Web bengali.cri.cn   
কবিগুরু দু ফু ও তাঁর কবিতা
  2010-06-23 11:21:46  cri

চীনের সাহিত্যের ইতিহাসে বিশ্ব বিখ্যাত কবি লি পাই ও কবিগুরু দু ফুকে থাং রাজত্বকালের(৬১৮-৯০৭) দুজন প্রতিনিধিত্বকারী কবি বলে আখ্যায়িত করা হয় ।

  দু ফু খ্রীষ্টীয় ৭১২ অব্দে জন্ম গ্রহণ করেন । তিনি নামকরা কবি দু সেন ইয়ানের নাতি । শিশু বয়সেই দু ফু অত্যন্ত বুদ্ধিমান ছিলেন ,পড়াশোনায় তাঁর আগ্রহের অন্ত ছিল না । সাত বছর বয়সে তিনি কবিতা লিখতে শুরু করেন। বড় হয়ে তিনি চিত্রাঙ্কন , লিপিকলা , সংগীত , অসি-চালনা ও  অশ্ব চালনায়  পারদর্শী হয়ে উঠেন । তরুণ বয়সে নিজের প্রতিভার উপর দুফুর অগাধ আস্থা ছিল ।১৯ বছর বয়সে মনে উচ্চাকাংক্ষা নিয়ে সারাদেশে ভ্রমণ করে তার রোমান্টিক জীবনযাত্রা আরম্ভর হয় । তখন ছিল থাং রাজবংশের সমৃদ্ধিশালী সময়পর্ব । বহু প্রসিদ্ধ পর্বত আর নদী ভ্রমণ করে তার প্রচুর জ্ঞান অর্জিত হয় ।ভ্রমণকালে তিনি থাই পর্বত দর্শন নামক যে কবিতা লিখেছিলেন তার দুটো পঙক্তি:"সর্বোচ্চ শৃঙ্গে উঠলে , সমস্ত পর্বত পায়ের নীচে দেখা যায়" ,যুগ যুগ ধরে চীনাদের মুখে মুখে শোনা যায় ।

অসংখ্য বুদ্ধিজীবীর মত দু ফুও রাজকর্মচারী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন । তিনি বছরের পর বছর রাজপরীক্ষা দিতেন এবং সমাজের হোমরাচোমরাদের নামে তাঁর কাব্য উত্সর্গ করতেন ।কিন্তু আপ্রাণ চেষ্টা করলেও তাঁর রাজকর্মচারি হওয়ার স্বপ্ন পূর্ণ হলো না । প্রৌঢ় বয়সে তিনি রাজধানী ছাং আনে আর্থিক কষ্টে অসহনীয় জীবন যাপন করেছেন । সম্ভ্রান্ত রাজকর্মচারীদের বিলাসী জীবন ও হাড়কাঁপানো শীতে অনাহারে মরে যাওয়া গরীবদের লাশ দেখে তিনি লিখেছিলেন দুটো মর্মস্পর্শী শ্লোক:লাল দরজার অন্তরাল থেকে ভেসে আসে পঁচা মাংস ও মদের দুর্গন্ধ,পথের ধারে পড়ে আছে আড়ষ্ট মরদেহ । রাজকর্মচারীপদ না পাওয়ার হতাশায় এবং জীবনকৃচ্ছতায় দুফু শাসকদের অনাচার ও জনসাধারণের দুর্গতির উপর নজর রেখে ক্রমে ক্রমে জনহিতৈষী কবিতে পরিণত হন ।

  

খ্রীষ্টীয় ৭৫৫ অব্দে ৪৩ বছর বয়সী দু ফু দৈবক্রমে একজন সাধারণ রাজকর্মচারী হওয়ার সুযোগ পান । কিন্তু মাত্র একমাস পর যুদ্ধ বাঁধে । যুদ্ধ চলাকালে দুফু ঘন ঘন স্থানান্তরিত হতেন এবং অসহ্য কষ্ট সহ্য করতেন । বাস্তব সমাজের স্বরূপ পরিস্কারভাবে দেখতে পেয়ে তিনি 'সি হাও গ্রামে সৈন্য সংগ্রহ ', ' তংগুয়ান দুর্গে জেনারেলের সঙ্গে দেখা ' , 'সিন আনে নতুন সৈন্যদের যাত্রা ' , ' বর-কন্যার বিরহ' ' স্ত্রীর কাছ থেকে বৃদ্ধ সৈন্যের বিদায় নেয়া' , 'পুনরায় যুদ্ধক্ষেত্রে যাওয়ার মুখে পুরনো সেনার হাহাকার' প্রভৃতি যে কবিতা লিখেন তাতে জনগণের প্রতি গভীর মমত্ববোধ ও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রতিভাত হয়েছে ।

1 2
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040