প্রধান দর্শনীয় স্থানঃ
প্রাচীন সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এলাকা
খাওয়া দাওয়ার পর চলুন বন্ধুরা এবারে একটু ঘুরে বেড়াই ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মেল্বন্ধনের এই অনিন্দ্য সুন্দর শহরে। এখানে যে দর্শনীয় স্থানগুলো রয়েছে তার মাঝে আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে "কু ওয়েন হুয়া চিয়ে" বা "প্রাচীন সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এলাকা"। এখানে আছে থিয়েনচিন তথা পুরো চীনের সংস্কৃতির নানা নিদর্শন। পুরো এলাকাটিতে শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী দোকান সহ ছোট বড় নানা ধরণের ১০০ টিরও বেশি দোকান রয়েছে। এই সব দোকানগুলোতে দোকানীরা তাদের হস্ত ও কুটির জাত পণ্য, নানা ধরণের চিত্রকর্মসহ নানা ধরণের পণ্যের পসরা সাজিয়ে অপেক্ষা করেন ক্রেতাদের জন্য। এখানে আছে চীনের বিখ্যাত চিত্রকর্ম "নিয়েন হুয়া" বা " নতুন বছরের চিত্রকর্ম"র বিখ্যাত সব দোকান। এই বিশেষ ধরণের চিত্রকর্ম চীনা বসন্ত উত্সবের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এছাড়া ও আছে বিখ্যাত চীনা পোর্সিলিনের তৈরি নানা রকম ফুলদানী, তৈজসপত্র এবং ঘর সাজানোর নানা রকম পণ্য। যারা গহনা ভালবাসেন তাদের জন্য এখানে আছে জেড পাথর, মুক্তো সহ নানা ধরণের মূল্যবান পাথর দিয়ে তৈরি চীনের ঐতিহ্যবাহী গহনা। তাই এখান থেকে আপনি প্রিয়জনদের জন্য কিনতে পারেন গহনা সহ নানা ধরণের চীনা ঐতিহ্যবাহী উপহার সামগ্রী।
এছাড়া আমার আরেকটি প্রিয় স্থাপনা হচ্ছে "থিয়েনচিন আই", ইংল্যান্ডের "লন্ডন আই" এর আদলে গড়া এই বিশাল স্থাপনাটিতে চড়ে আপনি অনেক উপর থেকে পাখির চোখে পুরো শহরটি দেখতে পাবেন। উপর থেকে শহরের মাঝে একে বেঁকে বয়ে যাওয়া নদী আর তার সাথে অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন চমত্কার সব স্থাপনা, এ এক অভূতপূর্ব দৃশ্য।
কেনাকাটা করতে যারা ভালবাসেন তাদের জন্য আদর্শ জায়গা হচ্ছে, "পিন চিয়াং তাও বাণিজ্যিক এলাকা"। এখানে প্রতিদিন চীনের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ শপিং করতে আসেন। এখানে যেমন রয়েছে পৃথিবী বিখ্যাত নামি দামি ব্র্যান্ডের বড় বড় আউটলেট, তেমনি রয়েছে নানা ধরণের চীনা ঐতিহ্যবাহী পণ্যের বিশাল সমারোহ। এছাড়া এখানে যেমন রয়েছে নানা ধরণের বিলাসবহুল দামি পণ্য তেমনি রয়েছে স্বল্পমূল্যের নানা ধরণের উপহার সামগ্রী। তাই সব বয়সী, সব ধরণের ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে এই "পিন চিয়াং তাও বাণিজ্যিক এলাকা"। অনেকে কেনাকাটা না করে শুধু বেড়াতে আসেন এখানে। রাতের বেলা এ এলাকাটি আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠে। নানা রঙবেরঙের আলোক সজ্জা এ এলাকাটিকে করে তোলে আর চাকচিক্যময়, আরো আকর্ষণীয়।
ইতালির বৈশিষ্ট্য পূর্ণ এলাকা
তবে থিয়েনচিনের রাতের সৌন্দর্য্য দেখতে হলে যেতে হবে, "ইতালির বৈশিষ্ট্য পূর্ণ এলাকা"। হ্যাঁ বন্ধুরা , আপনারা ইতালিতে না গিয়েও ইতালিতে ঘুরে বেড়ানোর স্বাদ নিতে পারেন এখানে এসে। এখানে আছে ইতালিয়ান বৈশিষ্ট্যের নানা ধরণের ভবন, বার ও রেস্তোরাঁ। এছাড়া শহরের মাঝে বয়ে যাওয়া "হায় হো" নদীর রাতের অপূর্ব সৌন্দর্য্য যদি আপনি না দেখেন তাহলে আপনার থিয়েনচিন ভ্রমণ অপূর্ণ রয়ে যাবে।
থিয়েনচিনের পুরানো ঘড়ি ভবন থিয়েনচিন শহরের একটি ঐতিহাসিক প্রতীক। এটা দেখে ইতিহাস সম্পর্কে অনেকের স্মৃতি জাগরিত হয়। যেমন থিয়ানচিনের "উতাতাও" বা "পাঁচটি বিশাল এভিনিউ" নামক একটি জায়গার কথাই ধরা যাক। ওখানে এখনও বিদেশীদের নির্মিত ব্যাংক, গির্জা, বাণিজ্য সংস্থা ও উদ্যানসহ নানা ধরণের স্থাপত্য কীর্তি সংরক্ষিত রয়েছে। স্থাপত্যগুলো সবই আফিম যুদ্ধকালে অর্থাত্ প্রায় ১৭০ বছর আগে নির্মিত। এ জায়গাটাকে বহুদেশীয় স্থাপত্য প্রদর্শনী এলাকা হিসেবে গণ্য করা হয়।
| ||||