দি ল্যানসেট' ম্যাগজিনে এ দু'জনের প্রকাশিত প্রথম প্রবন্ধটির উপাত্ত ১৯৮৪ সালে সবাই ব্যবহার করেছিল ১৬বার। তবে ১৯৯৩ সালে তা ৭৬২বার ব্যবহার করা হয়েছে। ১৯৯৪ সালে মার্কিন জাতীয় স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে সবাই একমত হয়েছেন যে, হেলিকোবাকটার পাইলোরি হচ্ছে গ্যাস্ট্রিক আলসারের একটি প্রধান কারণ। এ সময় ' দি ল্যানসেট' ম্যাগজিনে এ দু'জনের প্রথম প্রবন্ধটি প্রকাশের পর ১০ বছর পার হয়ে গেছে।
এরও ১১ বছর পর অর্থাত্ ২০০৫ সালে তাঁরা শরীর বিজ্ঞানে নোবেল পদক পেলেন। এ সময় ব্যারি জে মার্শালের বয়স হলো ৫৪ বছর এবং রবিন ওয়ারেনের ৬৮ বছর।
হেলিকোবাকটার পাইলোরি শুধু মানুষকে আক্রান্ত করে। এ দিক থেকে দেখলে হয়তো মানবজাতির জন্য একটু দুর্ভাগ্যই বলা যায়। তবে ভাগ্যের ব্যাপার হচ্ছে ব্যারি জে মার্শাল ও রবিন ওয়ারেনের মতো অনেকেই এ ব্যাপারে তাদের গবেষণার কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য তত্পর রয়েছেন। তাদের সৃজনশীলতার মর্ম হচ্ছে মানবজাতি ও সমাজকে চিরদিন এগিয়ে নেয়ার অফুরাণ চালিকা শক্তি । --ওয়াং হাইমান
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |