|
নিমা তসেরিং চীনের একজন বিখ্যাত তিব্বতী চিত্রশিল্পী। দীর্ঘকাল ধরে তিনি চীনের পশ্চিমাঞ্চলের সি ছুয়ান প্রদেশের তিব্বতী জাতি অধ্যুষিত এলাকায় বসবাস করেন। চীনের জাতীয় গণ-রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের একজন সদস্য এবং চীনের সি ছুয়ান প্রদেশের সাহিত্য ও ইতিহাস গবেষণা বিভাগের একজন উপ-মহাপরিচালক হিসেবে নিমা তসেরিং সবসময় চীনের সংখ্যালঘু জাতি অঞ্চলের উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এ ছাড়া তিনি জাতীয় চিত্রকলা এবং সাংস্কৃতিক পূরাকীর্তি রক্ষা ও উন্নয়নে অক্লান্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে তাঁর একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে ছবি আঁকার মধ্য দিয়ে বিশ্বকে তিব্বতী জাতির সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়া। বন্ধুরা, আজকের 'সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব' অনুষ্ঠানে আমরা নিমা তসেরিংয়ের গল্প শোনাবো আপনাদেরকে।
একজন চিত্রশিল্পী হিসেবে নিমা তসেরিং টানা তৃতীয়বারের মত এবারও চীনের জাতীয় গণ-রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের সদস্য পদে নির্বাচিত হন। চলতি বছর ইতোমধ্যেই তাঁর ১৩তম বার পেইচিংয়ে এসে জাতীয় গণ-রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনে অংশ নেয়া হয়েছে। প্রতিবছরের জাতীয় গণ-রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনে নিমা তসেরিং সবসময় সংখ্যালঘু জাতি অঞ্চলের জনসাধারণের আশা-আকাঙ্খা তুলে ধরেন। এর মধ্যে তাঁর অনেক মতামত কেন্দ্রীয় সরকারের বেশ গুরুত্ব পায়। চলতি বছর নিমা তসেরিংয়ের প্রস্তাব হচ্ছে "দুর্যোগোত্তর পুনর্গঠনের বাণিজ্যিককরণ প্রবণতা রোধ করার মাধ্যমে জাতীয় বেসরকারী লোকশিল্প রক্ষা করা।" তিনি বলেন, ২০০৮ সালে চীনের সি ছুয়ান প্রদেশের ওয়েন ছুয়ানে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর এখন সেখানে যে পুনর্গঠন কাজ, বিশেষ করে অবকাঠামো ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রক্রিয়া চলছে, তাতে জাতীয় লোকশিল্প সংস্কৃতির সংরক্ষণের ওপর উল্লেখযোগ্য গুরুত্ব দেয়া উচিত্। এ সম্পর্কে তিনি বলেন:
"নতুন স্থাপত্যগুলো নির্মাণের সময় জাতীয় লোকশিল্পগুলো গুরুত্ব সহকারে রক্ষা করা উচিত। তা যে কেবল স্থাপত্যগুলোর ব্যবহার উপযোগিতার কারণে দরকার তা নয়, তা হাজার বছর ধরে বিরাজমান সৌন্দর্যের জন্যও দরকার।" তাঁর এ বছর উত্থাপিত এ প্রস্তাবে পুনরায় জাতীয় শিল্প এবং সংস্কৃতি ব্রতের বিষয়টি উল্লেখ্য করা হয়েছে। এটি তাঁর রহস্যময় শিল্পী অভিজ্ঞতার সঙ্গে সম্পর্কিত।
১৯৮২ সালে অনুষ্ঠিত চীনের প্রথম সংখ্যালঘু জাতির চিত্র প্রদর্শনীতে নিমা তসেরিংয়ের শিল্প কর্ম 'গেসার রাজা' স্বর্ণপদক পায় এবং ১১তম পাচচেন আরদেন কোইগাই গাইবো'র প্রশংসা পায়। একই সঙ্গে নিমা তসেরিংকে 'পাচচেন চিত্রশিল্পী' বলে অভিহিত করা হয়। এটিও তিব্বতী জাতির চিত্রশিল্পীর জন্য একটি সর্বোচ্চ মর্যাদা বলে মনে করা হয়। ১১তম পাচচেন আরদেন কোইগাই গাইবো'র সঙ্গে আলোচনা স্মরণ করলে নিমা তসেরিং এখনো মুগ্ধ হন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন:
"একটি পশ্চাত্পদ জাতি হিসেবে তেমন ভয় পাই না। তবে সংস্কৃতি না থাকলে নিশ্চয়ই ভয় পাই। তিব্বতী জাতির উচিত হান জাতিসহ অন্যান্য জাতির শ্রেষ্ঠ সংস্কৃতি থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা। এর মধ্যে হান জাতির সংস্কৃতি থেকে শিক্ষা নিয়েছি এবং পশ্চিমা দেশগুলোর ছবি আঁকার দক্ষতা অর্জন করেছি। আমি মনে করি, ছবি আঁকার মধ্য দিয়ে তিব্বতী জাতির ঐতিহাসিক রীতি-নীতির প্রতিফলন ঘটানো সক্ষম হবে"।
![]() |
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved. 16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040 |