রাশিয়ায় গ্রীষ্মকালীন ছুটি

রাশিয়ার শীতকাল অতি লম্বা ও ঠান্ডা। সেজন্য রাশিয়ান লোক গ্রীষ্মকালের দ্রুত আগমন প্রত্যাশা করেন। বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদের প্রতি দীর্ঘ দু'মাসব্যাপী গ্রীষ্মকালীন ছুটি হলো সারা বছরের সবচেয়ে আনন্দদায়ক সময়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের পছন্দের মতো কোন কোম্পানি বা সংস্থায় চাকরি করেন, তারপর তারা তাদের কিছু আয় পরের বছরের শিক্ষা ফি'র জন্য হাতে রেখে দেয়, বাকি অংশ নিয়ে কয়েক জন ভালো বন্ধুর সঙ্গে অন্য শহরে বা বিদেশে ভ্রমণ করে। আরো কিছু ছাত্রছাত্রী ছুটির দিনে কোন প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তি হয়।

প্রতি বছর গ্রীষ্মকালে রাশিয়ার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান বা স্বাস্থ্যনিবাসে বৈচিত্র্যময় গ্রীষ্মকালীন শিবিরের আয়োজন করা হয়। যেমন বিদেশী ভাষা, সংগীত, অপেরা, ক্রীড়া ও সাহিত্যসহ অনেক ধরনের শিবির রয়েছে। এমন কি আরো কিছু শিবিরে ছাত্রছাত্রীদেরকে কীভাবে টাকা পয়সা সঞ্চয় করা যায় বা দেশ ব্যবস্থাপনার বিষয়ও শেখানোর শিবির রয়েছে।

রাশিয়ার মাধ্যমিক স্কুল ও প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা সাধারণত কীভাবে এক তাত্পর্যপূর্ণ গ্রীষ্মকালীন ছুটি কাটবে তা নিয়ে বাবা-মার সঙ্গে আলোচনা করে। অনেক বাবা-মা সন্তানের গ্রীষ্মকালীন ছুটির সময় নিজেদের বার্ষিক ছুটি কাটান, যাতে পুরো পরিবার একসাথে বাইরে যেতে পারে। বাবা-মা বাচ্চাদের চাহিদা বিবেচনা করে বাচ্চাদের পছন্দ মতো হোটেল বাছাই করেন এবং বাচ্চাদের নিয়ে স্থানীয় ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি পরিদর্শন করেন। আরো কিছু রাশিয়ান পরিবার গ্রামাঞ্চলের বাগানবাড়িতে গিয়ে সময় কাটায়। তারা গ্রামে সন্তানদের সঙ্গে শব্জি চাষ করেন, ছোট পশু লালন-পালন করেন, ছোট পাখির জন্য কাঠ দিয়ে ছোট ঘর বানায় বা জলাধার নির্মান করে ইত্যাদি।

গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে যারা বাসায় থাকে, বাবা-মা তাদের জন্য একটি সময়সূচি নির্ধারণ করেন, যাতে সময় নষ্ট না হয়। তারা বাসায় পরিষ্কার-পরিচ্ছনতার কাজ করে, বই পড়ে, ডায়েরী লেখে। এর পাশাপাশি বাবা-মা সন্তানের জন্য সাঁতার বা ঘোড়ায় চড়া প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তি করেন, যাতে তারা সম-বয়সীদের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ পায়। সাপ্তাহিক ছুটিতে বাবা-মা বাচ্চাদের নিয়ে নানা প্রদর্শনী বা জাদুঘর দেখতে যান বা অপেরা উপভোগ করেন। (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)