|
১৯৫৪ সালে ১৮ বছর বয়সের সময় চাং সিয়েন লিয়াংয়ের নিজের স্কুল জীবন ত্যাগ করে বাবা মারা যাওয়ার পর পরিবারের সব দায়িত্বভার তাকেই গ্রহণ করতে হওয়ায় তার স্কুল জীবন পার করা সম্ভব হয় নি। আর্থিক টানা পোড়নের কারণে তিনি মা ও ছোট বোনকে নিয়ে পেইচিং থেকে নিং সিয়ার হো লান শানে চলে যান এবং সেখানেই বসবাস শুরু করেন। একমাত্র লেখাই ছিল তখন তার নিজের সৃজনশীল অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যমে বেঁচে থাকার সবচেয়ে উত্তম উপায়। নিয়মিত লেখার মধ্য দিয়ে তিনি অচিরেই দেশের বিখ্যাত তরুণ কবি হিসেবে পরিচিতি পেয়ে যান।
১৯৫৭ সালে চাং সিয়েন লিয়াং 'তা ফোং কো'নামে এটি একই সাথে তিনি প্রবন্ধ লিখেও তুমুল আলোড়নের সৃষ্টি করেন। কিন্তু চীনের সাংস্কৃতিক বিপ্লব শুরুর পর তিনি এই প্রবন্ধের বিষয় বস্তুর কারণে ইন ছুয়ান শহরের কাছাকাছি একটি শ্রম শিবিরে অনেকদিন বন্দী অবস্হায় থাকেন। পরে তিনি বিচ্ছিন্ন জীবন যাপন করতেন এবং তখনকার সামাজিক বাস্তবতার চাপের কাছে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিলেন। সে সময়ের কথা স্মরণ করে চাং সিয়েন লিয়াং নিজেকে কখনোই হতভাগ্য মনে করেন না। তিনি বলেন
আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। কারণ আমার মাতৃভূমির সঙ্গে আমার ভাগ্যও একই রকম। সেদিনগুলো আমার জীবনের সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক সময় ছিলো। ছিলো আমাদের জাতির সবচেয়ে দুঃখজনক সময়। আমি ছাড়া তখন অনেক কর্মকর্তা ও বুদ্ধিজিবী পরিবারই ভেঙ্গে যায়। তাদের মধ্যে অনেকেই স্বাধীনতা পরবর্তিকালে সমাজ থেকে হারিয়ে যায় বা মৃত্যুমুখে পতিত হয়। তাদের চেয়েতো আমি অনেক ভাগ্যবান বটেই।
২০ বছরেরও বেশি কষ্টকর জীবনের পর ১৯৭৯ সালে চাং সিয়েন লিয়াংয়ের জীবনে বসন্তকালের বাতাস বইতে শুরু করে। সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ নীতি চালু হওয়ার প্রাক্কালে শ্রম শিবিরে থাকাকালিন তিনি উপন্যাস লিখতে শুরু করেন। পত্র-পত্রিকায় তার তৃতীয় লেখা প্রকাশের পর পরই তাঁর জীবন ধারা পাল্টে যেতে শুরু করে। যে উপন্যাসটি চাং সিয়েন লিয়াংয়ের ভাগ্যের পরিবর্তন এনে দিয়েছে তার নাম হলো 'একজন বৃদ্ধ 'সিং' এবং তাঁর কুকুর'। প্রকাশের কিছুদিন পরেই বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক সিয়ে চিন তার উপন্যাসের গল্প অনুযায়ী 'বৃদ্ধ ও কুকুর'নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন।
![]() |
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |