|
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটার পর মার্কিন বাহিনী জাপানে ব্যাপকভাবে পেইচিং মানবের ফসিল খোঁজার প্রচেষ্টা চালিয়েছে ,কিন্তু তার সন্ধান মেলে নি।১৯৭২ সালে মার্কিন ধনকুবের জ্যানিস ঘোষনা করেন :কেউ পেইচিং মানবের ফসিলের সন্ধান পেলে তাকে মোটা অংকের পুরস্কার দেয়া হবে । অনেকে তাঁকে পেইচিং মানবের ফসিল সন্ধানের সুত্র যুগিয়েছে ,কিন্তু পরে সেই সবসূত্রে যা পাওয়া গেছে তা পেইচিং মানবের ফসিল নয় ।১৯৭০ সালে নিউইর্য়কের এক ভদ্র মহিলা টেলিফোনে পেইচিং মানবের ফসিল সন্ধানরত বৈজ্ঞানিক ক্রিসটফকে জানিয়েছেন যে , তাঁর স্বামী জীবদ্দশায় নাকী পেইচিং মানবের ফসিল সংরক্ষণের সংগে জড়িত ছিলেন । মহিলাটির দেয়া ছবি দেখে হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হয়েরসেরও বিশ্বাস জন্মল যে , এটা নিখোঁজ হওয়া পেইচিং মানবের ফসিলের ছবি । কিন্তু অনতিকাল পরেই ভদ্র মহিলার সংগে ক্রিসটফের যোগাযোগ ছিন্ন হয় ।১৯৯১ সালে মার্কিন নৌবাহিনীর অফিসার ঐতিহাসিক ব্রন দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময়ে পেইচিং মানবের ফসিল হারিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে দায়িত্বহীনতার অভিযোগে কারারুদ্ধ ডক্টর ফেরির কাছ থেকে যে একটি চিঠি পান তাতে ফেরি বলেছেন যে ,তিনি নাকি পেইচিং মানবের ফসিল সংরক্ষনকারী সেই মহিলার সংগে যোগাযোগ স্থাপন করেছেন । পেইচিং মানবের ফসিল নিখোঁজ হওয়ার রহস্য শিঘ্রই উদঘাটিত হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেছেন । কিন্তু পরিতাপের বিষয় যে ,১৯৯২ সালের বসন্তকালে ডক্টর ফেরি মারা যান ।
১৯৭০ সালের শেষ দিকে নিউইর্য়ক টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত চিকিত্সক ওয়েলিয়ামের একটি বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে যে ,তিনি নাকি পেইচিং মানবের ফসিল সম্পর্কিত তিনটি সুত্র পেয়েছেন : এক , পেইচিং মানবের ফসিল তিয়ানজিন শহরে তাঁর একজন বন্ধুর বাড়িতে থাকতে পারে ; দুই , পেইচিং মানবের ফসিল তিয়ানজিন শহরে ফরাসীদের পাসত গবেষনাগারে থাকতে পারে, তিন , পেইচিং মানবের ফসিল তিয়ানজিন শহরে সুইজ্যালান্ডের বালী ব্যাংকেও থাকতে পারে । তিয়ানজিন শহরের নিরাপত্তা বিভাগ খবর পেয়ে একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করে ।সেই তিনটি সুত্রে গভীরভাবে তদন্ত চালিয়ে জানা গেছে যে , তিনটে স্থানের কোথাও পেইচিং মানবের ফসিল নেই ।চীনের সাংস্কৃতিক বিপ্লব চলাকালে একজন লেখক রক্ত আর অশ্রুসিক্ত পুরনো সিয়েহো হাসপাতাল নামে যে একটি বই লিখেছেন তাতে বলা হয়েছে , পেইচিং মানবের ফসিল আদৌ বিদেশে পাঠানো হয় নি । কিন্তু পরে এই লেখকের পাত্তাও আর পাওয়া গেল না ।অনতিকাল পুর্বে চীনের নৃতত্ত্ববিদ চৌগুও সিং বহু বছর ধরে তদন্ত চালিয়ে একটি নতুন সুত্র আবিস্কার করেছেন : পার্ল বন্দরে জাপানের অতর্কিত আক্রমণ চালানোর দিনখানেক আগে মার্কিন দূতাবাস ও মার্কিন মেরিন বাহিনীর সদর দফতরের মাঝখানের একটি দরজার প্রহরী একদিন দেখেছে , দু জন লোক মার্কিন দূতাবাসের পেছনের আঙ্গিনার মাটির নীচে একটি বাক্স পুঁতেছে। পেইচিং মানবের ফসিল সম্ভবত: সেই বাক্সের ভিতরে ।চৌ গুও সিং মার্কিন দূতাবাসের পেছনের আঙ্গিনার ঠিকানা পেয়ে সেখানে ছুটে দিযে দেখলেন , তার উপর নতুন বাড়ি তৈরী হয়েছে , খননকাজ করা সম্ভব নয় ।
কয়েক দশক অতিবাহিত হল পেইচিং মানবের ফসিল হারিয়ে গেছে । এখনো তার কোনো খোঁজ খবর নেই । চীনের প্রয়াত প্রধান মন্ত্রী চৌ এন লাই জিবদ্দশায় বলেছিলেন: কয়েক জন চীনা পেইচিং মানবের ফসিল সংরক্ষণের জন্য কয়েক জন মার্কিনীর কাছে তা হস্তান্তর করেছিলেন । পরে তাঁরা পেইচিং মানবের ফসিল হারিয়েছেন । শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন বৈজ্ঞানিকদের তা খুঁজে পাওয়া উচিত ।
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |