|
খ্রীষ্টীয় ১৩৬৮ অব্দে জু ইউয়ান জুয়াং চীনের তvকালীন রাজধানী নানজিং শহরে সিংহাসনে আরোহন করেন এবং মিং রাজবংশ স্থাপন করেন ।তিনি ৩১ বছর ধরে ক্ষমতায় ছিলেন ।তিনি যতদুর সম্ভব কেন্দ্রীয় সামন্ততান্ত্রিক একনায়কত্ব জোরদার করেছিলেন । সিংহাসন পাকাপোক্ত করার জন্য তিনি নানা অজুহাতে কীর্তি স্থাপনকারী জেনারেল ও মন্ত্রীদের নিধন আর নির্বিচারে ভিন্নমত অবলম্বনকারীদের হত্যা করার আদেশ দেন এবং রাজপরিবার বিরোধী শক্তি দমন করেন । তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর নাতি সম্রাট চিয়ান ওয়েন সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন।পরে সম্রাট চিয়ান ওয়েনের চাচা জুদি সৈন্যবাহিনী পরিচালনা করে তাঁকে পরাজিত করে সিংহাসন অধিকার করেন ।১৪২১ সালে রাজধানী পেইচিংয়ে স্থানান্তরিত হয় ।
মিং রাজবংশীয় আমলে কেন্দ্রীয় একনায়কত্ব জোরদার করা হয়েছে বটে ,তবে সম্রাটদের মধ্যে কেউ নির্বোধ ,কেউ বালক বলে রাজসভা নিয়মিত বসত না । রাজশক্তি পড়েছে খোজাদের খপ্পরে । দুর্নীতিপরায়ন খোজারা ঘুষ খেতেন এবং সত্যবাদী রাজকর্মচারীদের অন্যায় অত্যাচার করতেন ,ফলে শাসন ব্যবস্থা কলুষিত হয়ে উঠে এবং সামাজিক দ্বন্দ্ব তীব্র আকার ধারণ করে । মিং রাজত্বকালের মধ্যভাগে একাধিক কৃষি বিদ্রোহ ঘটে ,কিন্তু সবই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয় ।
মিং রাজবংশীয় আমলে বিখ্যাত রাজনীতিবিদ জাং জু জেং সামাজিক দ্বন্দ্বের তীব্রতা লাঘব করা এবং মিং রাজকীয় শাসন জিইয়ে রাখার জন্য সংস্কার চালান । তিনি শাসন ব্যবস্থাকে ত্রুটিমুক্ত করা , কৃষি উত্পাদন ও গুটিপোকার চাষ বাড়ানো এবং নদী সংস্কার করার কাজে আত্মনিয়োগ করেন । তিনি নানা প্রকারের রাজস্বকে একটিমাত্র রাজস্বে রুপান্তরিত করে জনসাধারণের আর্থিক বোঝা বহুলাংশে কমিয়ে দেন।
নানা ক্ষেত্রে পুর্ববর্তী রাজত্বকালের তুলনায় মিং রাজত্বকালের উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে । রেশম শিল্প ও চীনামাটি শিল্প বেশ উন্নত ছিল । লোহার আকরিক খনন ,তামা ঢালাই , কাগজ তৈরী ও জাহাজ নির্মান ইত্যাদি শিল্পের লক্ষনীয় উন্নতি হয় । বিদেশের সংগে চীনের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান ছিল ব্যাপক। নৌ পরিব্রাজক জেন হে পরপর সাতবার নৌ-বহর নিয়ে এশিয়া ও আফ্রিকার ৩০টিরও বেশী দেশও অঞ্চল সফর করেছিলেন ।কিন্তু মিং রাজত্বকালের মধ্যভাগে চীন জাপান 、স্পেন 、পর্তুগাল 、হোল্যান্ড প্রভৃতি দেশের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল ।
মিং রাজবংশীয় আমলে পন্য-অর্থনীতির বিকাশ ঘটে এবং পুঁজিবাদের অঙকুর দেখা দেয় । মিং রাজত্বকালের প্রথমভাগে সারাদেশে ছড়িয়ে ছিল প্রচুর পতিত জমি। সম্রাট জু ইউয়ান জুয়াং গৃহহারাদের মধ্যে সেই পতিত জমি বন্টন করেন এবং তাদের রাজকর কমিয়ে দেন বা মওকুফ করেন ,ফলে কৃষকদের সংখ্যা বিপুলভাবে বৃদ্ধি পায় । তামাক、মিষ্টি আলো、 ভুট্টা、চীনাবাদাম ইত্যাদি অর্থকরী ফসলের নতুন জাত বিদেশ থেকে চীনে আমদানী করা হয় । সেই সময়পর্বে চীনামাটি ও বস্ত্রবয়ন সহ চীনের হস্তশিল্পের মান অপেক্ষাকৃত উন্নত ছিল ।
![]() |
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |