যা যা চেখে দেখতে হবেঃ
বন্ধুরা এবারে জানিয়ে দিচ্ছি থিয়েনচিন এসে যে জিনিসগুলো চেখে না দেখলে আপনার থিয়েনচিন ভ্রমণ অপূর্ণ থেকে যাবে।
কও পু লি পাওজি
১। হ্যাঁ বন্ধুরা প্রথমেই আপনার চেখে দেখতে পারেন "কও পু লি পাওজি"। এটা হচ্ছে থিয়েনচিনের তিনটি সেরা স্থানীয় এতিহ্যবাহী খাবারের অন্যতম। বন্ধুরা "পাওজি" হচ্ছে ময়দা দিয়ে তৈরি এক ধরনের পিঠার মতো খাবার, যার ভেতরে নানা ধরনের মাংস ও সব্জির পুর দেয়া থাকে। আর এই পাওজি অনেকটা আমাদের দেশের ভাপা পিঠার মতো ভাপে সেদ্ধ করা হয়। থিয়েনচিনের এই বিখ্যাত পাওজি'র ইতিহাস প্রায় (১৮৫৮--২০১৪) ১৫৬ বছরের পুরনো। আমাদের যে সব বন্ধুরা হালাল খাবার নিয়ে চিন্তিত তারা বেছে নিতে পারেন "সি ফুড পাওজি" অথবা "সব্জি পাওজি" । তবে এই "কও পু লি পাওজি"র দোকানটি সবসময় ক্রেতাদের ভিড়ে গমগম করে। তাই এখানে পাওজি কিনতে হলে দীর্ঘ লাইন ধরতে হয়।
থাং তুন
২। থিয়েনচিনের আরেকটি বিখ্যাত ঐতিহ্যবাহী খাবার হচ্ছে "থাং তুন"। পেইচিং এবং চীনের অন্যান্য জেলায় এ ধরণের খাবারের বিভিন্ন নাম রয়েছে। যেমন পেইজিংয়ে এই খাবারটিকে বলা হয় "পিং থাং হু লু"। অতীতে কেবল শীতকালে এই খাবার পাওয়া যেতো। বিশেষ করে বসন্ত উত্সবের মন্দির মেলায় বাচ্চারা সবাই "থাং তুন" হাতে তুলে খায়। এখন একটু বড় আকারের সুপারমার্কেটে সারা বছর "থাং তুন" পাওয়া যায়। বন্ধুরা আমার খুবই প্রিয় এই খাবারটি হচ্ছে লাল রঙের অনেকটা বরইয়ের মতো দেখতে একটি ফল দিয়ে তৈরি। ফলগুলোর বিচি ফেলে দিয়ে সেগুলো কাঠিতে গেঁথে এর উপর বিশেষ পদ্ধতিতে চিনির প্রলেপ দেয়া হয়। তবে বর্তমানে এতে নানা বৈচিত্র্য দেখা যায়। এখন আনারস, কমলা, স্ট্রবেরি সহ নানারকম ফল দিয়ে এই "থাং তুন" তৈরি করা হয়। বন্ধুরা থিয়েনচিন আসলে এই রসালো সুস্বাদু খাবারটি চোখে দেখতে এবং খেতে ভুলবেন না যেন।
মাহুয়া
৩। থিয়েনচিনের আরেকটি বিশেষ খাবার "মাহুয়া" আমি খেয়েছি। তাও খুব মজা। মাহুয়া এক ধরনের মচমচে মিষ্টি খাবার। এখন থিয়েনচিনের যে কোনো জায়গায় "মাহুয়া" দোকান দেখা যায়। থিয়েনচিনের গুয়েফাশিয়াং মাহুয়া সবচেয়ে খাটি ও সুস্বাদু। চকলেট দিয়ে, কালো তিল দিয়ে, স্ট্রবেরি দিয়ে, কমলালেবু দিয়ে, ইউক দিয়ে তৈরী বিভিন্ন ধরণের মুখরোচক মাহুয়া এখানে পাওয়া যায়। আত্মীয়স্বজন বন্ধুদের জন্যে এটা উপহার হিসেবেও মন্দ নয়। ( ইয়ু লাওশি, ০৩২৮)
৪। থিয়েনচিনের বিশেষ খাবারের মধ্যে আরেকটি হচ্ছে "আর তুও ইয়েন যা কাও" । এটি হচ্ছে বিশেষ ধরনের আঠালো চাল, রেড বিন ও চিনি দিয়ে তৈরি তেলে ভাজা এক ধরনের পিঠার মতো খাবার। শত বছরের পুরনো ইতিহাস সমৃদ্ধ এ খাবারের আকার হচ্ছে গোল, বাইরেটা সোনালি রঙের মচমচে কিন্তু ভেতরটা বেশ নরম। খেতে খুবই সুস্বাদু।
বন্ধুরা থিয়েনচিন শহরের এই বিখ্যাত খাবারগুলো ছাড়াও যদি আপনারা সমগ্র চীনের বিভিন্ন এলাকার খাবার চোখে দেখতে চান তাহলে চলে যেতে পারেন পুরনো শহর এলাকার বিখ্যাত "ফুড স্ট্রিটে" । সেখানে রয়েছে চীনের প্রায় সব এলাকার বিখ্যাত সব খাবারের সমারোহ। এই একটি জায়গায় আসলে আপনি চীনের অনেক ঐতিহ্যবাহী খাবারের সাথে পরিচিত হতে পারবেন। তাই আমার মতো ভোজন রসিক বন্ধুরা সুযোগ পেলে অবশ্যই ঘুরে যাবেন এখান থেকে।
| ||||