চীন আন্তর্জাতিক বেতারের (সিআরআই) কর্তৃক আয়োজিত সামুদ্রিক রেশমপথ সংলগ্ন দেশগুলোর তথ্যমাধ্যম কুয়াংতোং দেখা-২০১৫ প্রোগ্রামে (২৫-৩০ এপ্রিল) অংশ নিতে আমি ২৫শে এপ্রিল ঢাকার শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে উপস্থিত হই।জীবনে প্রথম বার দেশের বাইরে চীনে আসার সময় মনের মধ্যে অনেক শংকা ছিল এবং ভীত কাজ করছিল। তারপরও সব শংকা কাটিয়ে চীনের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। আসার সময় এয়ারপোর্টে দুইজন বাংলাদেশীর সাথে আমার পরিচয় হলো।তারা ব্যবসায়িক কাজে মাঝে মাঝে চীনে আসেন। তারা কথা প্রসংগে বলছিলেন-গুয়ানজুতে প্রচুর বাংলাদেশী থাকেন। কারন, এ প্রদেশের সাথে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সবচেয়ে বেশি। তাদের সাথে গুয়াংজুর বায়ান আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌছালাম।এরপর সিআরআই-এর বাংলা বিভাগের প্রধান আনন্দী ম্যাডাম আমাকে রিসিভ করলেন। তার সাথে গাড়ীতে করে হোটেল কান্টনে এসে পৌছালাম।
কুয়াংচৌ টেলিভিশন টাওয়ার
তারপর ফ্রেস হয়ে রাতের খাবার খেয়ে বেড়িয়ে পড়লাম গুয়াংজুর টেলিভিশন স্টেশন দেখতে। ওখানে গিয়ে শুনলাম এটি প্রায় একশো ১০ তলা এবং ছয়শো মিটার উচ্চতা, যা বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম উচ্চতম টাওয়ার। রাতের বেলা এর নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখে আমি অভিভৃত। পরের দিন শুরু হলো আমাদের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন ও অভিজ্ঞতা অর্জনের পালা।
২৬-০৪-১৫ তারিখ প্রথম গেলাম নানউ প্যালেস মিউজিয়াম পরিদর্শনে। বিভিন্ন রাজার শাসনামলে ব্যবহৃত জিনিসপত্র এ মিউজিয়মে এমনভাবে সাজানো ও সংরক্ষণ করা হয়েছে, যা না দেখলে বোঝা যাবে না। দেয়ালে লেখা রয়েছে তাদের ব্যবহৃত জিনিস এবং শাসনামলের বর্ণনা।
বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকরা কুয়াংচৌ মেলায় সাক্ষাত্কার নেন
এরপর আমিসহ সাংবাদিক প্রতিনিধিগণ ক্যান্টন মেলায় গেলাম। আমাদেরকে জানানো হলো-সেখানে প্রতি বছর দু'বার মেলা বসে। বিশ্বের ২১০ টি দেশের ক্রেতারা এ মেলায় আসেন, তাদের পছন্দমত জিনিসের ওর্ডার দেন এবং এ মেলা থেকে থেকে বিলিয়ন ডলারের ওর্ডার পান।মেলায় বিচিত্র ধরনের জিনিসপত্র শোভা পাচ্ছে এবং ক্রেতাদের উপছে পড়া ভীড়।
এছাড়া, আমরা গুয়ানজুর হোয়াংপো পোর্ট পরিদর্শনে গেলাম, সেখানে এক সময় চীনের সাথে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য জাহাজ আসা যাওয়া করত।
এরপর আমরা গেলাম সাউথ সী টেম্পল দেখতে। এ টেম্পল ঘুরতে ঘুরতে এমন একটা বিষয় নজর কাড়ল, সেটা হল একটা গাছে লাল রংয়ের ফিতা বাধা দেখলাম। এর অর্থ হলো কারো যদি কোন কিছু পাওয়ার থাকে, তাহলে সে গাছে একটা করে লাল ফিতা বাধবে এবং চাইবে, তাহলে তার মনের আশা পুরণ হবে।